টেকনাফে ‘মানবপাচারের ডেরা’

পুলিশের অভিযানে বন্দিশালা থেকে ১৫ জন উদ্ধার, আটক ২

বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
বিশেষ প্রতিনিধি, কক্সবাজার
শেয়ার
পুলিশের অভিযানে বন্দিশালা থেকে ১৫ জন উদ্ধার, আটক ২

কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় মানবপাচারকারীদের একটি বন্দিশালা থেকে ছয় শিশুসহ ১৫ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় বন্দিশালার পাহারাদার হিসেবে কর্মরত দুজনকে আটক করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সীমান্তের উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া গ্রামে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী সাঁড়াশি অভিযান চালানো হয়। পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।

আটক হওয়া দুজন হলেন কচ্ছপিয়া গ্রামের করাচিপাড়ার দুই ভাই মোহাম্মদ হারুন (২৫) ও নূর মোহাম্মদ (১৯)।

গত বুধবার থেকে গতকাল পর্যন্ত কালের কণ্ঠের মুদ্রণ, অনলাইন ও ডিজিটাল মাধ্যমে টেকনাফ সীমান্তের মানবপাচারবিষয়ক ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশিত ও প্রচার হয়।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহম্মদ রহমত উল্লাহ কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে টেকনাফ থানার একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে বন্দিশালায় মুক্তিপণ আদায়ের জন্য বন্দি রাখা লোকজনকে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে পুলিশ দুজন চিহ্নিত মানবপাচারকারীকে আটক করেছে।

উদ্ধার হওয়া ছয় শিশুসহ ১৫ জনের মধ্যে ১০ জন রোহিঙ্গা ও পাঁচজন বাংলাদেশি। মানবপাচারকারীরা প্রলোভন দিয়ে তাঁদের মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ওই বন্দিশালায় এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আটক করে রেখেছিল।

পুলিশ সুপার জানান, মানবপাচার রোধে টেকনাফ থানার পুলিশ শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। বাহারছড়া ইউনিয়নের ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডসংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় পুলিশ ড্রোন নিয়ে অভিযান চালায়।

এক পর্যায়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কচ্ছপিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলামের বাড়ির পেছনে পাহাড়ের পাদদেশে মানবপাচারকারীদের একটি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। সেই আস্তানার আশপাশে রয়েছে পাচারকারীদের অনেকগুলো বন্দিশালা। এসব বন্দিশালায় মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দিয়ে দেশের নানা প্রান্তের লোকজনকে সংগ্রহ করে আটকে রাখা হয়। এ রকমই একটি বন্দিশালা থেকে গতকাল ১৫ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযানকালে অন্য পাচারকারীরা গাঢাকা দেয়।

অভিযান পরিচালনাকারী পুলিশের সঙ্গে থাকা স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগীরা তাত্ক্ষণিক পুলিশকে জানান, তাঁরা ৪০ জন আটক ছিলেন। পুলিশের অভিযান শুরু হলে মানবপাচারকারীদের দলনেতা কচ্ছপিয়া গ্রামের বাসিন্দা কেফায়েত তাঁর বন্দিশালার তালা খুলে দেন। তখন আটক থাকা লোকজন পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ভয়ে পালিয়ে যান।

উদ্ধার ব্যক্তিরা জানান, মানবপাচারে অভিযুক্ত কেফায়েতের তিনটি বন্দিশালা রয়েছে। উদ্ধার হওয়াদের ১৫ থেকে ১৭ দিন ধরে এসব বন্দিশালায় আটকে রাখা হয়েছিল। তাঁদের নির্যাতন করা হতো। নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা আদায় করে আসছিল পাচারকারীরা।

মন্তব্য

সম্পর্কিত খবর

মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে গুলিতে নিহত ২

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
শেয়ার
মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে গুলিতে নিহত ২

