<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢল আর টানা বৃষ্টিতে উত্তরের নদ-নদীগুলোর অনেক এলাকায় পানি বাড়লেও আবার কমতে শুরু করেছে। ফলে রংপুর অঞ্চলের পাঁচ জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার পর এবার দেখা দিয়েছে নদীভাঙন, বাড়ছে আশঙ্কা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="পানি কমলেও তিস্তার ভাঙনে বাড়ছে শঙ্কা" height="321" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/10.October/01-10-2024/7789.jpg" style="float:left" width="345" />বিশেষ করে তিস্তা নদীর পানি কখনো বাড়ছে, কখনো কমছে। এরই মধ্যে অনেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বহুদিন ধরে মহাপরিকল্পনার কথা শুনে এলেও আজ পর্যন্ত কাজ শুরু না হওয়ায় তারা হতাশ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রবিবার রাত থেকেই তিস্তার পানি কমা শুরু হয়েছে। রংপুর বিভাগ ও সংলগ্ন উজানে আপাতত ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। আগামী দুই-তিন দিন পানি কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে উত্তরের পাঁচ জেলার বন্যা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যেতে পারে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা জানান :</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশ্যাম এলাকার চর খিতাব খাঁ গ্রামের বাসিন্দা জোবেদা খাতুন (৫০)। বিয়ে হয়ে স্বামীর ঘরে আসার পর থেকে তিনি দেখছেন তিস্তা প্রতিবছরই তাঁদের বসতভিটা গ্রাস করছে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগত পাঁচবার নদী বাড়ি ভাঙ্গি নিয়া গেছে। এবার বাড়ির পাশ দিয়া নদী যাওছে। কোনবেলা যে ভাঙ্গি নিয়া যায় কাই জানে!</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকার আরেক বাসিন্দা মহিদুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাইল রাত ২টা থাকি ঘর টানবার নাকছি, নদী ভাঙছে কোনো থামাথামি নাই। আমি নিজেই একসাথে ১০টা ঘর টানছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উত্তরের দুই জেলা কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বাসিন্দাদের বন্যাকালের নিত্যচিত্র এটি। যখন বন্যা হয় তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে কিন্তু তাদের স্থায়ী সমাধান মেলে না। তারা চায় তাদের এখানে বাঁধ বানানো হোক। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হোক। রাজারহাট উপজেলার গতিয়াশ্যাম গ্রামের কৃষক সোলেমান আলী (৬০) জানান, বন্যার কারণে গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এটি যেকোনো সময় তিস্তাগর্ভে চলে যেতে পারে। ক্লিনিকটির চারদিকে বন্যার পানি থাকায় তাঁরা ক্লিনিকে যেতে পারছেন না। কুড়িগ্রামের তিনটি উপজেলার চারটি ইউনিয়নে গত দুই দিনে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল, কিন্তু এখন পানি নেমে যাওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা কমছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় কয়েক হাজার হেক্টর জমির আমন ও শাক-সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, তিস্তাপারে বন্যা পরিস্থিতিতে আমনের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে মঙ্গলবারের মধ্যে পানি নেমে না গেলে আগাম শীতকালীন শাক-সবজির ক্ষতি হবে। তিস্তা নদীবেষ্টিত রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার লক্ষ্মীটারী, কোলকোন্দ, গজঘণ্টা, আলমবিদির, নোহালী, কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া, মধুপুর, হারাগাছ, ঢুসমারা, শহীদবাগের গান্নার চর, পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ও পাওটানার প্রায় ৫০টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। এসব এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গ্রামীণ রাস্তাঘাটে দেখা দিয়েছে ভাঙন। তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে উজানের ঢলে ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের হরিচরণ শর্মা, আজম খাঁ, হযরত খাঁ, বিশ্বনাথের চর, চরগনাই, ঢুসমারা, চর রাজীব, গোপিঙ্গা, গদাই, পাঞ্জরভাঙ্গা, তালুক শাহবাজপুরসহ চরাঞ্চলে ভাঙন দেখা দিয়েছে কিছু স্থানে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গদাই গ্রামের শফিকুল, শাহিন ও গফফার জানান, দুই সপ্তাহ ধরে তিস্তা নদীর পানি কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। এরই মধ্যে অনেক বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এভাবে তাঁরা বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বহুদিন ধরে মহাপরিকল্পনার কথা শুনে এলেও আজ পর্যন্ত কাজ শুরু না হওয়ায় তাঁরা হতাশ। চরগনাই গ্রামে ১০টি বাড়ি তিস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। গতকাল সোমবার ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিদুল হক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিস্তা নদী এলাকায় বন্যা ও ভাঙনের বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। উপজেলা প্রশাসন ও ত্রাণ বিভাগ বন্যা মোকাবেলায় প্রস্তুত। পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে তলিয়ে গেছে বীজ বাদামসহ মরিচ ও আমন ক্ষেত। স্থানীয় কৃষক ও উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পানির নিচে থাকায় শতাধিক হেক্টর জমির বীজ বাদামের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে।</span></span></span></span></p>