<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ময়মনসিংহে শিশুদের চোখের ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যার কারণে চশমার ব্যবহার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে এই ব্যবহারের হার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ময়মনসিংহের প্রসিদ্ধ চক্ষু চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ডা. কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণে এই তথ্য জানা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মোবাইল ফোনে দীর্ঘ সময় ধরে গেম খেলা, নিয়মিত ফাস্ট ফুড খাওয়া, শারীরিক কসরত না করা, খোলামেলা সবুজ পরিবেশে না যাওয়া ইত্যাদি কারণে দৃষ্টিশক্তিতে ত্রুটি দেখা দেওয়ায় শিশুদের মধ্যে চমশার ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা এ ব্যাপারে এখনই সচেতনতামূলক উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে এই হাসপাতালে অনূর্ধ্ব ১৬ বছর বয়সী শিশু রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৬ হাজার ৯০০। এর মধ্যে ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুর সংখ্যা আট হাজার ৮৮। অর্থাৎ ২২ শতাংশ। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই হাসপাতালে আসা একই বয়সসীমার শিশু রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪ হাজার ৬৬২। এর মধ্যে ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশুর সংখ্যা ১০ হাজার ৮৮৯। অর্থাৎ ৪৪ শতাংশ শিশুর এই সমস্যা। ২০২৩ সালে এই হার ছিল ৪০ শতাংশ। প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে এই হাসপাতালে আসা ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু রোগীর সংখ্যা ক্রমে বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শিশুদের ক্ষীণদৃষ্টির বিষয়ে সরেজমিনে জানতে গত রবিবার নগরীর অন্যতম মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিদ্যাময়ী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চতুর্থ শ্রেণির প্রভাতী শাখার বি সেকশনে ৬২ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সাতজনের চোখে চশমা। একই স্কুলের প্রভাতী শাখার নবম শ্রেণিতে এই সংখ্যা আরো বেশি। এই শ্রেণিতে ৭৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ জনই চশমা ব্যবহার করছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে আরো বেশি করে মোবাইল ফোনের বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে। খাওয়ার-দাওয়ার বিষয়েও প্রাকৃতিক পুষ্টিকর খাবারের চেয়ে অস্বাস্থ্যকর ফাস্টফুড বেশি পছন্দ করে। এ জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাবে চোখে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অল্প বয়সে শিশুদের চশমা ব্যবহার করতে হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই দিন মুকুল নিকেতন স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ৫০ জনের মধ্যে ১৩ জনের চোখে চশমা। জিলা স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, দিবা শাখার নবম শ্রেণির ৬০ জনের মধ্যে ১৮ জন চশমা ব্যবহার করছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একাধিক অভিভাবক বলেন, যান্ত্রিক নগর জীবনের অন্যতম কুফল হচ্ছে শিশুদের দৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে যাওয়া। তাঁরা বলেন, এখনকার শিশুরা খোলা আকাশ দেখতে পারে না। সবুজ দৃশ্য তাদের চোখে পড়ে না। কচি সবুজ ঘাসে তাদের হাঁটাচলা নেই। এ ছাড়া অসচেতন অভিভাবকরা শিশুদের জাংক ফুড খাওয়াতে শুরু করেন। আবার অনেক শিশুও প্রাকৃতিক খাবার খেতে চায় না। সচ্ছল ঘরের অনেক শিশুর শাক-সবজিতে অরুচি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ত্রিশালের খোরশেদুল আলম বলেন, তাঁর ১২ বছরের ছেলেশিশু সাত বছর ধরে চশমা ব্যবহার করে। ছয় মাস পর পর তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। চশমা ছাড়া সে দেখতেই পারে না। তিনি বলেন, তার ল্যাপটপে শিশুটি গেম খেলত খুব। তা থেকে এই সমস্যা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. কে জামান বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ভুল খাদ্যাভ্যাস, ভেজাল খাদ্য, সবুজ শাক-সবজি না খাওয়া, মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করা, খেলাধুলা না করা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব কারণে শিশুদের দৃষ্টিশক্তি কমে যাচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের নিজেদের সর্বনাশ আমরা নিজেরাই ডেকে আনছি। এখনই এ ব্যাপারে সবার সচেতন হওয়া দরকার।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই হাসপাতালের কো-অর্ডিনেটর শরীফুজ্জামান পরাগ বলেন, এই হাসপাতালে প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন শিশু রোগীর সংখ্যা। তিনি বলেন, তারা প্রতিটি শিশু রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি চোখের বিষয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। বিভিন্ন স্থানে তারা চক্ষুরোগ নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করে থাকেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, চক্ষু রোগীদের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও শিশুদের যে ক্ষীণদৃষ্টির সমস্যা বাড়ছে, তা সহজেই বোঝা যায়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, মূলত বেশি করে কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহারের কারণে শিশুদের এই সমস্যা বাড়ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>