<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভেতরে অথবা পাশে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঘর পাওয়া উপকারভোগীদের মধ্যে বেশির ভাগই ঘরে না থেকে অন্যত্র চলে গেছেন। শুধু তাই নয়, এসব ঘর হস্তান্তর করার নিয়ম না থাকলেও অনেকেই নিজের পাওয়া ঘর অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভেতর এক শ্রেণির দালালদের মাধ্যমে বেচে দূরে কোথাও চলে যাচ্ছেন তাঁরা। কোনো কোনো উপকারভোগী এসব ঘরে এক দিনও থাকেননি বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যাঁদের ঘরবাড়ি আছে তাঁদেরই এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়ায় এমন অবস্থা হচ্ছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া অল্প দিনের মধ্যে অনেক ঘরের দেয়াল ফেটে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রশাসনের দাবি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের যাচাই-বাছাইয়ের পর ভূমিহীনদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মূলত কর্মসংস্থান না থাকার কারণে সংসারের খরচ জোগাতে অনেকে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ভূমিহীনদের ঘর উপহার দেওয়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প মোতাবেক কালিয়াকৈর উপজেলার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি ধাপে ৪৪৫টি ঘর নির্মাণ করা হয়। পরে ঘরগুলো উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভূমিহীনদের কাছে দলিলসহ হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বেশির ভাগই ঘরই তালাবদ্ধ। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকা কয়েকজন লোক বলেন, যাঁদের এসব ঘর দেওয়া হয়েছে তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখনো এখানে আসেননি। এই সুযোগে আশ্রয়ণ প্রকল্পের দালালচক্র খালি ঘরগুলোতে টাকার বিনিময়ে অন্য লোক উঠিয়ে দিচ্ছে। ঘরগুলো বেচার নিয়ম না থাকলেও দালালচক্রের মাধ্যমে ঘরগুলো বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সোমবার উপজেলার সোলাহাটি এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ তে গিয়ে দেখা যায়, লাল-নীল রঙের টিন দিয়ে সারি সারি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পে ১৬৪ অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের বসবাস করার কথা থাকলেও সেখানে বসবাস করে মাত্র ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার। আবার অনেকে ঘর পেয়েও বিক্রি করে দিয়েছেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পাকা ঘরগুলোর একেকটির নির্মাণ খরচ দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা। এই ঘর হস্তান্তরের নিয়ম না থাকলেও তা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৭০ হাজার টাকায়। কথা হয় ১১১ নম্বর ঘরে থাকা শওকত হোসেনের সঙ্গে। সাইন বোর্ডে বুলি বেগমের নাম থাকলেও ভেতরে বসে আছেন শওকত হোসেন। তিনি বলেন, ঘরটি আমি ৭০ হাজার টাকায় কিনেছি। ১০৬ নম্বর ঘরের মালিক বিদেশ চলে গেছেন। ওই ঘরে অন্য এক লোককে বসিয়েছে দালালচক্র। কথা হয় ১১৮ নম্বর ঘরে থাকা আবুবকরের সঙ্গে। তিনি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমার সামনে যে পাঁচটি ঘর রয়েছে ওই ঘরে কেউ থাকে না। আমি শুরু থেকে আছি। কিন্তু ওই সব ঘরে কোনো লোক এখনো দেখিনি। শুনেছি তাদের নাকি আরো বাড়িঘর আছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">৮৩ নং ঘরটির মালিক মামুন। কিন্তু ওই ঘরে মামুন না থেকে থাকছে হুমায়ুন কবির নামে এক লোক। প্রকল্পের ১৬৪টি ঘরের মধ্যে অনেক ঘরের সাইন বোর্ড খুলে রাখা হয়েছে। ওই সব ঘরে প্রকৃত মালিকের পরিবর্তে অন্যলোক থাকে। ১০১ নং ঘরটি তাহেরা আক্তারের কিন্তু ঘরে থাকছেন নাছিমা। ১৫৯ নং ঘরের রুহুল আমীন বলেন, প্রকৃত ভূমিহীনদের ঘর দেওয়া হয়নি। ৮৯ নং ঘরে বসবাস করা মিঠুন নামের এক লোক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এমনও লোককে ঘর দেওয়া দিছে তারা মাঝে মধ্যে এখানে প্রাইভেটকার নিয়ে আসে। বেশি কথা কওন জাইব না। বুঝেনতো আপনারা চলে যাওয়ার পর আমার কি অবস্থা হবে। তার পরও বল্লাম।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঘর পাওয়া একজন মোবাইল ফোনে বলেন, ভাই আমার বাড়ি শ্রীফলতলী। আমাকে ঘর দেওয়া হয়েছে মধ্যপাড়ায়। এখানে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে কি খাব। তাই কষ্ট করে বাড়িতে থেকেই কাজ করি। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহাম্মেদ বলেন, যারা আম্রয়ন প্রকল্পের ঘর বিক্রি বা হস্তান্তর করেছে, তা যাচাই বাছাই শেষে তাদের ঘরগুলো বাতিল করে, যারা এখনে নিয়মিত থাকবে, তাদের দেওয়া হবে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>