<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষা ও কর্মজীবনে বেপরোয়া দাপুটে জীবন যাপন করেছেন ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। তাঁর বাবা এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন আওয়ামী লীগের টিকিটে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের তিনবারের মেয়র এবং দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য, দাদা জাতীয় চার নেতার একজন সাবেক মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান হেনা। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজনৈতিক পরিবারের মেয়ে ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। দীর্ঘ ১৫ বছরে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জেরে রাজশাহীতে তিনি ছিলেন আলোচনার তুঙ্গে। রাজনীতির মাঠ থেকে কর্মস্থল, সোশ্যাল মিডিয়ায়ও তিনি ছিলেন ব্যাপক ভাইরাল। এসএসসির ফলাফল বিতর্ক, মেডিক্যালে ক্লাস-পরীক্ষায় অনিয়ম, রাজশাহী মেডিক্যাল সেন্টারে প্রভাব খাটিয়ে নিয়োগ পাওয়া, চাকরিতে যোগ দিয়ে অফিস না করা, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পদ বাগিয়ে নেওয়া, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, সশস্ত্র দেহরক্ষীসহ বিশাল ক্যাডার বাহিনী নিয়ে বেপরোয়া চলাফেরাসহ নানা কারণে বিতর্কিত এই মেয়রকন্যা ডা. অর্ণা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনীতি শুরু। ছিলেন সে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি, পরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির সদস্য, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি ব্যাপক আলোচনায় আসেন ২০০৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে। এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন বাবা ও মেয়ে। মেয়রকন্যা বায়না ধরেন তাঁর জিপিএ ৫ চাই। তৎকালীন মেয়র লিটন রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. দীপকেন্দ্র নাথ দাসকে চাপ দেন মেয়ে অর্ণাকে জিপিএ ৫ পাইয়ে দিতে। অপারগতা প্রকাশ করেন বোর্ড চেয়ারম্যান। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে মেয়র লিটন বোর্ড চেয়ারম্যানকে শাস্তিমূলক বদলি করিয়ে দেন পাবনার শহীদ বুলবুল সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। কালের কণ্ঠকে সাবেক এই বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সে সময় মেয়েকে জিপিএ ৫ দিতে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালও করেছিলেন তিনি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এইচএসসি পাসের পর রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের মালিকানাধীন বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন ফারিহা জামান অর্ণা। অন্য দশজন শিক্ষার্থীর মতো স্বাভাবিক ছিল না তাঁর শিক্ষাজীবন। ইন্টার্ন করেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ইন্টার্নকালেও ঠিকমতো হাসপাতালে যেতেন না অর্ণা।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায় ২০১৯ সালের ১ জুলাই অ্যাডহক ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগ দেন ডা. অর্ণা। যোগদানের এক দিন পরই ২ জুলাই ছয় মাসের ছুটির আবেদন করেন তিনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাবি মেডিক্যাল সেন্টারের তাঁর একাধিক সহকর্মী কালের কণ্ঠকে বলেন, এ সেন্টারে অর্ণা চিকিৎসক হিসেবে যোগ দিলেও রোগীরা তাঁর কাছ থেকে পায়নি তেমন কোনো সেবা। কারণ অফিসে তাঁর পা পড়ত কালেভদ্রে। অফিসে এলেও অর্ণার সঙ্গে থাকত সশস্ত্র দুজন বডিগার্ডসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ৪০ থেকে ৫০ জন ক্যাডার। অফিসে ঢুকলেই তৈরি হতো একধরনের আতঙ্কের পরিবেশ। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রাজশাহী মেডিক্যাল সেন্টারে সংরক্ষিত ডিজিটাল হাজিরা বইয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অর্ণা ২০২৪ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে অফিস করেছেন মোট ৯ দিন, জানুয়ারিতে আট দিন আর ফেব্রুয়ারিতে এক দিন। খুব নগণ্যসংখ্যক রোগী দেখেছিলেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অথচ নিয়মবহির্ভূতভাবে ডা. অর্ণার কক্ষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা করা হয়, কক্ষ সাজানো হয় হাতিলের দামি ফার্নিচার দিয়ে। ১ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষবারের মতো অফিস করেন এবং এক মিনিটে দুজন রোগী দেখেছিলেন।</span></span></span></span></p> <p> </p>