<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার। উপসচিব পদে পদোন্নতিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও বিসিএসের সব ক্যাডারের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। প্রশাসন বাদে বিসিএসের বাকি ২৫টি ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠনটি গতকাল শনিবার রাজধানীর পূর্ত ভবন মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। বৈঠকে বক্তারা বলেন, মেধার ভিত্তিতে জনপ্রশাসন সাজাতে হবে। প্রত্যেক ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তি বা সচিব হবেন ওই ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা, যিনি সরকারের নির্দিষ্ট খাতে পেশাদারি নিশ্চিত করবেন। জনগণের সেবার জন্য জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাষ্ট্র সংস্কার : প্রেক্ষিত সিভিল সার্ভিস</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শিরোনামে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনায় ছিলেন ২৪তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারের মো. মফিজুর রহমান। বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট এম এ আজিজ, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক সভাপতি প্রফেসর মো. আব্দুস সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক কৃষিবিদ আহমেদ ইকবাল চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ সালেকুর রহমান মাসুম, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান (জীবল), সম্মিলিত পেশাজীবী সংহতির আহ্বায়ক প্রকৌশলী মির্জা নাজমুল হুদা প্রমুখ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈঠকে আন্ত ক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বৈষম্যহীন, জনবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া, কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন অর্থাৎ </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">-এর বাস্তবায়ন, প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনা, পদ আপগ্রেডেশন, পদোন্নতিতে সমান সুযোগ, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সংশোধন ও পুনর্বিন্যাস, বিভিন্ন ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার ইত্যাদি। এ ছাড়া দক্ষ সিভিল সার্ভিস গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর শিক্ষা বৃত্তির ক্ষেত্রে সমতা আনয়ন, গাড়িঋণ সুবিধার বৈষম্য দূরীকরণসহ অন্যান্য দাবি তুলে ধরা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৫৩ বছর ধরে জাতি উল্টো পথে ঘুরছে। প্রশাসনের মধ্যেই একটা বড় কলোনিয়াল ব্যাপার আছে। ৫৩ বছর ধরে এটা ভুলিয়ে রাখা হয়েছে। ২০২৪ সালে দেখছি এমন একটা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থায় এসেছে যে রাষ্ট্র তার জনগণকে গুলি করছে। পুলিশকে গুলি করার অধিকার কে দিয়েছে? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণ করছে এমন একজন সচিব, যাঁর স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। তিনি ঠিক করছেন স্বাস্থ্যনীতি কী হবে! পলিসি মেকিং জায়গায় নীতিনির্ধারক স্তরে এমন কাউকে থাকতে হবে, যিনি থাকবেন সমমর্যাদার। কাঠামোগত জায়গা ঠিক করতে হবে। যেখানে যে বিশেষজ্ঞ দরকার আছে, সেখানে তাঁদের নিয়োগ দিতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সোহরাব হাসান বলেন, শুধু ক্যাডারের বৈষম্য দূর করলে হবে না, রাষ্ট্রের বৈষম্যও দূর করতে হবে। বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা ধরে রাখার দিন শেষ। এমনকি এই সরকার আপনাদের বৈষম্য দূর না করলে তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করতে হবে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বক্তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার গড়ে ওঠার পেছনে প্রশাসন ক্যাডার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর যে গুলি চালানো হয়েছিল, তার নির্দেশদাতা ছিলেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। কারণ মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে গুলির নির্দেশ দিতে পারেন শুধু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। তাঁদের নির্দেশেই যে গুলি চালানো হয়েছে তা বিভিন্ন ভিডিও থেকেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাই তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। অথচ সংবিধানের এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটাপদ্ধতি চালুর মাধ্যমে অন্য ক্যাডার সদস্যদের সাংবিধানিক অধিকার অনৈতিকভাবে হরণ করে চলেছে। মেধাবী সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে সব ক্যাডারের উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উপসচিব হিসেবে নিয়োগের বিধান করতে হবে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বক্তারা আরো বলেন, যাঁরা একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাঁদের দমিয়ে রেখে প্রশাসন ক্যাডার মন্ত্রণালয়ের পোস্টগুলো দখল করে রেখেছে। এতে অন্য ক্যাডারের সদস্যরা কাজের অনুপ্রেরণা হারিয়ে ফেলছেন। ফলে রাষ্ট্র ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই প্রত্যেক ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে নিজ নিজ ক্যাডারের সদস্যদের নিয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ করতে হবে। </span></span></span></span></p>