<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উৎক্ষপণের ছয় বছর পরও সম্ভাব্য বিদেশি গ্রাহক দেশগুলোর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর  ফ্রিকোয়েন্সি  সমন্বয় ও ল্যান্ডিং রাইটস পাওয়ার কাজটি সম্পন্ন হয়নি। এখন এর সময়ও শেষ। আবার এসংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণের সময় যেসব দেশে এর ট্রান্সপন্ডার বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব বলে জানানো হয়েছিল, বাস্তবতা তার বিপরীত। রাশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারস্পুিনকের কাছ থেকে বহুগুণ বেশি দামে কেনা অবিবটাল স্লটের অবস্থান  ওই দেশগুলোর বেশির ভাগে প্রযোজ্য নয়। ফলে এই স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে কেইউ ব্যান্ডের ১৩টির কোনো গ্রাহক নেই। এ ছাড়া </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেম বাস্তবায়ন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শীর্ষক প্রকল্পের অবাস্তব ও অতিমূল্যায়িত  ফিজিবিলিটি স্টাডির মাসুল দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ১৫ বছর মেয়াদের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার এই স্যাটেলাইট এখনো লাভের মুখ দেখেনি। বরং লোকসানের আশঙ্কাই বেশি। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই শ্বেতহস্তীর পালনে রাষ্ট্রের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে হাজার কোটি টাকারও বেশি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ২ অক্টোবর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কম্পানি পরিদর্শনে গেলে কম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মো. জহিরুল ইসলাম তাঁকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">স্যাটেলাইটের খরচ বেশি হয়েছে, তাই প্রাপ্তি আশানুরূপ নয়।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১২ সালের ২৯ মার্চ বিটিআরসি এ বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান  স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনালের (এসপিআই) মাধ্যমে জানিয়েছিল, এই স্যাটেলাইট  উৎক্ষপণ করার পর বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন ডলার (বর্তমানে ৬০০ কোটি টাকা) আয় করতে পারবে। কিন্তু এখন মোট আয় হচ্ছে বছরে ১৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয় এবং সম্পদের স্থায়িত্বের বিপরীতে প্রতিবছর অবচয় বাদ দিলে লাভের ঘরে কিছুই থাকে না। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তথ্য-প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবিরের মতে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য যে বিনিয়োগ হয়েছে তা উঠে আসার সম্ভাবনা নেই। সঠিকভাবে বাজার যাচাই না করেই এ খাতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। শুরুতে মার্কেটিংয়ের দিকে সেভাবে নজর দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া বর্তমান বিশ্বে যেভাবে স্যাটেলাইট ব্যান্ডউইডথের চাহিদা কমছে, তাতে বিক্রি না হওয়া ট্রান্সপন্ডারগুলো ভবিষ্যতে কাজে লাগবে বলে মনে হচ্ছে না।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে স্যাটেলাইটটির পরিচালনাকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, প্রকল্পটি পাসের সময়  যে  ফিজিবিলিটি স্টাডি বা সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছিল তা ত্রুটিপূর্ণ ছিল। এতে বাজারের চাহিদা, প্রতিযোগিতা এবং রাজস্ব সম্ভাবনাকে অতি মূল্যায়ন করা হয়। এ ধরনের অতিমূল্যায়ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও হতে পারে। এতে দেশের লাভ-ক্ষতি বিবেচনায় না নিয়ে হয়তো ব্যক্তি বা একটি চক্রের স্বার্থ প্রাধান্য পেয়েছে। এটি বেসরকারি খাতের কোনো প্রকল্প হলে সংশ্লিষ্ট সবার চাকরি যেত। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার ধারণা, প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসপিআইয়ের </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আন্তর্জাতিক</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হয়েছে। বাস্তবে পরামর্শক ছিলেন দেশের বৃহৎ একটি ব্যবসায়ী গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত এক ব্যক্তি, যিনি ওই প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গেও যুক্ত। তাঁর পেছনেও বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটির কাজ ছিল, স্যাটেলাইট উৎক্ষপণের জন্য বাজার পর্যবেক্ষণ, ব্যাবসায়িক পরিকল্পনা, আইটিইউর সঙ্গে তরঙ্গ সমন্বয়, স্যাটেলাইট সার্ভিস ডিজাইন, স্যাটেলাইট আর্কিটেকচারাল ডিজাইন, সিস্টেম ডিজাইন, দরপত্র প্রস্তুত, ম্যানুফ্যাকচারিং ও সুষ্ঠুভাবে উৎক্ষপণ পর্যবেক্ষণ। কিন্তু ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে