<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু বেড়েছে। গত এক মাসের ব্যবধানে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। আক্রান্ত রোগীর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পুরুষরা বেশি আক্রান্ত হলেও মৃত্যু বেশি নারীদের। তাদের বেশির ভাগের বয়স ১৬ থেকে ৩৫ বছর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেনেটিক কারণে নারীদের জটিলতা বেশি দেখা দেয়। এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ও পিরিয়ডের সময় শরীরে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রক্তচাপ কম থাকায় কোনো নারী ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টার এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯২৭ জন। এই সময়ে রোগটিতে মারা গেছে পাঁচজন। নতুন রোগীদের নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে এক হাজার ৯০০ জন এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৭৭৯ জন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল শনিবার পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেয় ৩৫ হাজার ৩৬৫ জন। এর মধ্যে মৃত্যু ১৮২ জনের। নারী ৯৩ জন ও পুরুষ ৮৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে প্রতি ১৩৯ জনে মৃত্যু হয়েছে একজন নারীর। অন্যদিকে ২৫২ জনে একজন পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ পুরুষের তুলনায় নারীর মৃত্যুহার প্রায় দ্বিগুণ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছে প্রতি ১৯৪ জনে একজন। মৃত্যুহার ০.৫১ শতাংশ। নারী ০.৭১ শতাংশ এবং পুরুষ ০.৩৯ শতাংশ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া নারীদের বয়সভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২১ থেকে ৩০ বছরের সবচেয়ে বেশি নারীর মৃত্যু হয়েছে, যা নারীর মোট মৃত্যুর ৩১ শতাংশ। ২০ বছরের কম বয়সের ১৮ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের ১১ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৬ শতাংশ, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৯ শতাংশ, ৬১ থেকে ৭০ বছরের ১০ শতাংশ এবং সত্তর ঊর্ধ্ব ৫ শতাংশ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাবিহা বিনতে হান্নান বলেন, গর্ভকালে নারীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, যে কারণে মৃত্যহার অন্য রোগীদের তুলনায় প্রায় তিন গুণ বেশি থাকে। এ ছাড়া ঋতুস্রাবকালে কোনো নারী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ এই সময়ে রক্তচাপ অস্বাভাবিক কম থাকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। রোগীর সংখ্যা মাত হাজার ৯৩৭ এবং মৃত্যু ৯৭ জনের। এর পরই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগ, রোগী সাত হাজার ১৪২ জন, মৃত্যু ২১ জনের। ঢাকার উত্তরে আক্রান্ত সাত হাজার ১০৮ জন ও মৃত্যু ২৬ জনের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকাসহ সারা দেশে কখনো ভারি, কখনো মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। এতে এডিস মশা আরো বাড়বে। আরেকটি বিষয় হলো মশা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা। এ কারণে ডেঙ্গুও বাড়ছে। আমরা যে ফোরকাস্টিং মডেল করি, এতে অক্টোবরে ডেঙ্গু থামার কোনো লক্ষণ দেখছি না। এমনকি এ বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরেও ডেঙ্গুর প্রকোপ খুব ভালোভাবে থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গুতে প্রয়োজন বাড়তি সতর্কতা</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. তাবিহা বিনতে হান্নান বলেন, গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে রক্তচাপ অস্বাভাবিক রকম কমে যেতে পারে। এতে মা ও শিশু দুজনেরই জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। গর্ভকালের প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে গর্ভপাত ঘটার শঙ্কা বেশি থাকে। এ ছাড়া গর্ভে বাচ্চার স্বাভাবিক বৃদ্ধি বিলম্বিত হতে পারে। গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ও তৃতীয় তিন মাসে মা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে একলাম্পশিয়া, প্রি-একলাম্পশিয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে; এমনকি সময়ের আগেই অপরিপক্ব বাচ্চার জন্ম হতে পারে। এ ছাড়া গর্ভকালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে মায়ের লিভার এনজাইমগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেড়ে যেতে পারে এবং রক্তক্ষরণ হলে হিমোগ্লোবিন কমে যেতে পারে।</span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু হলে করণীয়</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. তাবিহা বিনতে হান্নান বলেন, গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে ভয় পাওয়া যাবে না। তবে এ সময় দেরি না করে অবশ্যই কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত এবং প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। বাসায় তৈরি পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ তরল খাবার, যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পানি, স্যালাইন, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস ইত্যাদি খেতে হবে। জ্বর চলে যাওয়ার পরবর্তী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ক্রিটিক্যাল ফেজ। এ সময় অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকা দরকার।</span></span></span></span></p>