<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">রপ্তানিমুখী পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের প্যানউইন ডিজাইন লিমিটেড ওয়ান ব্যাংক থেকে জামানতের বিনিময়ে ঋণ গ্রহণ করে। বর্তমানে এই ব্যাংকে তাদের ৪০৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকার দেনা পড়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তাঁদের সন্তানের নামে কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তি নেই। নেই কোনো মূল্যবান গয়নাও, যা দিয়ে দেনার টাকা পরিশোধ করতে পারবেন। এমনকি জেলহাজতে আটক রাখলেও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কোনো টাকা উদ্ধার করারও উপায় নেই। তাই দেনা শোধে অক্ষম দাবি করে দায় মোচনের জন্য দেউলিয়া ঘোষণা করতে ঢাকার দেউলিয়া আদালতে মামলা করেছেন। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">একইভাবে নওগাঁর মহাদেবপুরে ওসমান অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা.) লিমিটেডের চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী ওসমান গণি ঋণ সুবিধা নিয়ে তিনটি অটোমেটিক রাইস মিল চালু করেন। বর্তমানে সাতটি ব্যাংক এবং ২৬০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছে তাঁর ২৫২ কোটি ২৪ লাখ টাকা দেনা রয়েছে। দেনা পরিশোধের জন্য কোনো সমাধান খুঁজে না পেয়ে তিনি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণার মামলা করেন। শুধু এই দুটিই নয়, গত ২৫ বছরে নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করতে ঢাকার এই আদালতে ৬৮৭টি মামলা হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এ বিষয়ে কম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বাংলাদেশে দেউলিয়াবিষয়ক আইন সফল না হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এই আইনে কাউকে জেলে নিতে পারবে না। তা ছাড়া দেউলিয়া ঘোষণা করলে কিছু নাগরিক অধিকার চলে যায়। নিজের নামে কোনো সম্পত্তি গ্রহণ করতে পারে না। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে সেটা মনিটরিং করার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে আইন সংশোধন না বরং যেটি রয়েছে সেটার যথাযথ কার্যকর করতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অনুসন্ধান উঠে এসেছে, ১৯৯৭ সালে দেউলিয়াবিষয়ক আইন প্রণয়নের পর এখন পর্যন্ত এই আইনে দায়ের হওয়া ৬৮৭টি মামলা করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও কম্পানীর বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্টের তথ্য মতে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত সারা দেশে ১৭৭টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে ১০টি মামলা পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলে আছে। তবে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ ২৫টি জেলায় দেউলিয়াবিষয়ক আইনে মামলা থাকলেও অন্য ৩৯টি জেলায় দেউলিয়াবিষয়ক কোনো মামলা নেই। এর মধ্যে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ৮৮টি এবং চট্টগ্রামে ২৯টি মামলা রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, কোনো ঋণখেলাপি ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে, মর্টগেজ রাখা সম্পত্তিসহ তাঁর নিজের সব সম্পত্তির মূল্যের চেয়ে ঋণের পরিমাণ যদি বেশি হয়, তখন দেউলিয়া আদালতের আশ্রয় নেওয়া যায়। দেউলিয়া আইনের ১০ ধারা মোতাবেক কোনো ঋণখেলাপি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আদালতে মামলা করতে পারেন। আবার কোনো ব্যাংক খেলাপিকে দেউলিয়া ঘোষণার জন্যও মামলা করতে পারে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলা করার পর আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর সংশ্লিষ্ট খেলাপির সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে রিসিভার নিয়োগ দেন। এরপর আদালত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সম্পত্তি ক্রোক করে ব্যাংকের অনূকুলে নেওয়ার রায় দেন। অর্থঋণে মামলা চলাকালে কোনো খেলাপি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণার মামলা করলে, অর্থঋণের মামলা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অকার্যকর হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে দেউলিয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। ব্যাংকের গ্রাহক পুরোপুরি দায়মুক্ত হতে না পারলে তিনি ভোটাধিকার প্রয়োগের যোগ্যতাও হারাবেন। আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বিবাদী পক্ষের আইনজীবী রহুল আমিন বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ব্যবসায়ী ওসমান গণি কৃষকদের কাছ থেকে বাকিতে ধান কিনে ৩৫ কোটি টাকা পরিশোধ না করে ঢাকার দেউলিয়া আদালতে মামলা করেন। তবে ওসমান গণি নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের নামে থাকা সম্পত্তি আড়াল করে এই মামলা করেন। আমরা যেসব সম্পত্তি পেয়েছি সেগুলো জবাবে উল্লেখ করেছি।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ঢাকা জেলা ও দায়রা আদালতের (দেওয়ানি) সরকারি কৌঁসুলি আবুল খায়ের বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">নতুন যোগদান করেছি। এখনো সব কিছু বুঝে উঠতে পারিনি। আগের যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের চিঠি দিয়ে বলা হলেও কোনো তথ্য প্রদান করছেন না। তবে আমরা কাজ করছি। দেউলিয়া আদালতের যেসব মামলা রয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তি করা হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p>