<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২২০০ শয্যার চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ইনডোরে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা নেয়। আউটডোরেও দৈনিক কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসাসেবা নেয়। অনেক রোগীর এমআরআই পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। অথচ চট্টগ্রাম বিভাগে বিশেষায়িত একমাত্র সরকারি এই হাসপাতালে বর্তমানে এমআরআই মেশিন নেই। দুটি এমআরআই মেশিন থাকলেও একটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে, অন্যটি আড়াই বছর ধরে অকেজো।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুটি সিটি স্ক্যানের একটি সচল এবং বাকিটি পরিত্যক্ত। ফুসফুসের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় বংকোস্কোপির দুটি মেশিন থাকলেও বর্তমানে দুটিই অকেজো। সর্বশেষ মেশিনটিতে পরীক্ষা বন্ধ হয় গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে রোগীদের নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ৩০টি ভারী যন্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি সচল এবং ১৬টি অকেজো। অকেজো যন্ত্রগুলোর মধ্যে চারটি ভারী মেশিনকে সম্প্রতি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আরো দুটি মেশিন পরিত্যক্ত ঘোষণার তালিকায় রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অকেজো অবস্থায় থাকা ১৬টি ভারী যন্ত্রের পাশাপাশি আরো ২৫১টি চিকিৎসা যন্ত্রপাতিও অচল অবস্থায় পড়ে আছে। সব মিলে চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে এখন ২৬৭টি চিকিৎসা সরঞ্জাম অকেজো। অনেক রোগীকে বাধ্য হয়ে বাইরের বেশি দামের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চমেক হাসপাতালের ১৮ নম্বর নিউরোলজি ওয়ার্ডে গিয়ে রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশির ভাগ রোগী এমআরআই ও সিটি স্ক্যান পরীক্ষা করিয়েছে বাইরে থেকে। ৬৭ নম্বর শয্যায় চিকিৎসাধীন ইয়াসিন নামের এক কিশোরের মা চেমন আরা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ৩১ ডিসেম্বর ছেলেকে ভর্তি করেছি এই ওয়ার্ডে। এমআরআই পরীক্ষা বাইরে থেকে আট হাজার ১০০ টাকায় করিয়েছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, এমআরআই মেশিন চালু থাকলে তিন হাজার থেকে চার হাজার টাকায় এই পরীক্ষা করা যেত। বেসরকারিতে এই পরীক্ষা প্রতিষ্ঠানভেদে পাঁচ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একই দিন সকাল সোয়া ৯টায় রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সিটি স্ক্যান রুমের (৮ নম্বর) সামনে অপেক্ষা করছে বেশ কয়েকজন রোগী ও তাদের স্বজন। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীর কালীপুর এলাকা থেকে ভর্তি হওয়া নুরজাহান বেগম (৭৩) নামের এক রোগীর ছেলে হাবিবুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাথায় ইনফেকশন নিয়ে গতকাল (সোমবার) সকালে চমেক হাসপাতালের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে (সার্জারি) মাকে ভর্তি করিয়েছি। দুই হাজার টাকা দিয়ে পরীক্ষা করাচ্ছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চমেক হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করানোর কাজে নিয়োজিত এক টেকনিশিয়ান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৭০ থেকে ৯০টি সিটি স্ক্যান করাচ্ছি। এখানে দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকায় যে সিটি স্ক্যান করা যায়, তা প্রাইভেটে নেওয়া হচ্ছে পাঁচ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। আমাদের আরো দুটি সিটি স্ক্যান মেশিন এবং কিছু লোকবল নিয়োগ দিলে রোগীদের খুব একটা বাইরে যেতে হবে না এবং তাদের চিকিৎসা খরচ অনেক কমে আসবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, চমেক হাসপাতালে দুটি বংকোস্কোপি মেশিনে সপ্তাহে ৩০টি পরীক্ষা করা যেত। এখন দুটি মেশিনই নষ্ট। এই পরীক্ষায় সরকারি ফি এক হাজার টাকা। বাইরে নিচ্ছে তিন হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন তাঁর কার্যালয়ে কালের কণ্ঠকে বলেন, অকেজো এমআরআই মেশিনটি মেরামত করতে সাত কোটি টাকা চাওয়া হচ্ছে। অথচ নতুন একটি মেশিন কিনলে তাতে ১৭ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তাই বিষয়টি নিয়ে কী করা যায় তা চিন্তা-ভাবনা চলছে। এ ছাড়া আরো যেসব চিকিৎসা সরঞ্জাম চালু নেই, সেগুলোর মধ্যে যেসব মেরামত করা যাবে সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও লোকবল সংকটের মধ্যেও আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আরো নানা ধরনের নতুন চিকিৎসা যন্ত্রপাতি আসছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সূত্রে জানা যায়, অকেজো ভারী চিকিৎসা যন্ত্রপাতি ছাড়া অন্য ২৫১টি অচল যন্ত্রপাতি মেরামতের জন্য সম্প্রতি প্রায় এক কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ভারী ১৬টি যন্ত্রের মধ্যে যেগুলো মেরামতযোগ্য সেগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দেবে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চমেক হাসপাতালে অকেজো ভারী চিকিৎসা যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে সিটি স্ক্যান মেশিন একটি, এমআরআই দুটি, এনজিওগ্রাম দুটি, মেমোগ্রাফি একটি, ইএসডব্লিউএল মেশিন একটি, ইনসাইনিরেটর একটি, আলট্রাসাউন্ড মেশিন দুটি, এক্স-রে মেশিন তিনটি, এক্সিমার লেজার একটি ও বংকোস্কোপি মেশিন দুটি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>