বড়জোর ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলারের  ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লট ২৮ মিলিয়ন ডলারে কেনার ব্যবস্থা করলেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রকল্প থেকে কম্পানির কাছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার সময় অনেক কিছু হস্তান্তর করেনি। গ্রাউন্ড স্টেশনের কাছে ২০০ ফুট রাস্তাসহ আরো অনেক সুবিধা ডিপিপি অনুসারে কম্পানিকে দেওয়া হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এসব বিষয়ে তৎকালীন </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট সিস্টেম বাস্তবায়ন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শীর্ষক প্রকল্পের পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন গত বুধবার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অভিযোগ সত্য না।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> সম্ভাব্য বিদেশি গ্রাহক দেশগুলোর সঙ্গে ফ্রিকোয়েন্সি সমন্বয় ও ল্যান্ডিং রাইটস পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এটা এখনো করা সম্ভব বলেই আমি জানি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এদিকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হলেও এসব ব্যর্থতা ও অনিয়মের কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের তেমন উদ্যোগ নেই। ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সার্বিক অনিয়ম বিষয়ে সরকার তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে  কম্পানি গত পাঁচ বছর রিটার্ন জমা দেয়নি। এ ছাড়া সাবেক সরকারের আমলে কম্পানির কর্মকর্তারা আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে  কোনো কাজ করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখতে বোর্ড সদস্যদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তামজিদুল হক চৌধুরী এই কমিটির নেতৃত্বে আছেন। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অরবিটাল স্লটে যে সমস্যা</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ইন্টারস্পুটনিকের কাছে ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অরবিটাল স্লট নেওয়ার সময়ই প্রশ্ন ওঠে এটি কি বাংলাদেশের জন্য উপযুক্ত। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল   সোসাইটির তৎকালীন  সাধারণ সম্পাদক এফ আর সরকার (প্রয়াত)  সে সময় বলেছিলেন, ১১৯.১ ডিগ্রির অরবিটাল স্লটটি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে (প্রায় ৩০ ডিগ্রি পূর্বে)। এটা ফিলিপাইনেরও আরো গভীরে। অরবিটাল স্লট বা নিরক্ষ রেখাটি অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু হয়ে ইন্দোনেশিয়া দিয়ে ফিলিপাইনের পশ্চিমাংশ এবং ভিয়েতনামের পূর্ব দিয়ে চীন  ও মঙ্গোলিয়া হয়ে রাশিয়ার ওপর দিয়ে চলে গেছে। ফলে অত দূর থেকে স্বাভাবিকভাবেই স্যাটেলাইট বাংলাদেশের ফুটপ্রিন্ট (ছবি) গ্রহণে সমস্যা হবে। বাংলাদেশের  জন্য প্রয়োজন ছিল নিজস্ব ৮৮-৯১ ডিগ্রির অরবিটাল স্লট। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৪ সালে বিটিআরসির ১৪৭তম সভায় স্যাটেলাইট ও অরবিটাল স্লটের বিষয়টি বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। তাতে জানানো হয়, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশনস ইউনিয়ন বা আইটিইউ  থেকে নিজস্ব অরবিটাল  লোকেশন ও প্রয়োজনীয় ফ্রিকোয়েন্সি পাওয়া একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এ কারণে যথাসময়ে স্যাটেলাইট উৎক্ষপণ নিশ্চিত করতে বিটিআরসির যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান  স্পেস পার্টনারশিপ ইন্টারন্যাশনাল (এসপিআই) অন্য কোথাও থেকে অরবিটাল পজিশন ভাড়া বা কেনার পরামর্শ  দিয়েছে। ওই সভায় আরো জানানো হয়, আইটিইউতে বাংলাদেশের নিজস্ব অরবিটাল পজিশন পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু অনেক  দেশ তাতে আপত্তি তুলেছে। প্রক্রিয়াগত কারণে এ ধরনের আপত্তি অস্বাভাবিকও নয়। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিএসসিএল কর্মকর্তারা জানান, বঙ্গুবন্ধু স্যাটেলাইটের মূল গ্রাহক হিসেবে বিবেচনায় রাখা হয় দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোকে। কিন্তু ১১৯.১ ডিগ্রির অরবিটাল স্লটের কারণে তাদের প্রযুক্তিগত কী ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রকল্প থেকে সে পরামর্শ দেওয়া হয়নি। এর ফলে টিভি চ্যালেনগুলোকে  স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সংযোগ দেওয়া হয়। এতে স্যাটেলাইটের বাণিজ্যিক কার্যক্রম প্রায় আট মাস বিলম্বিত হয়। টিভি চ্যালেনগুলোর পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ায় প্রচুর বাংলাদেশি থাকার কারণে সেখানে বাংলাদেশি টিভির দর্শক অনেক। কিন্তু ১১৯.