ফিরে দেখা ২০২৪

হতাহতের বছরে স্বাস্থ্যে স্থবিরতা, অস্থিরতা

  • ► প্রথম আট মাস কেটেছে হতাহতের নানা ঘটনায়
  • ► আগস্টের প্রথম পাঁচ দিন জরুরি চিকিৎসার জন্য শত শত আহত রোগী হাসপাতালে আসতে থাকে
শিমুল মাহমুদ
শিমুল মাহমুদ
শেয়ার
হতাহতের বছরে স্বাস্থ্যে স্থবিরতা, অস্থিরতা

স্বাস্থ্যসেবা খাতে ২০২৪ সালের প্রথম আট মাস কেটেছে হতাহতের নানা ঘটনা দিয়ে। শেষের চার মাস কেটেছে স্থবিরতা ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে। বছরজুড়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল ১০টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় শহীদ ও আহতদের বিষয়।

বছরের প্রথম আট মাসে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো খতনা করাতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যু, রাজধানীর বেইলি রোডে আগুন এবং ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনা। এ ছাড়া রাসেলস ভাইপার আতঙ্ক, হিট স্ট্রোক ও অবৈধ হাসপাতালে অভিযান ছিল উল্লেখযোগ্য।

আগস্টের পর বন্যা-পরবর্তী রোগবালাই, ডেঙ্গু আতঙ্ক, অপরিকল্পিত বদলি-পদায়ন, মেডিক্যাল কলেজগুলোর নাম পরিবর্তন ও পদ-পদবি নিয়ে অস্থিরতা। এসব ঘটনায় স্বাস্থ্য খাতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হলেও কোনো সমাধান দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য চিকিৎসাবিজ্ঞানী অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, স্বাস্থ্য খাত ছিল গতানুগতিক। চোখে পড়ার মতো কোনো অগ্রগতি নেই। বরং বড় একটা সময় রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে স্থবিরতা ও অস্থিরতা বিরাজ করে, যা এখনো চলমান।

তিনি বলেন, ২০২৪ সাল ছিল হতাহতের বছর।

তবে আগামী বছর শুরু করতে যাচ্ছি আশার সূচনা দিয়ে। যদি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে, তাহলে হয়তো পরিবর্তন আসবে।

১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ জুলাই এবং আগস্টের প্রথম পাঁচ দিন জরুরি চিকিৎসার জন্য শত শত আহত রোগী হাসপাতালে আসতে থাকে। বেশির ভাগ গুলিবিদ্ধ। চোখে ও শরীরে ছররা গুলির আঘাত নিয়ে আসে হাজারের বেশি মানুষ।

পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালগুলোকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে।

গণ-অভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিশেষ সেলের প্রথম ধাপের খসড়া তালিকা অনুযায়ী, এতে ৮৬২ জন শহীদ এবং ১১ হাজার ৫৫১ জনের আহত হওয়ার তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বেশি।

সর্বশেষ জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তথ্য মতে, চোখে ছররা গুলির আঘাতে আহত এক হাজার ৭৪ জন। এর মধ্যে দুই চোখ হারিয়েছেন ৩৯ জন। এক চোখের দৃষ্টি হারিয়েছেন ৫৮৩ জন। গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ২৭ জন হাত ও পা হারিয়েছেন। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিন শতাধিক ব্যক্তি।

আগস্টের পর হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর চাপ বাড়ে। চলতি বছর এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক লাখ ৭১১ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৫৬৯ জন। মৃত্যুর এই সংখ্যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

 

দাবির মুখে স্থবির স্বাস্থ্যসেবা খাত

৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সবচেয়ে বড় বিতর্ক দেখা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে নিয়োগ নিয়ে। অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে সরিয়ে মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক রোবেদ আমিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এক দিনের জন্যও মহাপরিচালকের পদে বসতে পারেননি।

এই নিয়োগের প্রথম বিরোধিতা করে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। এরপর বিরোধিতা শুরু করে জামায়াত সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ)।

এরপর বৈষম্যের শিকার ড্যাব বা এনডিএফের চিকিৎসকদের বিভিন্ন পদে বসানো শুরু হয়। তবে অভিযোগ আছে, অনেক ক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতা বিবেচনা করা হয়নি।

