<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">শেষ পর্যন্ত কি বাতিল হওয়ার পথে বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমায় টুনা মাছ ধরার প্রকল্প! বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প গ্রহণ করে।  প্রাথমিক বা পাইলট প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। যদি এই টুনা মাছ প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়, তাহলে ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশনের (আইওটিসি) সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ থাকবে কি না? সদস্য থাকলে প্রতিবছর বাংলাদেশকে ৭০ হাজার ডলার চাঁদা দিতে হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টুনা মাছ প্রকল্পটি বাতিল হওয়ার প্রশ্ন উঠেছে চলতি বছরের ৩ সেপ্টেম্বর জাহাজ ক্রয়াদেশ বাতিলের কারণে। জাহাজ কেনা বাদ দিয়ে টুনা মাছ শিকারের জন্য দুটি জাহাজ ভাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় যদি জাহাজ ভাড়া করার প্রস্তাবে সাড়া না দেয়, তখন দেখা যাবে টুনা মাছ শিকার প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কী হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টুনা মাছ আহরণের জন্য অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠান ব্লু হারবার ফিশিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজালাল কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্তর্জাতিক জলসীমায় টুনা বা সমজাতীয় মাছ আহরণের প্রকল্প একটি নতুন ধারণা। এটা দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভালো উদ্যোগ। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আন্তর্জাতিক জলসীমায় মাছ আহরণের জন্য আমরা প্রস্তুত কি না। এখানে মাছের অবস্থান নির্ণয় বা জরিপ করা হয়নি। তবে সাগর যখন আছে, মাছও থাকবে। টুনা মাছের আন্তর্জাতিক বাজার রয়েছে। গভীর সাগরে মাছ আহরণের একেকটি নতুন জাহাজের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকার মতো। ২০ থেকে ২৫ বছরের একটি পুরনো জাহাজ কিনতে গেলে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। সরকারি সহায়তা বা সহজ শর্তে লোন সুবিধা না পেলে টুনা মাছ আহরণ প্রকল্প এগিয়ে নিতে কষ্ট হবে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">টুনা মাছ ধরার জন্য এই প্রকল্পের আওতায় চীনের ইউনি মেরিন সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কেনা ও সরবরাহের জন্য সিঙ্গাপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়। ২৪ কোটি টাকায় দুটি জাহাজ কেনার কথা ছিল। জাহাজ দুটির অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য ৩০ জন ক্রু নিয়োগ দেওয়ার কথাও হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বঙ্গোপসাগরের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন ও আন্তর্জাতিক জলসীমায় টুনা মাছসহ সমজাতীয় মাছ ধরা শুরু করবে মৎস্য অধিদপ্তর। সূত্র জানায়, বঙ্গোপসাগরের ১.১৯ লাখ বর্গকিলোমিটার এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন রয়েছে। দেশের ১০০ মিটার গভীরতায় মাত্র ২৪ হাজার বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত অঞ্চল থেকে মৎস্য সম্পদ আহরণ করা হয়। ফলে ২০০ মিটার গভীরতায় টুনা মাছ ও সমজাতীয় মাছ আহরণ অধরা থেকে গেছে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পটির পরিচালক ড. মো. জুবায়দুল আলম বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যথাসময়ে টাকা ছাড় না পাওয়ায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাহাজ কেনা স্থগিত ছিল। এ জন্য প্রকল্পের কাজও পিছিয়ে গেছে। বর্তমানে জাহাজ কেনার প্রকল্প বাদ দিয়ে ভাড়ায় জাহাজ সংগ্রহের প্রস্তাব করা হয়েছে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span> </span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সিঙ্গাপুরের যে কম্পানির সঙ্গে জাহাজ সরবরাহের চুক্তি হয়েছিল, তা চলতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর বাতিল করা হয়েছে। টুনা মাছ ধরার জন্য নিজস্ব জাহাজ সংগ্রহের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দুটি জাহাজ ভাড়ায় সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে জাহাজ ভাড়া করার এই সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেলে এই প্রকল্পের কাজ নতুন করে শুরু করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সামুদ্রিক মৎস্য দপ্তরের তথ্য মতে, ইন্ডিয়ান ওশান অধ্যুষিত অঞ্চলে টুনা মাছ আহরণ নিয়ন্ত্রিত হয় ইন্ডিয়ান ওশান টুনা কমিশনের (আইওটিসি) অধীনে। এই কমিশনের অধীনে রয়েছে ৩০টি দেশ। বাংলাদেশ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল এই আইওটিসির সদস্যভুক্ত হয়। নিজেদের এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় নিয়মিত টুনা মাছ আহরণ করে বাংলাদেশের কাছাকাছি অঞ্চলের ভারত, মালদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া। আইওটিসির সদস্য হওয়ার কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশকে ৭০ হাজার ডলার চাঁদা দিতে হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আইওটিসির সদস্য পদ লাভ করলেও এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক জলসীমায় একটি মাছও ধরেনি। একটি মাছ না ধরেও বছর বছর আইওটিসির সদস্য পদ বহাল রাখার জন্য ১৮ সাল থেকে চলতি বছরসহ ছয় বছরে বিপুল পরিমাণ ডলার ব্যয় করতে হয়েছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"> </p>