মুন্সীগঞ্জের মেঘনা নদীর কালিরচর-মহনপুর এলাকায় বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে দুজন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন। নিহত দুজন হলেন রিফা (২৬) ও রাসেল ফকির (২৮)। রিফা মতলব উত্তরের বাসিন্দা এবং রাসেল মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ভাসানচন গ্রামের আলম ফকিরের ছেলে।

আহত আইয়ুব আলী (৩৫) মাদারীপুর জেলার শিবচর এলাকার মান্নান হাওলাদারের ছেলে বলে জানা গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মুন্সীগঞ্জের মোহনপুর চর আব্দুল্লাহপুর মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কিবরিয়া বাহিনীর লোকজন মুন্সীগঞ্জ-মোহনপুর সীমানায় চর বাংলাবাজার এলাকায় ২৫-২৬টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে। এ নিয়ে স্থানীয়রা বারবার নিষেধ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি।

গতকাল সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা কিবরিয়া বাহিনীর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করতে গেলে কিবরিয়া বাহিনীর সশস্ত্র সদস্য জনি, জসিম দেওয়ান ও মিছির বেপারী তাদের ধাওয়া দিয়ে গুলি করে। এতে ট্রলার ও স্পিডবোটে থাকা রিফাত ও রাসেল এবং স্পিডবোটচালক আইয়ুব আলী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে রিফাত ও রাসেলের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত আইয়ুব আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জেলা হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান বলেন, যাঁরা মারা গেছেন তাঁদের দেহে গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে। হাসপাতালে পুলিশ আসছে। তারা সুরতহাল করছে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম বলেন, রিফাত ও রাসেল নামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বালু উত্তোলন নিয়ে দ্বন্দ্বে এই ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

মন্তব্য

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ

শেয়ার
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলামকে কুপিয়ে হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে গতকাল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দনিয়া কলেজের শিক্ষার্থীরা। এতে ওই পথে তীব্র যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রী ও পথচারীদের। ছবি : কালের কণ্ঠ
মন্তব্য

এস আলমের ৩৬৮ কোটি টাকার জমি জব্দের আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক
শেয়ার
এস আলমের ৩৬৮ কোটি টাকার জমি জব্দের আদেশ

ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম) এবং তাঁর পরিবারের নামে থাকা ১৭৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দেন। জব্দ করা জমির বাজারমূল্য ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা।

জব্দ করা সম্পদ হলো চট্টগ্রামের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ০.১৬৩৭ একর জমি, যার বাজারমূল্য এক কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

একই ওয়ার্ডে এক কোটি ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ০.১৩৫০ জমি। চট্টগ্রামের ১ নম্বর পাথরঘাটা ইউনিয়নে ৮.৫০ শতাংশ জমি (মালিক এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস আলম), বাজারমূল্য তিন কোটি ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকা। একই ইউনিয়নে ০.৯০ একর জমি, বাজারমূল্য ৩৭ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। একই ইউনিয়নে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ১.২০ একর জমি।
এস আলম কোল্ড স্টিল লিমিটেডের নামে ৩০ হাজার টাকা মূল্যের পটিয়া উপজেলায় ০.০৬ একর জমি। পটিয়ার শিকলবাহা ইউনিয়নে ২১ লাখ টাকা মূল্যের জমি। একই এলাকায় ১৪ লাখ টাকা মূল্যের ০.২৮ একর জমি, ২১ লাখ টাকা মূল্যের ০.৪১৫০ একর জমি, ১৩ লাখ টাকা মূল্যের ০.২৬ একর জমি, ১৬ লাখ টাকা মূল্যের ০.৩২ একর জমি, ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ০.৮০ একর জমি, ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ০.১৪ একর জমি, ৩০ হাজার টাকা মূল্যের ০.৬ একর জমি, ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ০.১৮৫০ একর জমি, তিন লাখ টাকা মূল্যের ০.০৬ একর জমি, সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ০.১৫ একর জমি, ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ০.৫৭৫০ একর জমি, ৬০ হাজার টাকা মূল্যের ০.১২ একর জমি এবং ১২ হাজার টাকা মূল্যের ০.০৫ একর জমি।