এই সময়ে সচিব পর্যায়েও বদলি ঘটেছে একাধিকবার। আওয়ামী লীগ আমলের স্বাস্থ্যশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার দুজন সচিবকে বদলি করে অন্তর্বর্তী সরকার। দুই বিভাগের দায়িত্ব নেন আকমল হোসেন আজাদ। কিছুদিন দায়িত্ব পালনের পর তাঁকেও সরানো হয়। নতুন সচিব হিসেবে কাজে যোগ দেন সাইদুর রহমান। বদলিজনিত অস্থিরতায় স্বাস্থ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়নি।

মাসিক ভাতা ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে বর্তমানে স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষার্থীরা সম্মানি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করছেন। কর্মবিরতিতে আছেন বেশির ভাগ স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষার্থী।

স্বতন্ত্র পরিদপ্তর, ডিপ্লোমাধারীদের দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দেওয়া, গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি করে চাকরিজীবীদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির দাবিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবরোধ করেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বিভিন্ন পদ নিয়ে টানা এক সপ্তাহ ড্যাব ও এনডিএফ সমর্থকদের মারামারি-হাতিহাতির ঘটনা ঘটে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ২০২৪ সাল কেটেছে গতানুগতিক। কারণ এই সময়ে বিগত বছরগুলোতে স্বাস্থ্য খাতে গুণগত পরিবর্তন আসেনি। এর অন্যতম কারণ, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট।  দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম বাজেট বাংলাদেশের। আবার একদিকে বাজেট বৃদ্ধির সামর্থ্য নেই, অন্যদিকে যে বাজেট হয় সেটাও ব্যয় করার দক্ষতা নেই। এর সঙ্গে দুর্নীতি, অপচয় তো রয়েছেই।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

১২ জেলায় ৯ জনকে ধর্ষণ, ৫ জনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
১২ জেলায় ৯ জনকে ধর্ষণ, ৫ জনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

সারা দেশের মধ্যে ১২ জেলায় সম্প্রতি ৯ জনকে ধর্ষণ এবং আরো পাঁচজনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে বাগেরহাটে পৃথক স্থানে দুজনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মৌলভীবাজার, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, জামালপুর, বাগেরহাট, ময়মনসিংহ ও নাটোরে ৯ জনকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে।

এ ছাড়া সুনামগঞ্জ, সাভার, ফরিদপুর, বগুড়া ও বরগুনায় পাঁচজনকে ধর্ষণচেষ্টা হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। 

লাড্ডু খাওয়ানোর ছলে শিশু ধর্ষণের অভিযোগ : বাগেরহাটের ফকিরহাটে সাড়ে তিন বছরের এক শিশু বৃদ্ধ ভিক্ষুকের লালসার শিকার হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শিশুটিকে উদ্ধার করে গত শুক্রবার খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এর আগে গত বুধবার দুপুরে জেলার ফকিরহাট উপজেলার আট্টাকি এলাকার ভাড়া বাসায় ওই শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়।

অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে গতকাল শনিবার বাগেরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ : নাটোরের বড়াইগ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাত ১১টায় উপজেলার নগর ইউনিয়নের মশিন্দা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

আটককৃতরা হলেন মশিন্দা গ্রামের কামরুল ইসলাম (৪০) ও মনির হোসেন (৩২)। এ ঘটনায় গতকাল প্রতিবন্ধী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

পথশিশুকে ধর্ষণচেষ্টায় বৃদ্ধ গ্রেপ্তার : বরগুনায় এক পথশিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মোসলেম (৬৫) নামের এক ঝালমুড়ি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পৌর শহরের নয়াকাটা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত মোসলেম বরগুনা সদর উপজেলার হেউলিবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা।

বাকপ্রতিবন্ধী নারী ও গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ : ময়মনসিংহের ভালুকায় দফায় দফায় ধর্ষণে বাকপ্রতিবন্ধী নারী তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার এবং এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ভালুকা পৌরসভার কাঁঠালী ও উপজেলার ভরাডোবা এলাকায় ঘটনা দুটি ঘটেছে। ভালুকা মডেল থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোজাদার গার্মেন্টসকর্মীকে ধর্ষণচেষ্টা : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত রোজাদার গার্মেন্টসকর্মীকে (১৭) ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি খায়রুল ইসলাম সরকারকে (৩৬) গতকাল গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  গত ১২ মার্চ ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে গতকাল ধুনট থানা থেকে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ : বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার আট্টাকী এলাকায় সাড়ে তিন বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শিশুটি বর্তমানে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত আলকাছ তালুকদারকে (৬৩) গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ : জামালপুর সদর উপজেলায় এক অটোরিকশাচালকের বিরুদ্ধে ১৩ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অভিযুক্ত মো. লাল মিয়া (৫০) পেশায় অটোরিকশাচালক। ওই ঘটনার পর থেকেই লাল মিয়া পলাতক। 

