<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যোবিদায়ি উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের দুর্নীতি ও ভর্তি জালিয়াতির চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভর্তি জালিয়াতিতে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে দুদক এরই মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে মামলার নির্দেশসহ তাঁর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ভিসি হিসেবে যোগদানের পরপরই গুচ্ছ পদ্ধতিতে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সেবার তাঁর বিরুদ্ধে ভর্তি জালিয়াতির একাধিক অভিযোগ উঠলেও নিজেকে সেখান থেকে সরিয়ে নামমাত্র তদন্ত কমিটি করে ধামাচাপা দেন নিজেই। ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির সভাপতি সেলিম আল মামুনের মাধ্যমে তিনি এই জালিয়াতি করতেন বলে জানায় একাধিক সূত্র। সহযোগী হিসেবে কাজ করেন ওএমআর প্যাকেজিং কমিটির আহ্বায়ক সদস্যসচিব। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সৌমিত্র শেখর নিজের বেডরুমেই রেখে দিতেন ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর ফরম। প্রতিবার ভর্তি পরীক্ষার সময় সেখানে নিজের পছন্দের শিক্ষার্থীদের ওএমআর পূরণ করিয়ে ভর্তি পরীক্ষার সব ওএমআরের সঙ্গে সিলগালা করে ভর্তি জালিয়াতি করতেন তিনি। গত ১৭ অক্টোবর উপাচার্যের বাসভবনে তল্লাশি চালিয়ে এসব কাগজপত্র জব্দ করে প্রশাসন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গতকাল সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, পছন্দের ব্যক্তিদের নিয়োগের কপি, জীবনবৃত্তান্ত, এমপিদের ডিও লেটারসহ নানা গোপন নথি পেয়েছে। দুদকের তদন্তাধীন ব্যক্তি হওয়ায় এগুলো এখন উন্মুক্ত করা যাবে না বলে জানায় প্রক্টরিয়াল বডি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে প্যাকেজিং কমিটির সদস্যসচিব মাসুদ রানা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমাদের কাজ হলো ওএমআর শিট সংগ্রহ করে পরীক্ষা গ্রহণের পর হিসাব করে সেগুলো ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির কাছে হস্তান্তর করা। এরপর উনারা এটা কিভাবে কী করেছেন তা বলতে পারব না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তবে এই কমিটির আরেক সদস্য আতিকুর রহমান খান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা পরীক্ষার পর যখন ওএমআর প্যাকেট করতাম, তখন কমিটির সদস্যসচিব বলেন, ভিসি স্যার কিছু ওএমআর চেয়েছেন, এটা পাঠাতে হবে। এতে আমরা উপস্থিত সবাই আশ্চর্য হলাম যে ওএমআর ভিসি স্যারের ওখানে কেন যাবে। পরে এটা কে বা কারা সরবরাহ করেছে তা আমার জানা নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মিজানুর রহমান বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অফিস নথি উনার ব্যক্তিগত আলমারিতে থাকতে পারে না। অনিয়ম ও জালিয়াতির কারণেই উনি এসব নিজের বেডরুমে সংরক্ষণ করেছিলেন। আর ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর শিট ভিসির বাসভবনে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ ব্যাপারে ভর্তি পরীক্ষার টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান ড. সেলিম আল মামুনের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর শিট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তা পরীক্ষার পরপরই সিলগালা হয়ে রেজাল্ট প্রস্তুতের জন্য যাওয়ার কথা। আর এটি ভিসির বাসভবনে পাওয়াটা অনেক বড় জালিয়াতি ও অন্যায়। এটি একজন ছাত্রের জীবন ধ্বংস করে দেয়। এ রকম দুর্নীতি প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। তদন্ত সাপেক্ষে যথযথ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত সময়ের সার্বিক অসংগতি তদন্তে কলা অনুষদের ডিন ইমদাদুল হুদাকে প্রধান করে ১১ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>