নারায়ণগঞ্জে স্যাভোলা অয়েল লিমিটেডের ১.৩৮৫০ একর জমি এবং দুই হাজার বর্গফুটের আধাপাকা গৃহ, বাজারমূল্য ১২ কোটি ১৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

একই প্রতিষ্ঠানের দুই একর জমি, বাজারমূল্য সাত কোটি ৭০ লাখ টাকা। এক কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার টাকা মূল্যের ০.৩৬৩৬ একর জমি, এক কোটি ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা মূল্যের ০.৩৪৬৯ একর জমি, ছয় কোটি আট লাখ ৯ হাজার টাকা মূল্যের ১.৮২৪৩ একর জমি। ১২ কোটি ৭৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকা মূল্যের ৩.৮২৬৪ একর জমি। সাত কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা মূল্যের ২.১৮৮৯ একর জমি।

ডেল্টা অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের ১.২১৫০ একর জমি এবং এক হাজার ৫০০ বর্গফুটের পাকা গৃহ, বাজারমূল্য সাত কোটি ২৯ লাখ ৬৩ হাজার টাকা।

এক কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ০.১৭ একর এবং ৫০০ বর্গফুটের আধাপাকা গৃহ, ৭৩ লাখ টাকা মূল্যের ০.৩৬৫০ একর জমি। ছয় কোটি ২৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ১.৬৩৫০ একর জমি।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কেশবপুরে দুই লাখ ৮৪ হাজার টাকা মূল্যের ১.৮৯ একর জমি। দুই লাখ ৩৭ হাজার টাকা মূল্যের ১.৪৬ একর জমি। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানার শিকলবাহা এলাকার ৯.৪৩ একর জমি, বাজারমূল্য ১৫৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। একই এলাকায় ৮২ কোটি ছয় লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ৯.৪৩ একর জমি। 

সাইফুল আলমের নামে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর শিকলবাহায় পাঁচ লাখ টাকা মূল্যের ৪.৭০৭ একর জমি। ঢাকার গুলশানে দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ১০ কাঠা জমি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তেজতুরি বাজারে ৫৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা মূল্যের ৯০.৮৮ শতাংশ জমি এবং তিন হাজার বর্গফুটের একতলা দালান। ধানমণ্ডিতে এক বিঘা জমি।

গত ৭ অক্টোবর এস আলম, তাঁর স্ত্রী, সন্তান, ভাইসহ পরিবারের ১২ সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।

 

মন্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রে প্লেন-কপ্টার সংঘর্ষে সব আরোহীর মৃত্যুর শঙ্কা

কালের কণ্ঠ ডেস্ক
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার
যুক্তরাষ্ট্রে প্লেন-কপ্টার সংঘর্ষে সব আরোহীর মৃত্যুর শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে মাঝ আকাশে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ও সামরিক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষের পর নদীতে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় কমপক্ষে ২৮ জনের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বছর পর কোনো যাত্রীবাহী বিমান দুর্ঘটনার শিকার হলো। দুর্ঘটনার শিকার উড়োজাহাজের ৬৪ আরোহী ও হেলিকপ্টারের তিন সেনার কেউই বেঁচে নেই বলে মনে করা হচ্ছে।

বুধবার রাতে রোনাল্ড রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল এয়ারপোর্টের কাছে মাঝ আকাশে আমেরিকান এয়ারলাইনসের একটি অভ্যন্তরীণ যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সঙ্গে মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টারের সংঘর্ষ হয়।

পরে উড়োজাহাজ ও হেলিকপ্টারটি হিমশীতল পটোম্যাক নদীতে বিধ্বস্ত হয়।

আমেরিকান এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, উড়োজাহাজটিতে ৬৪ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে ৬০ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু। আর এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, হেলিকপ্টারটিতে তিন সেনা ছিলেন।

