<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পার্বত্যাঞ্চলের অন্য নৃগোষ্ঠীর তুলনায় বেশ পিছিয়ে খুমীরা। বান্দরবানভিত্তিক এই জনগোষ্ঠীর মানুষ প্রায় তিন হাজার। তাদের ৯৬ শতাংশের পেশা জুমচাষ। সাক্ষরতার হার প্রায় ২৮ শতাংশ। এই সম্প্রদায়ের কোনো তরুণীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির নজির ছিল না এত দিন। ফলে অন্য জনগোষ্ঠীর ছেলেমেয়েদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া যতটা সহজ, ঠিক ততটাই কঠিন ছিল তংসই খুমীর জন্য। তবে অচলায়তন ভাঙার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন তিনি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে সেই চ্যালেঞ্জে জিতেছেন তংসই খুমী। এর মধ্য দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখালেন এই তরুণী। কারণ বাংলাদেশে তাঁর আগে খুমীদের আর কোনো ছাত্রী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি। তবে নিজ জনগোষ্ঠীর উদাহরণ হতে গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে দুর্গম পাহাড়ে বেড়ে ওঠা এই তরুণীকে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২৬ অক্টোবর তংসইয়ের সংগ্রামের গল্প ছাপা হয়েছিল কালের কণ্ঠ</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">র প্রথম পৃষ্ঠায় </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অন্যজীবন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বিভাগে। শিরোনাম ছিল </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খুমীদের প্রথম মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">। আলোচিত প্রতিবেদনটি পড়ে অসংখ্য মানুষ অভিনন্দন জানিয়েছে এই তরুণীকে। </span></span></span></span></span></p> <h1> <span style="font-size:22px"> আরো পড়ুন: <a href="https://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2024/10/26/1439215">খুমীদের প্রথম মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে</a></span></h1> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে ধারদেনা করে ভর্তি হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে নেবেন কী করে</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সেই চিন্তা পেয়ে বসেছিল তংসইকে। কালের কণ্ঠকে বলেছিলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভাবের সঙ্গে লড়ে এত দূর এসেছি। সামনে পড়াশোনা কিভাবে চালাব, তা নিয়ে চিন্তায় আছি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> শেষ পর্যন্ত তংসইয়ের দুশ্চিন্তা দূর করতে এগিয়ে এসেছেন রেজাউল বাহার-শারমীন শাহরিয়াত দম্পতি। প্রথম বাংলাদেশি দম্পতি হিসেবে এরই মধ্যে ১১৩ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন করেছেন তাঁরা। কালের কণ্ঠে প্রতিবেদনটি পড়ে তংসইয়ের পড়াশোনার ব্যয় বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই দম্পতি। এ প্রসঙ্গে রেজাউল বাহার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তংসইয়ের সাফল্য সবার জন্যই প্রেরণার। তাঁর সংগ্রামে সহযাত্রী হতে পেরে আমরা আনন্দিত।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তংসই খুমী বললেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পড়াশোনার খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন নির্ভার লাগছে। রেজাউল-শারমীন দম্পতির প্রতি কৃতজ্ঞতা। আমার সংগ্রামের গল্প তুলে ধরায় কালের কণ্ঠকেও ধন্যবাদ।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম তারাছা ইউনিয়নের মংঞো পাড়ার বাসিন্দা তংসই। সরাসরি সড়ক যোগাযোগ নেই গ্রামটিতে। কিছু সড়কপথের পর সাঙ্গু নদী ও পরে জঙ্গলঘেরা পাহাড় বেয়ে তংসইদের বাড়িতে যেতে হয়। সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক, স্কুল, হাসপাতালসহ অনেক কিছুই নেই তংসইদের গ্রামে। তবে স্বপ্নের অভাব ছিল না বাবা নয়লো খুমী ও মা লিংসাই খুমীর। </span></span></span></span></span><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চেয়েছিলেন সন্তানদের যতদূর সম্ভব পড়াবেন।চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারালেন তংসই।পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে যেন অথই সাগরে পড়লেন তংসইয়ের মা লিংসাই খুমী। কখনো জুমে কাজ করে, কখনো বা পোশাক বুনে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ যোগাতেন লিংসাই খুমী। এমন কষ্টের মধ্যেই এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এসেছেন তংসই। </span></span></span></span></span><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভবিষ্যতে খুমী সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করতে চান তংসই। যাতে করে তাঁর দেখানো পথে আরো বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী উঠে আসে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>