<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন থানায় ৯৫২ জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই তালিকায় সাবেক ও বর্তমান আইজিপি থেকে শুরু করে কনস্টেবল পর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা রয়েছেন। এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মোট দুই হাজার ২০৪টি মামলা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সম্প্রতি বিভিন্ন থানায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার তথ্য নিয়ে সদর দপ্তর থেকে একটি তালিকা তৈরি করা হয়।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, বিগত সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে মরিয়া ছিলেন অনেক পুলিশ কর্মকর্তা। তাঁদের নির্দেশে এবং অনেকেই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সে সময় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়াসহ নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছেন। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষ হতাহত হয়। এমনকি মরদেহ স্তূপ করে পোড়ানোর ঘটনায়ও পুলিশ সদস্যের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের আইনের আওতায় আনা আবশ্যক।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, জনগণ যেহেতু মামলা করেছে, তাঁরা তাদের প্রতিটি অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন। এরই মধ্যে প্রতিটি মামলার তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে অবশ্যই আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শুধু বর্তমান পদধারী পুলিশ কর্মকর্তাই নন, সাবেক অনেক কর্মকর্তারও সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মামলার তালিকায় তাঁদের নামও উঠে এসেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">তালিকা অনুযায়ী, পুলিশের সাবেক ছয় আইজিপির বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় মোট ১৫৫টি মামলা হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগ থাকা বহুল সমালোচিত সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের নামে ১১টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। বাকি চার সাবেক আইজিপির মধ্যে এ কে এম শহীদুল হকের বিরুদ্ধে ২৩টি, হাসান মাহমুদ খন্দকারের বিরুদ্ধে সাতটি, জাবেদ পাটোয়ারীর বিরুদ্ধে দুটি এবং এম সানাউল হকের বিরুদ্ধে একটি মামলার তথ্য পাওয়া পাওয়া গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ছয়জন সাবেক আইজিপি ছাড়াও মামলার অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন অতিরিক্ত আইজিপি পদের ৪১ জন পুলিশ কর্মকর্তা। এর মধ্যে বর্তমানে পাঁচজন কর্মরত এবং সাবেক কর্মকর্তা ৪৬ জন। ডিআইজি পদের ২৩ জন পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে সাবেক কর্মকর্তা ২২ জন, ৪৫ জন অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার মধ্যে সাবেক দুজন, পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৬৩ জনের মধ্যে সাবেক তিনজন পুলিশ সদস্যও আসামি।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের ৫৭ জন, ৩২ জন সহকারী পুলিশ সুপার, ১৫৩ জন পরিদর্শক, ২৭৫ জন উপপরিদর্শক, ৮৯ জন এসআই (নি.), দুজন নায়েক, ১৫৭ জন কনস্টেবল ও টিআই পদমর্যাদার মো. রফিকুল ইসলামসহ পদ-পদবি উল্লেখ না থাকা আটজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p> </p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার শীর্ষে যাঁরা</span></span></span></strong></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে সবচেয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে, যিনি </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ডিবি হারুন</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black"> নামে পরিচিত। গণ-অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হয়ে কাজ করায় তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">হারুনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ১৭১টি। মামলার দিক থেকে হারুনের পরের অবস্থানে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তাঁর বিরুদ্ধে ১৫৫টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ১২৫টি এবং সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১৭টি মামলা হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি, ডিবি হারুন ছাত্রনেতাদের তুলে নিয়ে গেছেন। দমন-নিপীড়ন চালিয়েছেন। একইভাবে আন্দোলন দমনে কঠোর নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব কুমার সরকার, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ও সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমানসহ অন্যরা। যাঁরা আন্দোলন দমনে কঠোর ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের নামে বেশি মামলা হবে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এটাই স্বাভাবিক।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভুয়া মামলার বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">ভুক্তভোগী পরিবার মামলা করবে</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">—</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা গণহারে মামলার সমর্থন করি না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভুক্তভোগীদের মামলা করার অধিকারকে আমরা সম্মান জানাই।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া শাখার পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">‘</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><span style="color:black">মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। জনগণ যেহেতু মামলা করেছে, প্রতিটি মামলাই গুরুত্বপূর্ণ। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের সত্যতা অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে যদি কেউ ভিন্ন উদ্দেশ্যে মামলা করে থাকেন, সে বিষয়টিও তদন্তে উঠে আসবে। এ ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif""><span style="color:black">’</span></span></span></span></span></p> <p> </p>