<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চালুর অল্প দিনের মধ্যেই বিপদে সাহায্য পেতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে ওঠে পুলিশের জরুরি হেল্পলাইন ৯৯৯ সেবা। তবে চালুর প্রায় সাত বছরেও এটি পূর্ণাঙ্গ ইউনিটে রূপান্তর হতে পারেনি। চলছে জোড়াতালি দিয়ে। যাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন তাঁদেরও পোস্টিং অন্যত্র। সেখান থেকে বেতন-ভাতা পান তাঁরা, কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন হেল্পলাইনে। পূর্ণাঙ্গ একটি ইউনিট গঠনের জন্য প্রস্তাব পাঠানোর পর মিলছে না ইতিবাচক সাড়া। ইউনিট গঠনের জন্য নেই আলাদা বাজেটও। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এই সেবাটির জন্য কম্পিউটারের একটি মাউস কিনতে হলেও দ্বারস্থ হতে হয় পুলিশ টেলিকমের কাছে। স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে, অথচ আটকে রেখেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। উদ্যোগ সীমাবদ্ধ শুধু চিঠি চালাচালিতে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর চালু হয় ৯৯৯ সেবা। এটি অ্যাম্বুল্যান্স সেবা, দুর্ঘটনা, বাল্যবিবাহ, অগ্নিকাণ্ড, পাচার ও সহিংসতার ক্ষেত্রে জরুরি সহায়তার জন্য সারা দেশে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হলেও ফোন আসে ৯৯৯ নম্বরে। কারো কিছু হারিয়ে গেলেও কল আসে সেখানে। সম্প্রতি হেল্পলাইনটিতে সবচেয়ে বেশি কল আসছে বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে। মোবাইল ফোনে সহজেই পাওয়া যাওয়ার কারণে যারাই পানিতে আটকে পড়ছে তারা ৯৯৯-এ ফোন করে সহযোগিতা চেয়েছে। ৯৯৯ থেকে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানা ও ফায়ার সার্ভিস বা অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা হচ্ছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সম্প্রতি ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বানিজান গ্রামের কাশিবান বাজার থেকে ভীত ও উদ্বিগ্ন একজন সেবাপ্রত্যাশী ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানান, তাঁদের এলাকায় বন্যার পানিতে অনেক মহিলা ও শিশু ঘরে আটকে আছে। তাদের জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে অনুরোধ জানানো হয়। ৯৯৯-এর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার জানান, কল রিসিভ করেছিলেন ৯৯৯-এর কলটেকার কনস্টেবল মো. সুরুজ্জামান। তিনি কলারকে আশ্বস্ত করে ফুলপুর ও হালুয়াঘাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে উভয় ঘটনায় দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানান। উদ্ধার কার্যক্রম চলাকালে সংশ্লিষ্ট থানা, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও কলারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলেন ৯৯৯ পুলিশ ডেসপাচার এসআই মো. রেজাউল করিম, ফায়ার ডেসপাচার ফায়ারফাইটার ওলিউল্লাহ এবং ফায়ারফাইটার মো. হানজালা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংবাদ পেয়ে ফুলপুর ও হালুয়াঘাট ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়। এ রকম ঘটনা অনেক।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে : হেল্পলাইনটি চালু হওয়ার পর ২০১৮ সালে ৯৯৯-এ এক বছরে কল এসেছিল ৪৯ হাজার ৭১৯টি। আর এখন প্রতি মাসে কল আসে ২২-২৩ হাজার। ৯৯৯ হেল্পলাইনের মুখপাত্র ইন্সপেক্টর আনোয়ার সাত্তার কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মানুষ ৯৯৯-এর ওপর আস্থা রাখছে। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি কল আসছে বন্যাদুর্গত এলাকা থেকে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যে ৬ ধরনের সহযোগিতা বেশি চাওয়া হয় : হেল্পলাইন থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ছয় ধরনের সহযোগিতা চাওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি কল আসে মারামারি ঘটনায়। এ ছাড়া শব্দদূষণ, অগ্নিকাণ্ড, নারীর প্রতি সহিংসতা ও দুর্ঘটনার বিষয়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কল আসে। বর্তমানে ৯৯৯ হেল্পলাইনে ১০০টি ওয়ার্কস্টেশন রয়েছে এবং একবারে ১২০টি কল রিসিভ করতে পারে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইউনিট গঠনে চলছে চিঠি চালাচালি : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ টেলিকমের অধীন পরিচালিত না হয়ে একটি আলাদা ইউনিট করার জন্য পুলিশের তরফ থেকে ২০১৯ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৫৪৯ জনবলের অনুমোদন দেয়। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় চিঠি দেওয়া হলেও এখনো তার অনুমোদন হয়নি। জরুরি হেল্পলাইনের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ তবারক উল্লাহ কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">হেল্পলাইনটিকে পৃথক ইউনিট হিসেবে অনুমোদন  পেলে এর আপডেটেড সফটওয়্যারসহ হেল্পলাইনটি আরো দক্ষতার সঙ্গে সবাইকে সেবা দিতে পারবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> জানা যায়, হেল্পলাইনটি ২০১৭ সালে চালু হওয়ার পর সাত বছরে এক মিনিটের জন্যও বন্ধ থাকেনি। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট হেল্পলাইনটি বন্ধ ছিল। পরদিন ৭ আগস্ট থেকে আবার সীমিত আকারে চালু হয়। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫ আগস্ট হেল্পলাইনটিতে সারা দেশে পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁরা ফোন করে সহযোগিতা চান। কিন্তু থানাগুলোতে হামলা করার কারণে কোনো সহযোগিতা করা সম্ভব হয়নি। তবে অ্যাম্বুল্যান্স ও ফায়ার সার্ভিসের সেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছিল বলে সেখানে দায়িত্বরত একজন কালের কণ্ঠকে জানান। </span></span></span></span></p>