<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লা ৯ বছরে শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে ওই ওয়ার্ডের দুইবারের কাউন্সিলর এই বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন বলে গত মার্চ মাসে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র সরেজমিন অনুসন্ধানে কাশেম মোল্লার বিরুদ্ধে সরকারি প্লট দখল, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আবুল কাশেম মোল্লা আওয়ামী লীগের শাহ আলী থানার সাধারণ সম্পাদক। ২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন আবুল কাশেম মোল্লা। এরপর ২০২০ সালেও তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার আগে নির্বাচন কমিশনে দেওয়া আবুল কাশেম মোল্লার সম্পদের তথ্য অনুযায়ী, সে সময় তাঁর কাছে নগদ ৭৪৩ টাকা, ১০ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৭ টাকা মূল্যের একটি মাইক্রোবাস, ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস পণ্য ও ৮০ হাজার টাকার আসবাব ছিল। ৯ বছর পর ২০২৪ সালে তাঁর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় শতকোটি টাকা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদকে অভিযোগ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চলতি বছর মার্চ মাসে কাশেম মোল্লাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। কমিশন অভিযোগ অনুসন্ধানে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তিনি এসংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চেয়ে গত ১০ জুন ব্যাংক, বীমা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রিহ্যাব, রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠান। চিঠিতে কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লা ও তাঁর স্ত্রী রিভা মেহনাজসহ তাঁর দুই সন্তানের নামে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দুদকে পাঠাতে বলা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে গত ১ এপ্রিল মাদরাসার সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও আবুল কাশেমের ব্যক্তিগত নথিপত্র চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। চিঠিতে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে মিরপুরের মসজিদুল আকবর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার নামে পরিচালিত ব্যাংকের হিসাব বিবরণী, ওই সময়ের বিভিন্ন সভার রেগুলেশনসহ আয়-ব্যয়ের বিবরণী ও ম্যানেজিং কমিটির কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদকে দাখিল হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, আবুল কাশেম মোল্লা ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত ৯ বছরে ১০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন, যার কোনো বৈধ উৎস নেই। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক কাউন্সিলর কাশেম মোল্লার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্ত করছে দুদক। এর মধ্যে তাঁর সম্পদের হিসাবসহ নানা তথ্য কমিশনে এসেছে। সেগুলো এখন যাচাই-বাছাই চলছে। সব পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লার এলাকা ডিএনসিসির ৮ নম্বর ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, মিরপুর-১ নম্বরের রাসেল পার্কসংলগ্ন ডি-ব্লকের ২ নম্বর রোডে ১৫ নম্বর বাড়িটি কাশেম মোল্লার বাড়ি নামে পরিচিত। এই বাড়িটি ২০১৭ সালে তৈরি করেন তিনি। বাড়িটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা নিয়ে ডুপ্লেক্স। ৯ বছর ধরে সেখানে পরিবার নিয়ে বাস করছিলেন তিনি। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর কিছুদিন তাঁর পরিবার অবস্থান করলেও সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে সবাই একে একে বাড়ি ত্যাগ করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন এলাকাবাসী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকার পতনের পর গত ৩০ আগস্ট সর্বশেষ এই বাড়িতে আসেন কাশেম মোল্লার শ্যালক ইব্রাহিম। তিনি ২৯ সেপ্টেম্বর এলাকা থেকে চলে যান। এরপর আর কেউ আসেনি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এলাকাবাসী থেকে পাওয়া তথ্য ও দুদকের অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাড়িটি নির্মাণে কাশেম মোল্লা ২০ কোটি টাকা খরচ করেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুদক সূত্র জানায়, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ওই একই ব্লকের ১১৩ নম্বর প্লটের পঞ্চম তলায় এক হাজার ৬০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট তৈরি করেন। যার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। স্ত্রীর নামেও ১৫ কোটি টাকা মূল্যের বাড়িসহ পাঁচ কাঠার একটি জমি কেনেন। এ ছাড়া মিরপুর শাহ আলী মার্কেটের নিচতলায় তাঁর দুই কোটি টাকা মূল্যের একটি এক হাজার বর্গফুটের দোকান রয়েছে, যা এখন বন্ধ। অভিযোগ রয়েছে, গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার সাতগরিমায় অবৈধ টাকায় অত্যাধুনিক একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এতে খরচ হয়েছে দুই কোটি টাকা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্লট দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ </span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাবেক কাউন্সিলর কাশেম মোল্লার বিরুদ্ধে গত ৯ বছর আট থেকে ১০টি সরকারি প্লট দখল করে রাখার অভিযোগ রয়েছে। হজরত শাহ আলী ক্ষতিগ্রস্ত আড়ত মালিক সমিতি থেকে প্রতিবছর ৫০ লাখ টাকা চাঁদা তুলতেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মালিক সমিতির নেতারা এ তথ্য জানান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনকি ৮ নম্বরে ডিএনসিসির ঝাড়ুদারের নাম করে ফুটপাতের দোকানগুলো থেকে ২০ থেকে ৩০ টাকা করে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মিরপুর-১ নম্বরের ফুটপাতে কাঁচামালের ব্যবসা করতেন কাশেম মোল্লা। এ সময় তিনি বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, কাউন্সিলর হওয়ার পর আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন কাশেম মোল্লা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাদরাসার ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ</span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভিযোগ রয়েছে, মিরপুর-১ নম্বরের মসজিদুল আকবর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অ্যাকাউন্ট থেকে ৩২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন আবুল কাশেম মোল্লা। এ বিষয়ে মাদরাসার শিক্ষকরা বলছেন, কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর কাশেম মোল্লা মসজিদুল আকবর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি হন। শুরু থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অর্থ মাদরাসার অগ্রণী ব্যাংক হিসাবে জমা হতো। কিন্তু কাশেম মোল্লা ২০১৬ সাল থেকে মাদরাসার প্রচলিত আইন না মেনে সামান্য টাকা অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন। মাদরাসা শিক্ষকদের অভিযোগ, তিনি আট বছরে প্রায় ৩২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।</span></span></span></span></p>