<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রাম ও শহরাঞ্চলে নারীর ওপর নির্যাতন, পারিবারিক সহিংসতা কিংবা হত্যার মতো ঘটনাগুলোর পেছনে বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে যৌতুক। পারিবারিক সহিসংতার ঘটনা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যৌতুককে কেন্দ্র করেই ঘটে বলে জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মীরা। সহিংসতা কিংবা নিপীড়নের ঘটনা বাড়লেও প্রতিরোধে সরকারি, বেসরকারি ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বরাবরই ঢিলেঢালা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ছয়জন, মারা গেছেন দুজন। আর গত বছর যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছেন ৮১ জন। যৌতুকের কারণে অত্যাচার সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন সাতজন নারী। মোট নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮৩ জন। মামলা হয়েছে ১৩১টি। এ ছাড়া গত বছর পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৫২০ জন নারী। এর মধ্যে স্বামীর হাতে হত্যার শিকার হয়েছেন ২২৪ জন। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২৩৮টি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাবে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে যৌতুকের কারণে ১৩ জন নির্যাতন ও পাঁচজন হত্যার শিকার হয়েছেন। পারিবারিক সহিংসতার বেশির ভাগ ঘটনা যৌতুকসংশ্লিষ্ট। তবে বেশির ভাগ ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে না বলে জানায় সংগঠনগুলো।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২০ সালের নভেম্বরে ৩১ সদস্যের নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ এবং যৌতুকবিরোধী জাতীয় কার্যক্রম পরিচালনাসংক্রান্ত আন্ত মন্ত্রণালয় সমন্বয় কমিটি গঠনের পরিপত্র জারি করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। কমিটির কার্যপরিধিতে রয়েছে সারা দেশে যৌতুকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ার যাবতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন; যৌতুক নির্যাতন বন্ধে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ, গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও মনিটরিং; যৌতুক নিরোধ আইন ১৯৮০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম গ্রহণে পরামর্শ প্রদান; যৌতুকের বিরুদ্ধে দায়ের অভিযোগ, মামলা, নিষ্পত্তি মামলার সংখ্যা, মামলাভিত্তিক শাস্তির বিবরণ সংগ্রহ, পর্যালোচনা ও দিকনির্দেশনা প্রদান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় কমিটির সদস্য বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু কালের কণ্ঠকে বলেন, কমিটি গঠনের পর থেকে একবার মিটিং হয়েছে। সেটা ২০২২ সালের শেষে। এরপর আর কোনো আপডেট নেই। কমিটির সভা বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকেও কিছু জানানো হয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাবিনা ফেরদৌস কালের কণ্ঠকে বলেন, কমিটি গঠনের পর ২০২২ সালের নভেম্বরে একটিমাত্র মিটিং হয়েছে। প্রথম দুই বছর করোনার কারণে মিটিং হয়নি। কমিটি সম্পর্কে তিনি এর বেশি জানাতে পারবেন না বলে জানান।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রণালয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে ১০৯টি কল সেন্টারে যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীদের সেবা দেওয়া হয়। ১০৯টি কর্তৃপক্ষ জানায়, যৌতুকের কারণে মারধরের শিকার হলে ভুক্তভোগীর বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে উদ্ধার ও আইনি সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া যৌতুকের কারণে অত্যাচারের শিকার ভুক্তভোগীকে কাউন্সিলিং করানো হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নারী নির্যাতন প্রতিরোধে মাল্টিসেক্টোরাল প্রগ্রামের উদ্যোগে ২০০৯ সাল থেকে কাজ করছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সিলিং সেন্টার। এখানে যৌতুক কিংবা যেকোনো সহিংসতার শিকার নারীদের মনো-সামাজিক কাউন্সিলিং সেবা দেওয়া হয়। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ বছরে সেখানে সেবা নিয়েছে মাত্র দুই হাজার নারী ও শিশু। অর্থাৎ গড়ে প্রতিমাসে একজনের কম ভুক্তভোগী সেবা নিয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা যায়, সারা দেশে চার হাজার ৮৮৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবে যৌতুকের কুফল সম্পর্কে কিশোর-কিশোরীদের সচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে এসব কার্যক্রমে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন মানবাধিকারকর্মীরা। আসকের পরিচালক নীনা গোস্বামী কালের কণ্ঠকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের গ্রাম পর্যায়ে মিটিংগুলোই হয় না। বাল্যবিবাহসহ যৌতুক নির্যাতনের বিরুদ্ধে যেসব কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেগুলোই তো কাজ করে না। আর এখন যৌতুক দাবি করার নিয়মই বদলে গেছে। যৌতুক লাগবে বলেই এখন কেউ নির্যাতন করা শুরু করে দেয় না। নিম্নবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত পরিবারে কেউ বিয়েতে যৌতুক চায় না।</span></span></p>