সামরিক হেলিকপ্টারটি প্রশিক্ষণ ফ্লাইট ছিল।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারির পর যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে কোনো প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেনি। এর আগে ১৯৮২ সালে পটোম্যাক নদীর ওপর ফোরটিনথ স্ট্রিট ব্রিজে এয়ার ফ্লোরিডা ফ্লাইট ৯০ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এই ঘটনায় ৭০ জন যাত্রী এবং চারজন ক্রু নিহত হন।

শুধু চার যাত্রী এবং একজন ক্রু বেঁচে গিয়েছিলেন।

হেলিকপ্টারটিকে বার্তা পাঠানো হয়েছিল

সংঘর্ষ হওয়ার আগে হেলিকপ্টারটিকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছিল। এয়ার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারের পাইলটের কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে আমেরিকান এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটিকে দেখা যাচ্ছে কি না। নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে হেলিকপ্টারের পাইলটের উদ্দেশে বলা হয়, পিএটি টু-ফাইভ, আপনি কি সিআরজে উড়োজাহাজটিকে দেখতে পাচ্ছেন? এরপর নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে আবারও বলা হয়, পিএটি টু-ফাইভ, সিআরজে উড়োজাহাজের পেছন দিক দিয়ে পার হোন।

সংঘর্ষের আগ মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণকক্ষের আরেকটি অডিওতে হেলিকপ্টারের পাইলটকে বলতে শোনা যায় উড়োজাহাজটিকে দেখতে পেয়েছি পিএটি টু-ফাইভ, ভিজ্যুয়াল সেপারেশনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

এরপর ১৩ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে অডিওতে হাঁপানোর মতো কিছু শব্দ শোনা যায়। জোরে ওহ বলে একটি শব্দও শোনা গেছে। বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ওই শব্দগুলো ধারণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অডিওটিতে অন্য একটি উড়োজাহাজের পাইলটের কথাও শোনা গেছে, যিনি ওই সংঘর্ষ ও বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনাটি দেখেছেন এবং নিয়ন্ত্রণকক্ষকে নিশ্চিত করেছেন। আরেক পাইলটকে বলতে শোনা গেছে, হ্যাঁ, আমরা রানওয়ের কাছে ছিলাম এবং পটোম্যাক নদীর অপর পাশে আগুনের শিখা দেখেছি।

ওয়াশিংটনের প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা

মোমবাতির ঝলকানির মতো কিছু একটা আকাশে দেখেছিলেন অ্যারি শুলম্যান। জর্জ ওয়াশিংটন পার্কওয়ে ধরে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। রিগ্যান ওয়াশিংটন ন্যাশনাল বিমানবন্দরের পাশ দিয়ে গেছে এই রাস্তা।

শুলম্যান বলেন, দেখে সব কিছু স্বাভাবিকই মনে হচ্ছিল। উড়োজাহাজটি ঠিকমতো নেমে আসছিল, কোনো ত্রুটি ছিল না। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই পেছনে ফিরে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায় শুলম্যানের। তিনি বলেন, আমি পেছনে ফিরে দেখি কিছুই আর ঠিকঠাক নেই। উড়োজাহাজটি দেখে মনে হচ্ছিল সেটি ডানদিকে বেঁকে যাচ্ছে। সম্ভবত ৯০ ডিগ্রি। আমি উড়োজাহাজের নিচের অংশ দেখতে পাচ্ছিলাম। বাইরে খুব, খুবই অন্ধকার ছিল। তাই উড়োজাহাজের নিচের অংশ ভালোমতো দেখতে পাওয়ার কথা না। তিনি আরো বলেন, উড়োজাহাজটির নিচের অংশে উজ্জ্বল হলুদ আলো দেখা যাচ্ছিল। নিচ থেকে স্ফূলিঙ্গ বেরিয়ে আসছিল। সূত্র : সিবিএস, রয়টার্স, সিএনএন

 

মন্তব্য

সর্বশেষ সংবাদ