<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুমিল্লার চান্দিনা থানার নতুন ভবন নির্মাণের পর হস্তান্তর করা হয়েছে ২০২০ সালে। তবে চার বছর না যেতেই ভবনের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ছোট ছোট ফাটল, দেয়ালে ড্যাম আর খুলে পড়ছে টয়লেটের টাইলস। পুলিশ বিভাগের ১০১টি জরাজীর্ণ থানা ভবন নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণে বেরিয়ে এসেছে এ ধরনের চিত্র। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদনে (পিসিআর) এ চিত্র ফুটে উঠেছে। জননিরাপত্তা বিভাগের আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ পুলিশ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। খরচ হয়েছে ৮৬৮ কোটি ৩০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। শুরুতে প্রকল্প ব্যয় ৮১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ধরা হলেও কাজ শেষ করতে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা বেশি খরচ হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পুলিশ বিভাগের অবকাঠামো উন্নয়নে ২০১২ সালে একটি নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ওই প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ১০১টি জরাজীর্ণ থানা ভবন নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। তবে প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা বা ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়নি। ফিজিবিলিটি স্টাডি না করায় প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত সময় লেগেছে ছয় বছর। আর অতিরিক্ত খরচ করতে হয়েছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। প্রকল্প গ্রহণের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা না হলেও সমাপ্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে করা হয়েছে।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে নির্ধারিত সময়ের ছয় বছর পর কাজ শেষ হলেও প্রকল্প শেষের প্রতিবেদন (পিসিআর) দিতে সময় লেগেছে আরো তিন বছর। কিন্তু পিসিআর দেওয়ার কথা প্রকল্প শেষের তিন মাসের মধ্যে। আবার প্রকল্প শেষ হওয়ার তিন বছর পরও করা হয়নি অডিট।   </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১২ সালে শুরু হয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের জুনে। কিন্তু কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে প্রকল্পটি শেষ করা হয়েছে ২০২১ সালের জুন মাসে। তিন বছরের প্রকল্প শেষ করতে সময় লেগেছে ৯ বছর। প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের কারণ ফিজিবিলিটি স্টাডি না করা এবং ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি প্রকল্পটির পিসিআর মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএমইডি। পিসিআর মূল্যায়নে আইএমইডি কর্তৃক রাজশাহী, ঢাকা, গোপালগঞ্জ, নোয়াখালী ও কুমিল্লা জেলার প্রকল্প এলাকা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইএমইডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হলেও প্রকল্প গ্রহণের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়নি। যদিও ৫০ কোটি টাকার বেশি অর্থায়নের প্রকল্পে ফিজিবিলিটি স্টাডি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা না করায় প্রকল্পটির বাস্তবায়নে সময় লেগেছে ৯ বছর। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ৯ বছর সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নে আটজন প্রকল্প পরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। যদিও ৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ের প্রকল্পের জন্য একজন অভিজ্ঞ ও নিয়মিত প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ করার নির্দেশনা রয়েছে। এই প্রকল্পে সেই নির্দেশনা অনুসরণ করা হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইএমইডির প্রতিবেদন বলছে, প্রকল্প সমাপ্তির তিন মাসের মধ্যে সমাপ্তি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও এ ক্ষেত্রে সময় লেগেছে তিন বছর। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আর্থিক শৃঙ্ক্ষলা বজায় রাখতে অডিটের কথা বলা হলেও এই প্রকল্পটিতে তা করা হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিসিআরের তথ্য মতে এখনো অডিট সম্পন্ন হয়নি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পটি বাস্তবায়নে নানা অসংগতির পাশাপাশি থানা ভবন নির্মাণেও দুর্বলতা পাওয়া গেছে। আইএমইডির প্রতিবেদনে কুমিল্লার চান্দিনা থানার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে ছয় কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে পাঁচতলা ভীতসহ চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে পরিদর্শনের সময় দেখা গেছে, ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ফাটল। ভবনটির চতুর্থতলার টয়লেটের টাইলস খুলে পড়েছে। এ ছাড়া ভবনের ভেতরে কয়েকটি ফ্লোরের দেয়ালে ড্যাম তৈরি হয়েছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সচিব মামুন আল রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্প প্রণয়নের আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা আবশ্যক। তবে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্বের পেছনে শুধু ফিজিবিলিটি স্টাডি না করাকে দায়ী করা যাবে না। কারণ এ ধরনের ভবনের নকশা বা নির্মাণকাজ প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে ফিজিবিলিটি স্টাডির কারণে এত বিলম্ব হওয়ার কথা না। বিলম্বের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। এ ছাড়া সময়মতো পিসিআর না দেওয়া এবং অডিট না করার বিষয়টির জন্য বাস্তবায়নকারীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>