<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিসংক্রান্ত সেবা দেয় সাবরেজিস্ট্রার অফিস। জমিজমা নিবন্ধন, নামজারিসংক্রান্ত কাজ হয় এ অফিসে। অথচ অফিসটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন নয়, আইন ও বিচার বিভাগের নিবন্ধন পরিদপ্তরের অধীন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একইভাবে অগ্নিকাণ্ড, ভূমিকম্প, বন্যা, পাহাড়ধসসহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধারকাজ করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মীরা। তাঁদের যন্ত্রপাতি কেনার বরাদ্দও দেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। অথচ এ অধিদপ্তরটিও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনাহীন প্রশাসনের নজির এখানেই শেষে নয়, মুসলিম বিধান মতে বিয়ে পড়ানো ও নিবন্ধনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে দেশের কাজি অফিসগুলো। কিন্তু কাজি অফিস ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন না হয়ে আইন ও বিচার বিভাগের নিবন্ধন পরিদপ্তরের অধীন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলো স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের অধীন থাকলেও এর প্রধান স্টেকহোল্ডার চিকিৎসকদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। কিন্তু কেউ কারো কর্তৃত্ব ছাড়তে রাজি নয়। গড়ে উঠেছে পরিকল্পনাহীন প্রশাসনে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সেবাপ্রার্থী মানুষ।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর বিরোধিতার কারণে বারবার উদ্যোগ নিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। কর্মচারীদের স্বার্থ না দেখে সেবাপ্রার্থী জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সরকারকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশাসনবিষয়ক বহু গ্রন্থ প্রণেতা মো. ফিরোজ মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রশাসনে যেসব অসংগতি রয়েছে, তা সংগতিপূর্ণ করলে সেবাপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি কমবে। বিদ্যমান </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এলোকেশন অব বিজনেজ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সংশোধন করে এসব অসংগতি দূর করতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব সমন্বয়হীনতার বিষয় স্বীকারও করেছেন সরকারের ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ। নিজ দপ্তরে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় প্রস্তুত একটি প্রতিবেদনে ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার পরামর্শ এসেছে। ২০০৮ সালে আমি ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে এসেছিলাম। তখন আমি একই সঙ্গে ভূমি এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলাম। পরবর্তী সরকার আসার পর সেটা আবার বদলে গেছে। সুতরাং আমরা আবার নতুন করে চেষ্টা করতে পারি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনে সাবরেজিস্ট্রার অফিসের কর্তৃত্ব দাবি করেছিলেন তৎকালীন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। কিন্তু সেদিনই ভূমিমন্ত্রীর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে তখনকার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন। এটা আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন থাকবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে ২০১৯ সালে সাবরেজিস্ট্রার অফিস ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন আনার সুপারিশ করেছিল ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। তারও আগে ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তৎকালীন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ। ওই চিঠিতে বলা হয়, একসময় আইন ও ভূমি মন্ত্রণালয় একত্রে ছিল। পরে পৃথক হওয়ার সময় ভূমি রেজিস্ট্রি অফিস আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে যায়। ভূমি ব্যবস্থাপনা কাজে গতি আনতে এ তিনটি শাখাকে একই মন্ত্রণালয়ের অধীন আনা প্রয়োজন। ওই দিনই সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সাবরেজিস্ট্রার অফিসকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হলো। কিন্তু সেটি আজও আলোর মুখ দেখেনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আইনসচিব ও ধর্মসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। আইনসচিব থাকাকালে কাজি অফিসগুলো ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন দেওয়ার একটি প্রস্তাব তৈরি করার নির্দেশ দেন। তখন দেশের কাজিরা এটি করা হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দেন। সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা ড. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা যেহেতু নিবন্ধনের কাজ করি সেহেতু আমাদের আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন থাকাই যুক্তিযুক্ত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১২ সালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন করার সময় তৎকালীন খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের অধীন আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিরোধিতার কারণে সে উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০১৭ সালে প্রশাসনিকভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ভাগ হয়ে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> এবং </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নামে দুটি বিভাগ করা হয়। এতে মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের অধীন রাখা হয়। কিন্তু চিকিৎসক নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন নিয়ন্ত্রণ করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ কারণে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের কার্যক্রমে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান, ডেন্টাল কলেজ, ম্যাটস ও আইইএইচটিগুলোর বিভিন্ন পদে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে কর্মরতদের বদলি, পদোন্নতি ও পদায়ন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে করায় মেডিক্যাল কলেজগুলোর প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা ও জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের স্থাপনাগুলোর নির্মাণ ও মেরামতের কাজ মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু আজ অবধি এ সমস্যার সমাধান হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"> </p>