<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ফুলেল শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সমকালীন বাংলা কবিতার কিংবদন্তি কবি হেলাল হাফিজ। শনিবার সকালে বাংলা একাডেমিতে এবং দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে দুই দফায় জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অন্যদিকে কবিকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদক দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই দ্যুতিময় পঙক্তির স্রষ্টা হেলাল হাফিজ। কয়েক বছর ধরে তিনি ঢাকার শাহবাগের সুপারহোম নামের একটি হোস্টেলে থাকতেন। শুক্রবার দুপুরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শনিবার সকাল ১১টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয় কবির মরদেহ। কবির প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে। এতে অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজমসহ অনেকে। জানাজায় ইমামতি করেন কবির ভাই দুলাল আবদুল হাফিজ। এ সময় বাংলা একাডেমি, প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য, বাংলাদেশ রাইটার্স ক্লাব, নান্দিক ও সুপার হোস্টেলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুপুর সোয়া ১২টার পর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে। বাদ জোহর সেখানে অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশ নেন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এবং কবি, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। জানাজা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাব ফুল দিয়ে কবিকে শ্রদ্ধা জানায়। এরপর একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, উদীচী ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানাজার আগে পরিবারের পক্ষে কবির বড় ভাই দুলাল আবদুল হাফিজ বলেন, তার ভাইটি বড় অভিমানী ছিলেন। অভিমান নিয়েই তিনি চলে গেছেন। প্রেস ক্লাবই ছিল তার প্রথম ঘর। তবু তখন রাতের বেলা তাকে বাসায় পাওয়া যেত। তারপর তিনি পুরোপুরি একা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। পরিবারও তা মেনে নিতে বাধ্য হয়। শেষ কয়েক বছর তাদের সঙ্গে ছিলেন না কবি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রেস ক্লাব ও হেলাল হাফিজ অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সারা দেশের কবি-সাহিত্যিক, ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষী আসতেন। সবার সঙ্গে তিনি মিশতেন। তিনি কোমল হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। তিনি নিজের সন্যাসজীবন বেছে নিয়েছিলেন। সবাই চেষ্টা করেছে তাকে গৃহী করার জন্য, সম্ভব হয়নি। এই দুই বছর আগেও তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তখন প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে আমরা বিএসএমএমইউতে গিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে ভর্তি করার ব্যবস্থা করি। পরদিন উপাচার্য রাউন্ডে গিয়ে দেখেন রোগী নাই। উনি ভর্তিই হন নাই। হাসপাতালে উনি যেতেন না। হেলাল হাফিজ বেঁচে থাকবেন তার লেখার মধ্য দিয়ে। প্রেম ও দ্রোহের এবং বাংলাদেশে যে একটা নতুন বিনির্মাণের স্বপ্ন আমরা দেখছি, সেই প্রত্যয়ের অঙ্গীকারে হেলাল হাফিজের কবিতা আমাদের উজ্জীবিত করেছে স্বাধীনতার মন্ত্রে, উজ্জীবিত করেছে প্রগতির আন্দোলনে, সহায়তা করেছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এর আগে বাংলা একাডেমিতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সংস্কৃতিজগৎ তার শূন্যতা বোধ করবে। এক বইতেই তিনি সংস্কৃতিতে তার অবস্থান চিরস্থায়ী করে গেছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কবি হেলাল হাফিজের অসমাপ্ত পাণ্ডুলিপি থাকলে বাংলা একাডেমি বের করবে। আরেকটি বিষয়, যদিও আমি মনে করি, কবি কখনো কোনো পদক বা পুরস্কারের জন্য কিছু লেখেননি। কিন্তু পুরস্কার দিতে হয় তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য। হেলাল হাফিজকে তো আমরা একুশে পদক বা স্বাধীনতা পুরস্কার কখনোই দিইনি। কিন্তু এটি দেওয়াটা জাতির দায়িত্ব ছিল। এর ফলে এ বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে আমাদের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কী করার আছে, আমরা সেটা দেখব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>