<p style="text-align:left"><span style="color:#c0392b"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নেদারল্যান্ডসের এক গরুর খামারি ইয়ান। গোচারণ ভূমিসহ ৭০ হেক্টর জমিতে তাঁর এই উদ্যোগ। ইয়ান প্রতি দুই দিনের দুধ সংরক্ষণ করে পনির তৈরি করেন। তাঁর ঘরে যে পরিমাণ পনির আছে, এতে কয়েক শ কোটি টাকার পনির তাঁর সংরক্ষণেই রয়েছে</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বছর দুই আগে কৃষি টেকনোলজিতে উন্নত দেশ নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। একদিন বিকেলে আমরা লুনটেরে নামের একটি জায়গায় গেলাম। দেশটির ঐতিহ্যবাহী গ্রামগুলোর মতোই লুনটেরে। বিশাল এলাকা নিয়ে গ্রামের একেকটি গৃহস্থ বাড়ি। বাড়ির চারপাশ ঘিরে খাল। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা গিয়ে থামলাম ইয়ান ডির্ক ফান ডার ভোর্টের ডেইরি ফার্মে। ইয়ানের খামারের নাম রিমেকার। পুরনো ধাঁচের একটা বিশাল বাড়ি ইয়ানের। বাড়ি লাগোয়া তাঁর গরুর খামার। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাড়ি ও খামারের সামনেই বিশাল মাঠ, মূলত গোচারণক্ষেত্র। পরিচয় পর্ব শেষে ইয়ানের সঙ্গে এগিয়ে গেলাম। প্রথমেই গেলাম গরুর খামারে। বাড়ি, খামার ও গোচারণভূমিসহ মোট ৭০ হেক্টর জমিতে তাঁর এই উদ্যোগ। তাঁর এই পারিবারিক খামারটির বয়স পৌনে চার শ বছর। ভ্যান দ্য ভোট পরিবারের খামার। খামারের যে চেহারা আমরা দেখছি, সেটি সর্বশেষ গড়ে তোলা হয় ১৯২৫ সালে। বংশপরম্পরায় হাত ঘুরে খামারটি এখন চালাচ্ছেন ইয়ান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খামারে রয়েছে ৯০টি জার্সি জাতের গাভি। ইয়ান জানালেন, শীতের সময় ছাড়া সারা বছর গরুগুলোকে খামারের টাটকা ঘাস খাওয়ান। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়ানের সঙ্গে পুরো গোচারণভূমি দেখলাম। মাঝখান দিয়ে সেচের পানি আসার নালাও রয়েছে। ৪০ বছর ধরে ইয়ান এই গ্রেজিং ল্যান্ডটা অরগানিকভাবে রেখেছেন। অন্য কিছু মেশাননি ঘাসের সঙ্গে। তাই গরুগুলো একদম প্রাকৃতিক খাবার পাচ্ছে। ইয়ান বলেন, প্রাকৃতিক এই ঘাসেই গরুর জন্য যথেষ্ট পুষ্টি রয়েছে। এই মাটিতে কখনো চাষাবাদ করা হয় না। বেলচা দিয়ে মাটি তুলে দেখালেন মাটির গুণাগুণ। দেখলাম উর্বর মাটির নিচে প্রচুর কেঁচো রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়ান আমার হাতে একটি কেঁচো তুলে দিয়ে বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রাকৃতিক এই লাঙল ছাড়া এই ভূমিতে আর কোনো চাষ হয় না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span>  </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাভিগুলো বেশ স্বাস্থ্যবান। মাঠে ড্যান্ডি লায়ন নামের একটা প্রাকৃতিক ফুল রয়েছে। এ থেকে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। যদি এই ফুলটি মাঠে না থাকত, তাহলে ক্যালসিয়াম আসত না</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনটাই দাবি ইয়ানের। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৯০টি গাভি থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক হাজার ৪৪০ কেজি দুধ আসে। ইয়ান বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এক ফোঁটা দুধও আমি কারো কাছে বিক্রি করি না। অন্য খামারিরা চিজ (পনির) নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে তাঁদের খামারের দুধ বিক্রি করেন। আমি নিজেই চিজ তৈরি করি। একেবারে অর্গানিক চিজ।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়ানের পনিরের ঘরে গিয়ে চোখ ছানাবড়া। তাকের পর তাক ভর্তি পনিরের গোল গোল চাকতি। একেকটির ওজন ১০ কেজি। যে পনির যত বেশি পুরনো, তার দাম তত বেশি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের সামনেই ছিল এক বছরের পুরনো ঘি। যেগুলোর দাম নতুন পনিরের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে আরেকটি পনির ঘরে গেলাম। ইয়ান প্রতি দুই দিনের দুধ সংরক্ষণ করার পর পনির তৈরি করেন। ১০ কেজি পনিরের দাম প্রায় ৫০০ ইউরো। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ৫০ হাজার টাকা। ইয়ান জানালেন, বাইরের পনিরের চেয়ে তাঁর পনিরের দাম তিন গুণ বেশি। কারণ তাঁর পনির শতভাগ অর্গানিক। হিসাব করে দেখলাম তাঁর ঘরে যে পরিমাণ পনির আছে, এতে কয়েক শ কোটি টাকার পনির তাঁর সংরক্ষণেই রয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইয়ানের সৌজন্যে পনিরের স্বাদ পরখ করলাম। বিশেষত্ব বোঝা গেল। একেবারেই অতুলনীয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>