মায়ের সহায়তায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ : ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মেয়ের মায়ের সহায়তায় ১২ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে দুই তরুণের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার ভুক্তভোগীর বাবা থানায় অভিযোগ করেছেন। 

থানার ওসি মাসুম খান বলেন, বিষয়টি একটু জটিল মনে হচ্ছে। এর পরও আমরা অভিযোগ গ্রহণ করেছি। তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা : ফরিদপুরের মধুখালীতে গত শুক্রবার সকালে সাত বছর বয়সী প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ১৯ বছর বয়সী আল মামুন সোহাগকে আটক করে স্থানীয় জনতা মধুখালী থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কামারখালী ইউনিয়নের স্বরূপপুর গ্রামে।

মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার : মেহেরপুরের গাংনীতে ২০ বছর বয়সী বিবাহিত মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের অভিযুক্ত আশারুল ইসলামকে (৪৫) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভিকটিম বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। ওই দিন রাত ২টার দিকে ভিকটিম কারো স্পর্শ অনুভব করায় ঘুম ভেঙে যায়। মোবাইলের আলোতে তিনি দেখেন, বাবা আশারুল হক তাঁর বিছানায় বসে আছেন। এরপর আশারুল তাঁকে ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার : মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় ধর্ষণের অভিযোগে রাজেন রায় (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার নিউ সমনবাগ চা-বাগানের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আশুলিয়ায় শিশু ধর্ষণের চেষ্টা : সাভারের আশুলিয়ায় সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে এক মুদি দোকানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাতে আশুলিয়ার কবিরপুর তেলিবাজার মাদরাসার পাশে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা : সুনামগঞ্জের ছাতকে ১০ বছর বয়সী এক মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে।

ছাতক থানার ওসি মোখলেছুর রহমান আকন্দ বলেন, অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমের পিতার করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য

হামলার আশঙ্কায় সিপিবি কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা জোরদার

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
হামলার আশঙ্কায় সিপিবি কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তা জোরদার

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলার হুমকি দেওয়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে শিশু আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় দলটি শোক মিছিল করার ঘোষণা দিলে এই হুমকি দেওয়া হয়।

গতকাল শনিবার সকাল থেকে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সিপিবি অফিসের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় সেখানে গোয়েন্দাদের পাশাপাশি সেনা সদস্যদেরও টহল দিতে দেখা যায়।

পুরানা পল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবনে দেখা যায়, কিছু নেতাকর্মী সামনে অবস্থান করছেন। নেতাকর্মীরা জানান, মাগুরায় শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দলটির পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে সিপিবি কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম কালো পতাকা উত্তোলন করে বত্তৃদ্ধতায় বলেন, মাগুরায় শিশু ধর্ষণের পর মৃত্যুর এই লজ্জা বাংলাদেশ বুক ধারণ করতে পারছে না। আমাদের দেশে মূল্যবোধের যে অবক্ষয় হয়েছে, সেটি কল্পনাতীত।

এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সও বত্তৃদ্ধতা করেন।

এদিকে হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অপসারণের দাবিতে গতকাল গণমিছিলের যে কর্মসূচি দিয়েছিল বামপন্থী আটটি সংগঠন, সেটিও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থগিত করা হয়। শুক্রবার দেওয়া তাদের এই কর্মসূচির বিপরীতে ঢাকার পুরানা পল্টনে সিপিবির কার্যালয়কে ছাত্র-জনতার কার্যালয় বানানোর ডাক দেন লেখক ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। তিনি ঘোষণা দেন সিপিবি অফিস ঘেরাও করারও।

পিনাকীর সেই ডাকের পরিপ্রেক্ষিতে এদিন সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোনো জনসমাগম বা বিশৃঙ্খলা দেখা যায়নি।

কর্মসূচির মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে সিপিবি পুনর্বাসন করছেএমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তি ভবনের সামনে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক প্রিন্স বলেন, যারা ইতিহাস জানে না, তারা কী বলল না বলল এটাতে দোষ দিতে চাই না। অনেকে ক্ষমতার পরিবর্তন চান, কিন্তু ব্যবস্থার পরিবর্তন চান না। একমাত্র বামপন্থী ও কমিউনিস্টরা জনগণের মুক্তির জন্য কথা বলে।

