<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুমিল্লা নগরী থেকে ভারত সীমান্তবর্তী বিবির বাজার সড়ক। এ সড়ক দিয়ে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ঝাঁকুনিপাড়া-দৌলতপুর এলাকায় গেলেই দূর থেকে চোখে পড়বে উঁচু উঁচু পাহাড়। তবে কাছে যেতেই দেখা যাবে সেগুলো পাহাড় নয়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ফেলা ময়লা-আবর্জনার (বর্জ্য) স্তূপ। দূর থেকেই নাকে ভেসে আসে দুর্গন্ধ। দুর্গন্ধ এতটাই তীব্র যে সড়কটি দিয়ে চলাচল করাও এখন কষ্টকর।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বছরের পর বছর ধরে ওই স্থানে কোনো ধরনের সুরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াই খোলা জায়গায় ময়লা ফেলা হচ্ছে। কুসিকের এসব বর্জ্যে স্থানীয় অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ দুর্গন্ধে নাকাল। পাশাপাশি সর্বনাশ হয়েছে পরিবেশের। সমস্যা সমাধানে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। বর্তমানে অবস্থাটা এমন হয়েছে যে ময়লা ও দুর্গন্ধের কারণে ওই গ্রামগুলোতে কেউ আত্মীয়তাও করতে চায় না। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কুমিল্লা নগরীর বর্জ্য ফেলার জন্য বেশ কয়েক বছর আগে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ঝাঁকুনিপাড়া-দৌলতপুর গ্রামে প্রায় ১০ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। প্রায় তিন দশক আগ থেকে ওই স্থানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। আগে কুমিল্লা পৌরসভা এখানে ময়লা ফেলত। ২০১১ সালে কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভাকে নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। এর পর থেকেই নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের বেশির ভাগ ময়লা এখানে ফেলছে সিটি করপোরেশন। প্রায় সাত বছর ধরে সিটি করপোরেশন বলছে, নগরীর এসব ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। আন্দোলনের মুখে একাধিকবার এই প্রকল্প গ্রহণ করার কথা বলা হলেও বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, এখানে বর্জ্য ফেলার কারণে ঝাঁকুনিপাড়া, দৌলতপুর গ্রামের পাশাপাশি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাজগড্ডা, খামার কৃষ্ণপুর, শুয়ারা, জগন্নাথপুর, নবগ্রাম, বালুতুপাসহ আশপাশের অন্তত ১০টি গ্রামের মানুষ। এসব ময়লা-আবর্জনার স্তূপ সিটি করপোরেশনের জায়গা ছাড়িয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির আশপাশসহ সড়কের পাশে ছড়িয়ে পড়ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা সামছুল আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পৌরসভা থেকে সিটি করপোরেশন গঠিত হওয়ার পর সীমানা বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে জনসংখ্যাও। ফলে ময়লা-আবর্জনার পরিমাণও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এতে দিন যত যাচ্ছে, ততই অতিরিক্ত ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে অসহনীয় হয়ে উঠছে। বর্তমানে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৮০ মেট্রিক টন ময়লা এখানে ফেলা হচ্ছে। দিনরাত এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছে। কিভাবে পরিবেশদূষণ না করে ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে সীমাবদ্ধ রাখা যায়, প্রকৃতপক্ষে এটা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের ছিল বলে আমাদের কাছে কখনোই মনে হয়নি। শুধু ওই এলাকাই নয়, নগরীর বিভিন্ন খোলা স্থানেও ময়লা ফেলে পরিবেশদূষণ করা হচ্ছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবেশ অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপপরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজীব বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এভাবে বর্জ্য ফেলায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি। সিটি করপোরেশন থেকে বলা হয়েছে, তারা বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তবে বর্তমানে প্রকল্পটি কোন পর্যায়ে আছে, সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামছুল আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আগে যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, সেটা আপাতত স্থগিত হয়ে রয়েছে। আমরা প্রকল্পটির প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে, সেখান থেকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়। এরপর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় থেকে আর কিছু জানানো হয়নি। তবে আমরা এই সমস্যা সমাধানের জন্য চেষ্টা করছি। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে হলেও বর্জ্য রিসাইকল করে কিভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই চেষ্টা করছে সিটি করপোরেশন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p>