বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে যেসব কবি কলম ধরেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন কবি চন্দ্রাবতী। তিনি পনেরো শতকের শেষভাগে বর্তমান কিশোরগঞ্জ জেলার নীলগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা দ্বিজ বংশীদাস, ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যের স্রষ্টা ছিলেন। চন্দ্রাবতী ভালোবাসতেন গ্রামের এক যুবক জয়ানন্দকে।
তবে জয়ানন্দ পরে ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলমান হয়ে এক কাজির মেয়েকে বিয়ে করেন। এই সংবাদে চন্দ্রাবতী গভীরভাবে ভেঙে পড়েন। তাঁর এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে বাবা তাঁর জন্য নরসুন্দা নদীর পারে একটি মন্দির নির্মাণ করেন। এর পর থেকে চন্দ্রাবতী পূজায় লিপ্ত থাকতেন এবং বিয়ে করেননি।
কালের বিবর্তনে নরসুন্দা নদী মৃতপ্রায় হয়ে গেলে কবি চন্দ্রাবতীর বাড়ির অবস্থাও জীর্ণ হয়ে পড়ে। দোতলা বাড়িটির ওপরের অংশ ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। নিচতলায় কিছু লোক বাস করলেও সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
বাংলা সাহিত্যের একজন ছাত্র হিসেবে যখন আমি সেই বাড়িটি দেখতে যাই, তখন দেখতে পাই বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবির স্মৃতিচিহ্ন আজ বিলুপ্তির পথে।
স্থানীয় প্রশাসনেরও এ বিষয়ে তেমন কোনো উদ্যোগ নেই বলে মনে হয়।
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি এবং রামায়ণের প্রথম মহিলা অনুবাদক চন্দ্রাবতীর বাড়িটির সংরক্ষণ এবং সংস্কারকাজ শুরু করার জন্য প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাই।
মাহিব মোস্তাকিম
শিক্ষার্থী, ঢাকা কলেজ, ঢাকা