উপকূলে লবণাক্ততার কারণে অনাবাদি জমিকে আবাদযোগ্য করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। তিনি বলেছেন, লবণাক্ততার কারণে যেসব জমি অনাবাদি রয়েছে তা আবাদের আওতায় আনতে জমিতে লবণাক্ত পানির প্রবেশ বন্ধ করতে হবে; সরকারি খাল ইজারামুক্ত ও ভরাট হওয়া খাল খনন করে মিষ্টি সেচ পানির আধার সৃষ্টি, স্থায়ী বেড়িবাঁধের ব্যবস্থা, প্রকল্পের মাধ্যমে মিনি পুকুর ও বোরোপিট খনন এবং লবণাক্ত সহনশীল জাতের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে।
গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে মন্ত্রী এই তথ্য জানান। খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. রশীদুজ্জামান এসক্রান্ত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা খুলনার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা একদা খাদ্য উদ্বৃত্ত এলাকা হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিল। লবণাক্ততার কারণে অনেক জমি অনাবাদি রয়েছে। ওই জমি আবাদযোগ্য করার পরিকল্পনা সরকারের আছে কি না?’
জবাবে কৃষিমন্ত্রী আরো জানান, পাইকগাছা উপজেলায় লবণ পানির ২৪ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমিতে (ঘের) মাছ চাষ হয়। এই লবণাক্ত ঘেরগুলো পরিকল্পিতভাবে মিষ্টি পানির আওতায় আনা গেলে স্বাদু পানির মাছ এবং ফসল একই সঙ্গে উৎপাদন করা সম্ভব।
তিনি জানান, কয়রা ও পাইকগাছায় অনাবাদি জমি আবাদযোগ্য করার লক্ষ্যে ‘উপকূলীয় এলাকায় পানি ও মাটির লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন ও নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে ওই এলাকায় খাল ও পুকুর পুনঃখনন, সেচ অবকাঠামো স্থাপনের মাধ্যমে অনাবাদি জমি আবাদযোগ্য করা যাবে।
মন্ত্রী আব্দুস শহীদ জানান, সরকারের প্রতি ইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। এ ক্ষেত্রে ওই সব জমি আবাদের আওতায় আনতে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো হলো মিষ্টি পানির অভাব, খাল ভরাট হয়ে যাওয়া, স্লুইস গেট বিনষ্ট, ফসলি জমিতে লবণাক্ত পানি উঠানো।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে ফসল আবাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, লবণাক্ততার কারণে অনাবাদি জমি আবাদযোগ্য করার লক্ষ্যে বিএডিসির মাধ্যমে ২০২৩-২৪ বর্ষে কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫৩১.৫ মেট্রিক টন বীজ এবং কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সার সরবরাহ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিএডিসিসহ কয়েকটি সংস্থা কয়রা ও পাইকগাছায় ফসল ও সেচ উভয় সেক্টরে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।