<p><span style="color:#c0392b"><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হলদেপানা গাছটির ফুল, পাতা ও গড়ন একেবারেই আলাদা। সব কিছুতে একটি শৈল্পিক সামঞ্জস্য লক্ষণীয়; বিশেষত যাঁরা ঘরে গাছ পোষেণ তাঁদের জন্য আদর্শ শ্রেণির। বিশেষ সুবিধা হলো, গাছটি অল্প পানিতে অথবা কাদামাটিতেও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। এটি সাদা তরুক্ষীরযুক্ত বহুবর্ষজীবী জলজ বীরুৎ। পাতা পুরু, ঋজু, গুচ্ছাকার ও খাড়া। ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড ও ভারতের কোথাও কোথাও এই গাছের কচি পাতা ও পুষ্পদণ্ড স্যুপ ও সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গত ২০ বছরে আমাদের জলাভূমিতে অনেক রাজসিক ফুলের দেখা পেয়েছি; সেই সঙ্গে অনেক জলজ উদ্ভিদও। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত অগভীর ও বদ্ধ জলাশয়ের উদ্ভিদবৈচিত্র্য উল্লেখ করা মতো। কিন্তু সুদর্শন এই ফুলটি কিভাবে যে চোখ এড়িয়ে গেল! অবশেষে নান্দনিক এই ফুলের দেখা পেলাম গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তার অদূরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পাশে ছোট্ট একটি জলায়। কিছুদিন পর বিক্ষিপ্তভাবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল ও গাজীপুরের শালবন এলাকায় আরো কয়েকটি স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে হলদেপানা চোখে পড়েছে। গাছটির ফুল, পাতা ও গড়ন একেবারেই আলাদা। সব কিছুতে একটি শৈল্পিক সামঞ্জস্য লক্ষণীয়; বিশেষত যাঁরা ঘরে গাছ পোষেণ তাঁদের জন্য আদর্শ শ্রেণির। বিশেষ সুবিধা হলো, গাছটি অল্প পানিতে অথবা কাদামাটিতেও দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে। বই-পুস্তক ঘেঁটে গাছটির জুতসই কোনো বাংলা নাম পাওয়া গেল না। তবে হলদেপানা নাম দেওয়া যেতে পারে।  ইংরেজি নাম  </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">Yellow Velvetleaf</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">  বা হলুদ মখমলীয় পাতার গাছ।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এটি সাদা তরুক্ষীরযুক্ত বহুবর্ষজীবী জলজ বীরুৎ। পাতা পুরু, ঋজু, গুচ্ছাকার ও খাড়া। পত্রবৃন্ত পুরু, ২৫ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার লম্বা ত্রিকোণাকৃতি এবং পত্রাবরণ পরস্পর আচ্ছাদিত। পুষ্পবিন্যাস ছত্রমঞ্জরিসদৃশ। ফুল পর্যায়ক্রমে ২ থেকে ১২টি, ত্রিকোণাকারে সজ্জিত, আড়াআড়ি দেড় থেকে সাড়ে তিন সেন্টিমিটার, মঞ্জরিপত্রিকা ঝিল্লিযুক্ত, পুষ্পবৃন্ত অসম, ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার লম্বা, মূলীয় অংশ ত্রিকোণাকার এবং ওপরের অংশ ত্রিপক্ষল। বৃত্যংশ ৩ এবং স্থায়ী। পাপড়িসংখ্যা ৩, পাতলা, প্রশস্ত, ডিম্বাকার, ফ্যাকাসে হলুদ, কুঞ্চিত ও পতনোন্মুখ। পুংকেশর অসংখ্য, একাধিক সারিতে বিন্যস্ত। বীজ ১ মিলিমিটার লম্বা, কালো, সামান্য চাপা উভয় প্রান্ত গোলাকার ও অমসৃণ। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">-এর তথ্য অনুযায়ী, আমাদের দেশে এই জলজ উদ্ভিদটি </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">(Limnocharis flava)</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> শুধু চট্টগ্রাম জেলায়ই পাওয়া যায় বলে উল্লেখ থাকলেও গাজীপুরেও দেখা যায়। জলাভূমির বর্ণবৈচিত্র্য সৃষ্টির জন্য উদ্ভিদটির ব্যবহার আরো বাড়ানো প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড ও ভারতের কোথাও কোথাও এই গাছের কচি পাতা ও পুষ্পদণ্ড স্যুপ ও সালাদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। থাইল্যান্ডে আলাদা করে গাছটির কচি-কুঁড়ি খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। ১৯৪০ সালের দিকে ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব জাভা দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসী মোহাম্মদ আরিফ গাছটির আঙ্গিক বৈশিষ্ট্য ও বহুমাত্রিক ব্যবহার নিয়ে একটি হৃদয়গ্রাহী গান রচনা করেছিলেন বলে জানা যায়।</span></span></span></span></span></p>