<p>প্রায় আড়াই বছর আগে সাজা খাটা শেষ হলেও ভারতের অসহযোগিতায় মুক্তি মিলছে না ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি সেই বাদল ফরাজীর। আইনি প্যাঁচে তাঁকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, দুই দেশের বড় বড় বিষয়ে সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে বাদল ফরাজীর বিষয়ে কোনো নাড়াচাড়া হচ্ছে না।</p> <p>স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী তাঁকে মুক্তি দিতে হলে ভারত সরকারের অনুমোদন লাগবে। এ কারণেই তাঁদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।</p> <p>বাগেরহাটের বাদল ফরাজী তাজমহল দেখতে ভিসা নিয়ে ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে যান। এক সপ্তাহ পর ফেরার পথে বেনাপোল সীমান্ত থেকে তাঁকে আটক করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।</p> <p>এর আগে ২০০৮ সালের ৬ মে দিল্লির অমর কলোনিতে এক বৃদ্ধা খুন হন। বাদল সিং নামের এক ব্যক্তি ওই খুনের সঙ্গে জড়িত বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। বাদল ফরাজীকে বাদল সিং ভেবেই বিএসএফ আটক করে।  এরপর তাঁকে রাখা হয় নয়াদিল্লির তিহার কারাগারে। ভাষা জটিলতায় তিনি প্রমাণ করতে পারেননি যে তিনি বাদল সিং নন, বাদল ফরাজী। ওই বছরই দিল্লির সাকেত আদালত তাঁকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেন। এর পর থেকে তিনি ভারতের কারাগারে বন্দি ছিলেন।২০১৮ সালের ৬ জুলাই বন্দিবিনিময় চুক্তির অধীনে বাদল ফরাজীকে পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে তিহার কারাগার থেকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে হস্তান্তর করা হয়। ২০২২ সালের ২০ জুলাই তাঁর ১৪ বছর সাজা পূর্ণ হয়েছে। ছেলের শোকে বহু আগেই হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বাদলের বাবা। আর বৃদ্ধা মা এখনো অপেক্ষায় আছেন নির্দোষ ছেলে কবে ফিরবে তাঁর কাছে।</p> <p>স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে বাদল ফরাজীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ভারতীয় সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো জবাব মেলেনি। এর পর কয়েক দফা চিঠি পাঠানো হলেও ভারত কোনো জবাব দেয়নি। ফলে তাঁর মুক্তিও মিলছে না। বর্তমানে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কও ভালো যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বাদল ফরাজীর বিষয়টিও ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আর কত দিন তাঁকে কারাগারে কাটাতে হবে, সেটি ভেবেই অস্থির এখন বাদল।</p> <p>এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজনস জাহাঙ্গীর কবির গতকাল দুপুরে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাদল ফরাজীর মুক্তির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর পর আমরা মুক্তি দিয়ে দেব।’</p> <p>জানা যায়, ভারতের কারাগারে থাকার সময়ই একটি মানবাধিকার সংস্থা তাঁর খোঁজ পায়। নিরপরাধ বাদল ফরাজীকে নিয়ে তারা ঢাকার সঙ্গে কথা বলে। এর পরই দুই দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আলোচনা করে তাঁকে বাংলাদেশের কারগারে ফেরত পাঠান।</p> <p> </p>