মন্তব্য
জবি ছাত্রী অবন্তিকার আত্মহত্যা

এক বছরেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ আসামিরা জামিনে

কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
কুমিল্লা (উত্তর) প্রতিনিধি
শেয়ার
এক বছরেও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ আসামিরা জামিনে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার প্রতিবেদন এক বছরেও জমা দিতে পারেনি পুলিশ। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম ও তাঁর পরিবার। এ ছাড়া জবির তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না করায় ন্যায়বিচার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন তাহমিনা।

মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জবির বেশ কিছু শিক্ষার্থী অবন্তিকাকে মানসিক নির্যাতন করেন।

এ ঘটনায় অবন্তিকা জবি শিক্ষকদের সহযোগিতা চেয়েও না পেয়ে ছুটিতে গিয়ে গত বছরের ১৫ মার্চ কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁওয়ের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। এর আগে তিনি এ নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। পরে এ ঘটনায় অবন্তিকার মা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন।

ঘটনার রাত থেকে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন জবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

পরে ১৮ মার্চ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও অবন্তিকার সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এ ঘটনার দুই দিন পর জবি প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তবে তাঁদের তদন্ত প্রতিবেদনে কী এসেছে তা জানানো হয়নি। জড়িতদের বিরুদ্ধে জবি প্রশাসন কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নেয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এরই মধ্যে তদন্তসংশ্লিষ্ট জবি প্রশাসন জানিয়েছে, তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ ও সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাহমিনা শবনম বেগম বলেন, অবন্তিকা সহপাঠীর প্রেম প্রত্যাখ্যান করায় তাঁকে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে তাঁর কিছু সহপাঠী।
এতে শিক্ষকদের কাছে প্রতিকার চেয়েও আমার মেয়ে পায়নি। কারণ শিক্ষক-প্রক্টর সবাই ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে একই গ্রুপের লোক হওয়ায় এত দিন তদন্ত এগোয়নি। কিন্তু পুলিশ এক বছরেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়নি। আমার সঙ্গে যোগাযোগও করেনি।

তাহমিনা বলেন, মৃত্যুর আগে অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে স্পষ্ট করেই বলে গেছে, আমি যদি কখনো সুইসাইড করি, তবে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র দায়ী থাকবে আমার ক্লাসমেট আম্মান সিদ্দিকী আর তাঁকে সাপোর্টকারী জগন্নাথের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। সুনির্দিষ্ট করে বলে গেলেও এখনো কেন মামলার চার্জশিট দিতে গড়িমসি করছে?

জবি সূত্র জানায়, এ ঘটনায় জবি প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন। প্রতিবেদনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে জাকির হোসেন বলেন, আত্মহত্যার ঘটনা তদন্তে ৪৫ জনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গত বছরের ১৩ জুন প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কী আছে, তা জানতে পারেনি অবন্তিকার পরিবার। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মামলার বাদী তাহমিনা শবনম বলেন, ২০২৩ সালে অবন্তিকার বাবা মারা যান। আমার ছেলেও ছোট। মেয়ের বিচারের জন্য এখন একাই লড়াই করতে হচ্ছে আমাকে। মেয়েকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য জবিতে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু সেখানকার কিছু শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মানসিক নির্যাতনে মেয়েকে অকালে জীবন দিতে হলো। এ মৃত্যুর দায় জবি প্রশাসন এড়াতে পারে না। তিনি বলেন, ঘটনার দুই হোতাকেও তো আদালত জামিন দিয়েছেন। তারা কি আদৌ শাস্তি পাবে?  তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জবির রেজিস্ট্রার ও পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক শেখ গিয়াস উদ্দিন বলেন, গত জানুয়ারিতে সিন্ডিকেট সভায় অবন্তিকার আত্মহত্যার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আত্মহত্যার সঙ্গে কারা জড়িত এ বিষয়গুলো স্পর্শকাতর। তাই এখনই এসব বিষয় গণমাধ্যমে প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে যারাই জড়িত, বিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, অবন্তিকার মোবাইল ফোনের গ্যালারিতে থাকা বেশ কিছু ছবি, স্ক্রিন শট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের খুদে বার্তা পাওয়া গেছে, যা তদন্তে সহায়ক হয়েছে। অবন্তিকার মোবাইল ফোনটি আদালতের অনুমতি নিয়ে পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। এর প্রতিবেদনও এসেছে।

মন্তব্য

দিনে গড়ে ১২টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড

নিখিল ভদ্র
নিখিল ভদ্র
শেয়ার
দিনে গড়ে ১২টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড

