<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়। পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয় রাজধানীসহ সারা দেশের বহু থানায়। এর মধ্যে অন্যতম ছিল রাজধানীর আদাবর থানা। এই থানায় চারটি গাড়ি, বিভিন্ন অফিসারের ২০টি মোটরসাইকেল, ৩০টি ল্যাপটপ-কম্পিউটার, পাঁচটি এসি, টিভি, কক্ষের দরজা, ফ্যান, এমনকি ফ্লোরের কার্পেটসহ অন্যসব আসবাব লুট করে নিয়ে যায়। আর যেগুলো নিতে পারেনি, সেগুলো ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এতে ভবনের অবকাঠামোও অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ধ্বংসলীলার এখনো অনেক ক্ষতচিহ্ন পড়ে রয়েছে থানার ভেতর-বাইর। গতকাল রবিবার দুপুরে সরেজমিনে এমনই সব দৃশ্যের দেখা মেলে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছয়তলা ভবনবিশিষ্ট আদাবর থানার প্রতিটি ফ্লোরে সেদিন ধ্বংসলীলা চালানো হয়। গতকাল পর্যন্ত এর একটি ফ্লোরও পুরোপুরি কাজের জন্য প্রস্তুত হয়নি। কোনো রকমে চেয়ার-টেবিল পেতে কাজ চালানো হচ্ছে। আরেক দিকে এসব ফ্লোরের মেরামতের কাজ চলছে। কোনো রুমে নেই নেমপ্লেট। তাই যে কেউ প্রথমে গিয়ে কোনটা কার কক্ষ বুঝতে পারেন না। পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে নির্দিষ্ট রুমে যান। তবে থানায় বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে হাতে গোনা কয়েকজনকে সেবা নিতে আসতে দেখা গেছে। ডিউটি অফিসারসহ দায়িত্বরতরা হাতে লিখেই বিভিন্ন অভিযোগ নিচ্ছেন। এ ছাড়া ইন্টারনেট সার্ভার এখনো ঠিক না হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে সেবা দিতে বিলম্ব হচ্ছে।  অন্যদিকে থানার বাইরের সড়কে পড়ে রয়েছে পোড়া গাড়িসহ অন্যান্য আসবাবপত্রের ধ্বংসস্তূপ। এর মধ্যে পুলিশের কয়েক সেট পোশাক ও থানার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজের স্তূপও পড়ে থাকতে দেখা গেছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য জানান, এখন আগের মতো মামলা ও অভিযোগ হচ্ছে না। পরিমাণের সংখ্যা কমে গেছে। তবে জিডি হচ্ছে। এখানে দায়িত্বরত ১১৬ জন সদস্য চেষ্টা করছেন নাগরিক সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট একাধিক পুলিশ সদস্য জানান, এই থানা এলাকায় তেমন আন্দোলন না হলেও ৫ আগস্ট বিকেল থেকে সারা রাত ভাঙচুর, হামলা ও লুটপাট হয়। সেই আগের অবস্থায় থানায় ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে। গাড়ি, অস্ত্র, পোশাক, ইন্টারনেট সিস্টেমসহ অন্যান্য সুবিধা পেতে কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। এই সংকটকালীন  যেসব থানায় ভাঙচুর হয়নি, সেসব থানা থেকে গাড়ির সাপোর্ট নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে বনানী থানার একটি গাড়ি দিয়ে বর্তমানে কাজ চলছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">থানার ওসি মাহফুজ ইমতিয়াজ ভূইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, এই থানার সব কিছুই লুট হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের মেসের হাঁড়ি-পাতিল থেকে শুরু করে কিছুই অবশিষ্ট নেই। আর যেগুলো নিতে পারেনি, তা নষ্ট করে গেছে। এখন যারা আসছে তাদের সেবা দিচ্ছি। আমাদের পক্ষ থেকে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।  </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্দোলন ঘিরে এই থানায় কতগুলো মামলা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> হয়েছে ও অস্ত্র লুট হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোট চারটি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া ৫ আগস্ট বিকেলের পর থেকে চার শতাধিক বিভিন্ন প্রকারের অস্ত্র লুট হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে এখনো ৭০টি অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে ২০টি নতুন পিস্তলও রয়েছে। এ ছাড়া থানায় ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের কারণে মামলার প্রায় সব আলামত</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যরা।</span></span></span></span></p> <p> </p>