নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বৈঠক আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১১টা ১৫ মিনিটে গণভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।
অর্থ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর এই বৈঠকে দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
বিষয় দুটি হলো—রপ্তানি পণ্যের জন্য নগদ প্রণোদনা ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পেনশন ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, আলোচ্যসূচিতে অনেক বিষয় থাকে। তবে এ বিষয়ে এখন কিছু বলব না। পরবর্তী সময়ে সাক্ষাতে কথা বলব।
জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪৩ ধরনের পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এসব পণ্য রপ্তানিতে ১ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দেওয়া হয়। এর মধ্যে আটটি পণ্য রপ্তানিতে মিলছে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা। এই পণ্যগুলো হলো—শাক সবজি, ফলমূল ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য খাত; অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্টস (এপিআই) রপ্তানি, বৈচিত্র্যকৃত পাটপণ্য, শতভাগ হালাল মাংস ও হালাল মাংসজাতীয় পণ্য, আলু, পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড, শস্য ও শাক সবজির বীজ, আগর ও আতর পণ্য রপ্তানি খাত।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে ছয় খাতের পণ্য রপ্তানিতে। এ ছাড়া ১০ শতাংশ প্রণোদনা মিলছে বেশ কয়েকটি খাতে। এর বাইরে নতুন পণ্য বা নতুন বাজার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ হারে সহায়তা দেওয়া হবে।
অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, নতুন সরকার গঠনের পর থেকে প্রধানমন্ত্রী কৃষি, পাট ও চামড়াশিল্পে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য তাগিদ দিচ্ছেন। নতুন মন্ত্রীদের প্রথম বৈঠকে এ বিষয়ে বেশ কিছু নির্দেশনাও দিয়েছেন।
ফলে আজকের এ বিষয়ে এই তিন পণ্য রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু নির্দেশনা দিতে পারেন।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অর্থ বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই বছরের পর বছর সরকারি তহবিল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশন এবং অবসর সুবিধা দিয়ে আসা ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পেনশন তহবিল সম্প্রতি আটকে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর ইত্যাদি। একই ক্যাটাগরির আরো ১৩টি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয়ের অর্থে পেনশন সুবিধা চালুর শর্ত থাকলেও এগুলো পেনশন-অবসর সুবিধা দিতে সরকারি তহবিল ব্যবহার করছে। এসব প্রতিষ্ঠানের পেনশন স্কিমের তহবিল আংশিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং নিজস্ব আয় ব্যবহার করে এগুলোকে এ ধরনের সুবিধা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেবল গত অর্থবছরেই এসব প্রতিষ্ঠানের পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা বাবদ সরকারি তহবিল থেকে এক হাজার ১০১ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ৬৮৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকাসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর পেনশন তহবিলের জন্য মোট ৭৭৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ফলে এসব বিষয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।