বিগত ২০২৪ সালে সারা দেশে ৩৩১ জন শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। আর চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি। দেশে শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা বাড়তে থাকায় জনমনে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বাড়ছে। পুলিশের খাতায় প্রতিদিন গড়ে ১২টি ধর্ষণের মামলা রেকর্ড হচ্ছে।

তবে বাস্তবে ঘটনা আরো বেশি ঘটছে বলে জানান নারী ও শিশু অধিকারকর্মীরা। তাঁরা মনে করেন, আইনের যথাযথ প্রয়োগ না থাকায় এই অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে আইনি জটিলতাও দায়ী। এ অবস্থায় বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

সূত্র মতে, মাগুরার আট বছরের শিশু আছিয়া ধর্ষণের ঘটনার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা। ৬ মার্চ আছিয়া ধর্ষণের ঘটনার পর ৭ মার্চ কুমিল্লায় প্রতিবন্ধী মেয়েকে গণধর্ষণ, ৮ মার্চ গাজীপুর ও ফরিদপুরে দুই শিশুকে ধর্ষণ, ৯ মার্চ গাজীপুরে আট বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ ও চট্টগ্রামে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, ১০ মার্চ সিলেটের বিশ্বনাথে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ, ১১ মার্চ সিলেটে মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ ও বরগুনায় স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করায় মেয়ের বাবা খুন, ১২ মার্চ সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী শিশুকে (১২) ধর্ষণ এবং ১৩ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে বাকপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে (১৩) অপহরণের পর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ এবং বগুড়ায় ছয় বছরের দুই শিশুকে ধর্ষণের ঘটনা আলোচনায় এসেছে।

পুলিশের তথ্য অনুসারে, গত ফেব্রুয়ারির ২৮ দিনে ধর্ষণের অভিযোগে দিনে গড়ে ১২টি মামলা হয়েছে। আর গত বছর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১৭ হাজার ৫৭১টি মামলা এই আইনে এ বছরের জানুয়ারি মাসে এক হাজার ৪৪০টি মামলা হয়েছে।

গত বছরের জানুয়ারিতে এই সংখ্যা ছিল এক হাজার ৪৩টি, তবে অনেক ঘটনায় মামলাই হচ্ছে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২৯৪ জন নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এতে ধর্ষণের শিকার ৯৬ জনের মধ্যে ৪৪ জন শিশু। জানুয়ারি মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার ৩৯ জনের মধ্যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২১টি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৮ জন। আর ফেব্রুয়ারি মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৭টি।

এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ১৭টি ও ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা দুটি। যার মধ্যে পাঁচজন প্রতিবন্ধী কিশোরী, ১৬ জন শিশু ও ১৭ জন কিশোরী রয়েছে। আর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার তিনজন কিশোরী ও ১৪ জন নারী এবং ধর্ষণের পর হত্যার শিকার দুজন নারী। এ ছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা ১৯টি, যৌন হয়রানি ২৬টি এবং শারীরিক নির্যাতনের ৩৬টি ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম কালের কণ্ঠকে বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক, সামাজিক, প্রাকৃতিক অস্থিরতার সময় নারী ও শিশুর প্রতি যৌনসন্ত্রাস বাড়ে। গণ-অভ্যুত্থানের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নাজুক নারীবিদ্বেষী প্রচারও বাড়ছে। নারীবিরোধী গোষ্ঠী আবার তৎপর হয়ে উঠেছে। এ অপরাধ প্রতিরোধে সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে।

স্ট্রিট চিলড্রেন অ্যাক্টিভিস্টস নেটওয়ার্ক (স্ক্যান) বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক, শিশু অধিকারকর্মী মনিরুজ্জামান মুকুল কালের কণ্ঠকে বলেন, শিশুদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর যে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, তা দৃশ্যমান হয়নি। ফলে সহিংসতা বাড়ছে, যা অন্যতম প্রধান উদ্বেগের বিষয়।

আছিয়া ধর্ষণের ঘটনার পর সারা দেশে তোলপাড় ও গণ-আন্দোলন শুরু হলে গত সপ্তাহে জরুরি বৈঠক করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। ওই বৈঠক থেকে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে বিদ্যমান আইন সংশোধন ও যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়।

এ বিষয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে তদন্তের সময় ৩০ থেকে কমিয়ে ১৫ দিন করা হচ্ছে। আর ধর্ষণের মামলার বিচার ১৮০ দিনের পরিবর্তে ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করা হবে। ধর্ষণের মামলায় ডিএনএ সনদ প্রয়োজন হয়। অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে সংশোধনী আনা হবে।

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