<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। গত ১৬ দিনে ১৩ হাজার ৭৩৭ জন ডায়রিয়া রোগী রাজধানীর মহাখালীতে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৮৬০ জন ভর্তি হচ্ছে। সে হিসাবে প্রতি দেড় মিনিটে একজন করে রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"><img alt="শিশু রোগীদের অর্ধেকই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত" height="234" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2024/11. january/03-01-2025/99900.jpg" style="float:left" width="344" />আইসিডিডিআরবির কর্মকর্তারা জানান, আক্রান্ত রোগীদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই শিশু। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। অনেক শিশু ডায়রিয়া থেকে আক্রান্ত হচ্ছে হাইপারনেট্রেমিয়ায়। রক্তে সোডিয়ামের উচ্চ ঘনত্বকে বলা হয় হাইপারনেট্রেমিয়া। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইসিডিডিআরবির গবেষকরা বলছেন, স্যালাইনের অযাচিত ব্যবহারের ফলে হাইপারনেট্রেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। এতে শিশুর প্রচণ্ড রকম তৃষ্ণা, মস্তিষ্কের কোষ সংকুচিত হয়ে বিভ্রান্তি, খিঁচুনি ও অজ্ঞান হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দেয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাইপারনেট্রেমিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে তাঁরা বলছেন, স্যালাইন ও পানি অনুপাতের সঠিক ব্যবহার না করা, শিশুকে মাত্রাতিরিক্ত স্যালাইন খাওয়ানো এর অন্যতম কারণ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী ডা. লুবাবা শাহরিন কালের কণ্ঠকে বলেন, হাইপারনেট্রেমিয়ার লক্ষণ রয়েছে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমন ৬২৬ জন শিশুর ওপর গবেষণা করে ৯১ জনের মধ্যে রোগটি শনাক্ত করা গেছে। যারা গত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকার আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি ছিল। এসব শিশুর বয়স অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. লুবাবা শাহরিন বলেন, ব্যাকটেরিয়া বা কলেরাজনিত ডায়রিয়ার রোগীর শরীর থেকে মলের সঙ্গে যে পরিমাণ লবণ বের হয়, হাইপারনেট্রেমিয়ার ক্ষেত্রে তা হয় না। এতে রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। হাইপারনেট্রেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ সময় দেখা যায় তাদের নির্দিষ্ট অনুপাতে স্যালাইন খাওয়ানো হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইসিডিডিআরবির তথ্য মতে, এক বছরের নিচে শিশুদের মধ্যে হাইপারনেট্রেমিয়ায় আক্রান্তের হার বেশি। এ সংখ্যা সারা বছরে সাধারণ ৪ থেকে ৫ শতাংশ। গত তিন মাসে গবেষণায় ১৫ শতাংশ রোগী শনাক্ত হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ডা. লুবাবা শাহরিন বলেন, স্যালাইন একটা ওষুধ, এর যথাযথ ব্যবহার জরুরি। এ বিষয়ে সচেতনতা জরুরি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, স্যালাইন ও পানির পরিমাণ জানে না। স্যালাইন ঘন করে মেশায়। অনেকে শিশুর ফিডারের ভেতরে স্যালাইন দেয়, এতে স্যালাইন ও পানির অনুপাত কিংবা পরিমাপ কোনোটাই ঠিক থাকে না। অনেকে মনে করে, শিশু বেশি খাবে না ভেবে অল্প করে স্যালাইন গুলিয়ে খাওয়ায়। এই পদ্ধতি সঠিক নয়। স্যালাইন গুলাতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><strong><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গড়ে প্রতিদিন ভর্তি ৮৫৮ জন</span></span></strong></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভর্তি ৪৭৯ জন রোগীর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক এসেছে ঢাকার আশপাশের এলাকা থেকে। কিছু রোগী এসেছে ঢাকার বাইরে থেকে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ১৮ ডিসেম্বর ৮১৫ জন, ১৯ ডিসেম্বর ৮৭৫ জন, ২০ ডিসেম্বর ৮৫৮ জন, ২১ ডিসেম্বর ৮৯৯ জন, ২২ ডিসেম্বর ৮৭১ জন, ২৩ ডিসেম্বর ৮৯৯ জন, ২৪ ডিসেম্বর ৯৩৫ জন, ২৫ ডিসেম্বর ৯৩৯ জন, ২৬ ডিসেম্বর ৮৯৭ জন, ২৭ ডিসেম্বর ৯০৬ জন, ২৮ ডিসেম্বর ৮৯১ জন, ২৯ ডিসেম্বর ৮২৬ জন, ৩০ ডিসেম্বর ৯১৩ জন, ৩১ ডিসেম্বর ৮৮৪ জন, ১ জানুয়ারি ৮৫০ জন রোগী ভর্তি হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের এক কর্মকর্তা জানান, রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় কি না তা জানতে হাসপাতালে ভর্তি প্রতি ১০০ জনে একজনের মল পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত প্রতিবছর ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকে বছরে দুইবার। শীতে রোগীর সংখ্যা থাকে গড়ে সাত শর মতো। গরমের মৌসুমে রোগী আসে আট শর মতো। এ ছাড়া বছরে অন্যান্য সময় সাড়ে তিন শর মতো রোগী থাকে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন, দূষিত পানি পান ও ময়লা খাবার খাওয়ার কারণে শিশুরা এ রোগে আক্রান্ত হয়। সাধারণত শীতে শিশুদের এই রোগ হয়। শিশুদের ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে দ্রুত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালে ছয় মাস বয়সী শিশুদের পরিমাণ মতো খাওয়ার স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খেতে দেওয়া হচ্ছে। সাত মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের দেওয়া হচ্ছে খাওয়ার স্যালাইন, বুকের দুধ ও প্রতিদিন একটি করে বেবি জিংক। আক্রান্ত শিশুদের সুজি, খিচুড়ি, ডাব, চিড়ার পানি, ভাতের মাড়সহ অন্য খাবার খেতে দিতে হবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>