<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাজীপুরে বেক্সিমকো ও ডরিন ফ্যাশনের শ্রমিকদের সঙ্গে রবিবার এলাকাবাসী ও অ্যামাজান নিটওয়্যার কারখানার শ্রমিকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এর জেরে বেক্সিমকো ও ডরিন ফ্যাশনের শ্রমিকরা অ্যামাজান নিট কারখানাটি পুড়িয়ে দিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা টানা তৃতীয় দিনের মতো চক্রবর্তী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। নতুন করে আন্দোলনে নেমেছেন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া পানিশাইল এলাকার ডরিন ফ্যাশনের শ্রমিকরা। তারা দ্রুত কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে জিরানী বাজার এলাকায় একই সড়ক অবরোধ করায় দুর্ভোগ আরো এক ধাপ বেড়েছে। ওই দুই কারখানার শ্রমিকদের বিক্ষোভের জেরে মহানগরী এলাকার আশপাশের ২০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বেক্সিমকোর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন বলে জানা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে বেতনের দাবিতে বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা তৃতীয় দিনের মতো সোমবার সকাল ৯টায় চক্রবর্তী বাসস্ট্যান্ডে চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল ১০টার দিকে পাশের পানিশাইল এলাকায় একই সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া ডরিন ফ্যাশনের শ্রমিকরা। তারা চক্রবর্তী ও জিরানী বাজার এলাকায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভ ও মহড়া দিতে থাকেন। এতে ওই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই জেরে গাজীপুর মহানগরীর কাশিমপুর ও জিরানী এলাকায় অন্তত ২০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তবে উৎপাদন চলছিল পাশের আশুলিয়া পূর্ব কলতাসুতি এলাকার অ্যামাজান নিটওয়্যার কারখানায়। জানতে পেরে আন্দোলনকারীরা ওই কারখানার সামনে গিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। আমাজানের শ্রমিকরা রাজি না হলে বেক্সিমকো ও ডরিনের শ্রমিকরা আশপাশের দোকানপাটে হামলা চালান। এ সময় এলাকাবাসী ও আমাজানের শ্রমিকরা মিলে তাদের ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হন। সকাল ১১টার দিকে বেক্সিমকো ও ডরিনের শ্রমিকরা সংগঠিত হয়ে অ্যামাজান কারখানায় হামলা করেন এবং আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে রওনা হলে বেক্সিমকো ও ডরিনের শ্রমিকদের বাধার মুখে আটকা পড়ে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি। বিকেল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারলেও তার আগেই কারখানাটির সব মালপত্র ও মেশিন সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন বলেন, খবর পেয়ে কাশিমপুর ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট পাঠানো হয়েছে। শ্রমিকদের বাধার কারণে সময়মতো পৌঁছানো যায়নি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানো হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাশিমপুর থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের অবরোধের কারণে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস সঠিক সময়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। বিকেল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। আগুনে কারখানার পাশের দুটি বাড়িও পুড়ে গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো জানান, বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে সিরামিক, টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট মিলিয়ে ১২টির মতো কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় ৪১ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। সিরামিকে বেতন নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। গার্মেন্টস ও টেক্সটাইলের ৩৬ হাজার শ্রমিকের বেতন বকেয়া রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিক সালমান এফ রহমান কারাগারে রয়েছেন। কর্মকর্তারা আগামী ২০ নভেম্বর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের কথা জানিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাজানের মালিকের বুকফাটা আহজারি</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ধারদেনা, ব্যাংক লোন ও নিজের জমানো টাকায় তিল তিল করে নিজ বাড়িতে অ্যামাজান নিটওয়্যার কারখানাটি গড়ে তুলেছিলেন মো. আল আমিন সর্দার (৫২)। কারখানাটিতে কাজ করতেন শতাধিক শ্রমিক। সাব কন্ট্রাকের কাজে চলত কারখানা। কারখানার আয় দিয়ে চলত ছেলেমেয়েদের পড়ালেখাসহ সংসার।  বেক্সিমকো ও ডরিন ফ্যাশনের শ্রমিকদের দেওয়া আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে যায় কারখানাটি। লাগুন লাগার পর সাহায্য চেয়ে আল আমিন ফোন করেন ফায়ার সার্ভিসে। দেরি দেখে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে নিজেই পানি ঢেলে চেষ্টা করেন আগুন নেভাতে। কিন্তু চোখের সামনে দাউ দাউ করে আগুনে কারখানা পুড়তে থাকলে পাগলের মতো হয়ে পড়েন তিনিসহ পরিবারের সবাই। মাটিতে পড়ে তাদের বুকফাটা কান্না ও আহাজারিতে ভারি হয় এলাকার পরিবেশ। আল আমিন </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার সব শেষ। নিঃশেষ হয়ে গেলাম</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলে জ্ঞান হারান। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাভারে মহাসড়ক অবরোধ করে শ্রমিক বিক্ষোভ </span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সাভার প্রতিনিধি জানান, সাভারে ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। সোমবার সকালে সাভারে বাইশ মাইল এলাকায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন গ্লোবাল অ্যাটায়ার লিমিটেড কারখানার পাঁচ শতাধিক শ্রমিক। অবরোধের কারণে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিল্প পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় অন্তত চারজন শ্রমিক আহত হন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্দোলনকারীরা বলেন, শ্রমিকদের দাবি আদায়ে সোচ্চার থাকা ৩৫ জন শ্রমিককে অন্যায়ভাবে ছাঁটাই করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ছাঁটাই করা শ্রমিকদের অবিলম্বে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানান তাঁরা। নয়তো কঠিন আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিকরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিল্প পুলিশ জানায়, গ্লোবাল অ্যাটায়ার লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী পাওনাদি পরিশোধের মাধ্যমে ৩৫ জন শ্রমিককে ছাঁটাই করে। ছাঁটাই করা শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি তুলে সকাল ৯টা থেকে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানায়। পরে জলকামান নিক্ষেপ করে সড়কের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, বর্তমানে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>