<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরকারি হিসাবে সুনামগঞ্জে ১৩৩টি হাওর রয়েছে। ১২টি উপজেলার সবটিতেই হাওর রয়েছে। এর মধ্যে ৯টি উপজেলায় হাওরের সংখ্যা বেশি। প্রাকৃতিক পানির আধার, মিঠা পানির সুস্বাদু মাছ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> আর ধানের জন্য বিখ্যাত হাওরে রয়েছে নানা প্রজাতির জলজ, স্থলজ, উভচরসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণবৈচিত্র্য। তবে বর্ষায় পানিতে টইটম্বুর হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ গ্রামে আছড়ে পড়ে আফাল (উত্তাল ঢেউ)। আর সেই আঘাতে ভেঙে যায় বসতভিটা। প্রতিবছর শুকনা মওসুমে ভিটায় মাটি ভরাট করলেও তা টিকছে না। এভাবে আফালের সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছেন হাওরবাসী। আফাল থেকে গ্রামগুলো রক্ষায় কোনো উদ্যোগ নেই।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ও মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের ইসলামপুর, আব্দুল্লাহপুর, ইছাগড়ি, কুলাউড়া, তাহিরপুরের জয়পুর, শ্রীলাইন তাহিরপুর, মন্দিআতা, শাল্লা উপজেলার সুলতানপুর, মনুয়া, মোহন খল্লি, শোধন খল্লিসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এখনো গ্রামগুলোর চারদিকে পানি। তবে পানি কিছুটা কমে আসায় এবং ঝড়-তুফান কমে যাওয়ায় এখন আফালের তাণ্ডব নেই। তবে গত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাস পর্যন্ত ঘন ঘন বৃষ্টি, ঝড়-তুফান এবং  থইথই পানি হাওরের কৃষকদের কাঁচা ঘরবাড়ির আঙ্গিনা, উঠান, বসতবাড়ির মেঝে ভেঙে ধসিয়ে দিয়েছে। বসতবাড়ির চারদিকে বেড়া দিয়ে কোনোমতে আফাল থেকে ভিটা বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আবহমানকাল থেকেই তাঁরা হাওরের আফালের সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে আছেন। যাঁরা নিতান্ত অসহায় ও হতদরিদ্র তাঁদের অনেকের ঘরবাড়ি আফালে বিধ্বস্ত হওয়ায় বাড়িঘর ছেড়ে স্থানান্তরিত হয়েছেন। অনেকে প্রতিবছরই পূর্বপুরুষের ভিটা রক্ষায় শুকনা মৌসুমে মাটি দিয়ে ভরাট করেন। আবার বর্ষা এলে ভেঙে যায়। তবে যাঁদের সচ্ছলতা আছে, তাঁরা বসতবাড়ির চারদিকে পাকা করে ভিটাকে সুরক্ষিত করেছেন। দিরাই, শাল্লা, জামালগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জের হাওরঘেরা কিছু গ্রাম চারদিকে পাকা করে সুরক্ষিত করেছে বেসরকারি কিছু সংগঠন। তবে সরকারিভাবে গ্রামকে সুরক্ষা দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর গ্রামটি চারদিকে হাওর দ্বারা বেষ্টিত। প্রতিবছর গ্রামটি আফালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার আফালে গ্রামের মমতাজ বেগমের কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এখন তাঁর খালার বাড়ি এসে দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। মমতাজ বেগম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের বাড়ি আফালে ভাইঙ্গা নিছে। এখন থাকার উপযোগী না। তাই খালার একটি ভিটায় ভাঙা ঘরে এসে আশ্রয় নিয়েছি। কোনো সহযোগিতা না পাইলে আমাদের মতো মানুষ আবার ভিটা তৈরি করতে পারবে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্ষাকালীন কয়েক মাস হাওরের প্রতিটি গ্রাম দ্বীপের মতো ডুবে থাকে। তখন আফালে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক গ্রামের ঘরবাড়ি চিরতরে বিলীন হয়ে গেছে। হাওরের গ্রামের বসতভিটা রক্ষায় অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বর্ষায় হাওরের আফালে গ্রামের ভিটাবাড়ি ধসে যাচ্ছে এ কথা সত্য। তবে আমরা নদীভাঙন নিয়ে কাজ করি। হাওরের গ্রামগুলো রক্ষায় কোনো প্রকল্প নেই। হাওরের গ্রাম রক্ষার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>