<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শ্রদ্ধা-ভালোবাসা নিয়ে সমাহিত হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রিয় অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। সিঙ্গাপুর থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁর মরদেহ নিয়ে ঢাকায় ফেরে স্বজনরা। এরপর যেসব জায়গায় তাঁর অবাধ বিচরণ ছিল, সেসব জায়গায় তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সবখানে সাধারণ দিনমজুর থেকে শুরু করে রাজনীতি ও শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের মানুষরা চিরদিনের জন্য বিদায় জানায় তাঁকে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সকাল ৮টায় ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায় ফারুকের মরদেহ। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর উত্তরার বাসায়। দুপুর পৌনে ১২টায় মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের অপেক্ষা করছিলেন তাঁর গুণমুগ্ধ দর্শক, রাজনীতি ও অভিনয় জগতের সহকর্মী, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীসহ নানা শেণি-পেশার মানুষ। জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ এ সময় মনে করিয়ে দেন, এই শহীদ মিনারে এর আগে বহুবার এসেছেন ফারুক, এবার জাতির ফুলেল শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে চিরবিদায় নিতে এসেছেন প্রিয় নায়ক, সবার ‘মিয়াভাই’। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে লে. কর্নেল সৈয়দ মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান সংসদ সচিবালয়ের সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস এম এম নাঈম রহমান। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের নেতারা শ্রদ্ধা জানান। এ সময় ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘চিত্রনায়ক ফারুক ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি অবিচল ও অনড় পাথরের মতো। তিনি তাঁর আদর্শ থেকে কখনো একচুলও ছাড় দেননি।’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শহীদ মিনারে ফারুকের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান। এ ছাড়া বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন, আরটিভি পরিবার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ, ঢাকা জেলা প্রশাসক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বাংলাদেশ গণসংগীত সমন্বয় পরিষদ, ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তি ও সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধায় সিক্ত হন নায়ক ফারুক। ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, মিশা সওদাগর, নিপুণ, জায়েদ খানসহ আরো অনেকে কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহীদ মিনার থেকে মরদেহ বহনকারী গাড়িটি ছুটে চলে তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। এখানে উপস্থিত হয়েছিলেন দীর্ঘদিনের সহকর্মী আলমগীর, সুচন্দা, রোজিনা, অঞ্জনা, নাঈম, ডিপজল, কাজী হায়াৎ, ওমর সানি, রুবেল, নিরব, বাপ্পীসহ চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। দুপুর পৌনে ২টায় জানাজা শেষে অশ্রুসজল চোখে ফারুককে বিদায় জানান তাঁরা। এফডিসি থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে। বিকেল পৌনে ৩টায় চ্যানেল আইয়ের কার্যালয়ের সামনে নায়ক ফারুকের আরেক দফা জানাজা হয়। এর আগে শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চ্যানেল আই প্রাঙ্গণ থেকে ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর নির্বাচনী এলাকা গুলশানে আজাদ মসজিদে। আসরের নামাজের পর আরেকবার জানাজা শেষে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের কালীগঞ্জের দিকে রওনা দেয় লাশবাহী গাড়ি। সেখানে পৌঁছানোর পর সোম টিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদসংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে তাঁর সর্বশেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বাবা আজগর হোসেন পাঠানের কবরের পাশে শায়িত করা হয় গত শতকের সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ফারুককে।</span></span></span></span></p>