<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রায় দুই হাজার চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত পুলিশ সদস্য (কনস্টেবল-এসআই) বছরের পর বছর মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় দীর্ঘ সময় ধরে আশায় বুক বাঁধছেন তারা। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর চাকরি পেতে ১০ থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত একাধিকবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগীরা। সে সময় পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস এবং একটি মূল্যায়ন কমিটি করে দেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আইজিপির পরিবর্তনসহ প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সাড়ে তিন মাসেও চাকরিচ্যুতদের কর্মস্থলে পুনর্বহাল হওয়ার অগ্রগতি দেখছেন না বলে দাবি তাদের। তবে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র বলছে, কাজ (যাচাই-বাছাই) চলমান রয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বেআইনি আদেশ না শোনা, ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া, ডোপ টেস্টের নামে ফাঁদ, পারিবারিক মামলা, ছুটি না দেওয়ায় তর্ক করার মতো কারণ দেখিয়ে বিভাগীয় মামলাসহ নানা কারণে গত ১৫ বছরে চাকরিচ্যুত হয়েছেন এসব পুলিশ সদস্য। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে ভঙ্গুর অবস্থা থেকে পুলিশ বাহিনীকে শক্ত অবস্থানে ফেরাতে চাকরিচ্যুতদের মধ্য থেকে বিশেষ বিবেচনায় যাদের ফেরানো সম্ভব ফেরানো যেতে পারে। কারণ অনেকে হয়তো অতি সামান্য কারণে কিংবা রোষানলে পড়ে চাকরি হারিয়েছেন। এ ছাড়া বিনা অপরাধে চাকরিচ্যুত হলে সুবিচার না পেয়ে অনেকের নতুন করে অপরাধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সে অপরাধ জানাজানি হলে পুলিশের সুনামই ক্ষুণ্ন হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে অপরাধ ও সমাজ বিশ্লেষক অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরিচ্যুতদের আবেদনগুলো অবশ্যই গভীরভাবে তদন্তের প্রয়োজন। কেউ বিনা দোষে কিংবা লঘু দোষে গুরুদণ্ড অথবা রোষানল-বৈষম্যের শিকার হয়ে থাকতে পারেন। তাদের বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। কারণ পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্য নানা সরকারের আমলে নানা কারণে হয়রানির শিকার হয়েছেন, সেটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">একাধিক চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, হাসিনা সরকারের আমলে বৈষম্যের শিকার হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ে বিভিন্ন অজুহাতে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন প্রায় দুই হাজার পুলিশ সদস্য। তাদের অনেকেই অসহায় জীবন যাপন করছেন। কেউ অটোরিকশা চালাচ্ছেন, কেউবা পণ্য ফেরি করছেন। অনেকে এই সময়ের মধ্যে মারাও গেছেন। কারো চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে মৃত্যু হয়েছে। অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২১ সালে চাকরিচ্যুত হওয়া এএসআই মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন কারণে নানাভাবে আমাদের হয়রানি করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কেউ ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। কেউ বা আবার কোনো পোস্টে কমেন্ট করে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> চাকরিচ্যুত ও বরখাস্ত পুলিশ সদস্যদের দাবি, আদালত ও বিভাগীয় তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও চাকরি হারিয়েছেন তারা। তাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দাবি জানালে অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে ভুক্তভোগী সদস্যরা পুনর্বহালের আবেদন করেন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাকরি বহালের দাবি জানিয়ে কনস্টেবল ফরহাদ বিশ্বাস বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">২০২১ সালে বগুড়া জেলায় আমাকে ডোপ টেস্টের নামে চাকরিচ্যুত করা হয়। এরপর আদালতে মামলা করি। আদালত থেকে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হলেও আমাকে চাকরিতে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ডেভেলপমেন্ট রেভিনিউ) ড. শোয়েব রিয়াজ আলম, আইন শাখার কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা জজ মুর্শিদ আহমেদের  নেতৃত্বে গঠিত মূল্যায়ন তদন্ত কমিটি সর্বশেষ এক হাজার ৫২২ জনের একটি তালিকা করে এবং বাকিদের তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান রেখেছিল। কিন্তু আইজিপি পর্যায়ে রদবদল হওয়ায় কাজে ঢিলেঢালা ভাব আসে। এ কারণে প্রক্রিয়াটি স্থবির হয়ে পড়েছে। জানতে চাইলে শোয়েব রিয়াজ আলম কালের কণ্ঠকে বলেন, আবেদনগুলোর কেস টু কেস তথ্য দেখা হচ্ছে। অনেক আবেদন, আরো সময় লাগবে।</span></span></span></span></span></p>