১ ডিগ্রির অরবিটাল স্লটের মাধ্যমে সেখানে বাংলাদেশি টিভির সম্প্রচারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে বিএসসিএলের এক কর্মকর্তার মন্তব্য, সরকারি প্রতিষ্ঠান না হলে বিএসসিএলের সেবা নিতে টিভি চ্যানেলগুলোকে রাজি করা সম্ভব হতো না। </span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একচেটিয়া ডিটিএইচ সেবায় সংকট</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৩ সালে ৩২টি আবেদনের মধ্যে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো মিডিয়া লিমিটেড ও বায়ার মিডিয়া লিমিটেডকে ডাইরেক্ট টু হোম (ডিটিএইচ) সেবার লাইসেন্স দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়। পরে বায়ার মিডিয়া তাদের এ সেবা চালু করতে পারেনি। একচেটিয়াভাবে বেক্সিমকো মিডিয়ার </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">আকাশ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">-এ সেবা দিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর চারটি ট্রান্সপন্ডার ব্যবহার করছে এই প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের ডিটিএইচ অপারেট একাধিক থাকলে এ খাতে প্রতিযোগিতামূলক হতো এবং একই সঙ্গে স্যাটেলাইটের আয় বাড়ত। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রাষ্ট্রীয় কোষাগারে  বিনিয়োগের এক পয়সাও ফেরত দিতে পারেনি</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে পরিকল্পনা কমিশনের কিছু আপত্তি সত্ত্বেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা দুই হাজার ৯৬৮ কোটি টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন করেন, যার ব্যয় পরে কমে দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায় এসে দাঁড়ায়। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা জানান, এখন পর্যন্ত বিএসসিএল রাষ্ট্রীয় কোষাগারে এ খাতে বিনিয়োগের এক পয়সাও ফেরত দিতে পারেনি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এই প্রকল্পে সরকার দিয়েছে এক হাজার ৪০৬ কোটি টাকা এবং এইচএসবিসি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২ বছর   মেয়াদে প্রায় ১৫৫ মিলিয়ন ইউরো ঋণ নিয়েছে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে যখন এই চুত্তি সই হয়, তখন ১৫৫ মিলিয়ন ইউরোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ৪০০ কোটি টাকা। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">২০১৮ সালের মে মাসে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষপণ করা স্যাটেলাইটের জন্য প্রতি ছয় মাসে এইচএসবিসিকে প্রায় ৮৫ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হয় বাংলাদেশ  টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)। গত এপ্রিল পর্যন্ত সুদসহ ১২টি কিস্তিতে এইচএসবিসিকে ১০১.৭০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বিটিআরসি। ২০২৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে প্রায় ৬৪ মিলিয়ন ডলারের আরো আটটি কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">কিন্তু গত কয়েক বছরে ডলারের বিপরীতে টাকার ৪০ শতাংশ অবমূল্যায়নের কারণে বিটিআরসির ওপর ঋণ পরিশোধের বোঝা আরো ভারি হয়েছে।  এখন বিটিআরসিকে প্রতিবছর দুই কিস্তিতে ১৯০ কোটি টাকা থেকে ২০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ স্যাটেলাইটির  আয়ুষ্কাল ১৫ বছর। অর্থাৎ ২০৩৩ সালের পর এর পরিবর্তে আবার নতুন স্যাটেলাইটের জন্য বিনিয়োগ করতে হবে। এর ফলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে হাজার কোটি টাকারও বেশি।  </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নিরীক্ষা প্রতিবেদন  অনুসারে ২০২২-২৩  অর্থবছরের বিএসসিএলের মোট আয় হয়েছে ১৪৮ কোটি টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট আয় হয়েছে ১৩০  কোটি টাকা। তবে এই আয়ের সঙ্গে পরিচালনা ব্যয় ও অবচয় বা  ডেপ্রিসিয়েশন বাদ দিলে বছরে  লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকার মতো। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য মোট ব্যয় দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা হলে এবং এর স্থায়িত্ব ১৫ বছর হলে এর বছরে এর অবচয় হয় ১৮৪ কোটি টাকা। এর সঙ্গে পরিচালনা ব্যয় বছরে ৪০ কোটি টাকার মতো। এছাড়া উৎক্ষপনের পর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যেতে বিলম্বের কারণেও প্রথম দিকে কোন আয় হয়নি।  তবে স্যাটেলাইট ছাড়াও এর গ্রাউন্ড স্টেশন ও জমি রয়েছে। এ সম্পদের স্থায়িত্ব ৪৫ বছর ধরে বিএসসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন প্রকৃত অবচয়  বছরে ১২০ টাকার মতো হতে পারে। সে ক্ষেত্রে লোকসান  বেশি হবে না। তা ছাড়া বছরে আয় আরো ৩০-৩৫ কোটি টাকা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p>