নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যেনতেনভাবে সরকারি প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভায় গৃহভিত্তিক শৌচাগার নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এতে শৌচাগারের স্থায়িত্ব নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে সুফলভোগীদের মধ্যে।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটারি (বিএমডব্লিউএসএসপি) প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে রামগতি পৌরসভায় ইমপ্রুভড হাউসহোল্ড শৌচাগার নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে গৃহভিত্তিক ৭০০ আধুনিক শৌচাগার নির্মাণ করা হচ্ছে। সিডিউল অনুযায়ী শৌচাগারের নির্মাণ ব্যয় ৭০ হাজার ৩০০ টাকা বরাদ্দে কার্যাদেশ পায় শামীম এন্টারপ্রাইজ, একতা ট্রেডার্স, মুক্তা এন্টারপ্রাইজসহ প্রায় ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু নির্মাণকাজ প্রকৃত ঠিকাদার আড়ালে থেকে কমিশনে তাঁদের সিন্ডিকেটের অন্য লোক দিয়ে করাচ্ছেন। প্রতিটি শৌচাগারের বিপরীতে ৭০ হাজার ৩০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও দায়সারাভাবে কাজ করা হচ্ছে। ঠিকাদার থেকে সাবঠিকাদার কাজ নিচ্ছেন ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। ফলে স্টেকহোল্ডাররা সিডিউল অনুযায়ী মানসম্মত শৌচাগার পাচ্ছে না।
এদিকে মাঠ পর্যায়ে নেই কোনো ধরনের তদারকি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও জনস্বাস্থ্য উপসহকারী প্রকৌশলীর যোগসাজশে ঠিকাদার ও মিস্ত্রিরা মিলেমিশে এমন অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সপ্তাহখানেক ধরে ৩০ জনেরও বেশি সুফলভোগীর বাড়িতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পৌরসভায় এ পর্যন্ত যেসব গৃহভিত্তিক শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে, তার সব কটিতে পুরনো ব্যবহৃত খোয়াসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্মাণকালে গৃহস্থের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে দুই থেকে তিন ব্যাগ সিমেন্ট।
মোটরের জন্য পানির পাম্প না বসিয়ে শুধু মোটরটি পরিবারকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের দেওয়া ৩০০ লিটারের পানির ট্যাংকগুলো অখ্যাত কম্পানির ও নিম্নমানের।
এ ব্যাপারে একতা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ডা. হেলাল বলেন, ‘আমি ১৪টি শৌচাগার নির্মাণের কাজ করছি। কোনো অনিয়ম করিনি।’
একই কথা বলেছেন অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে কমিশনে কাজ করা ব্যক্তিরা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী তানভির হোসেন বলেন, ‘অনেক কাজ হচ্ছে তো, কিছু অনিয়ম হতে পারে। আমরা নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি।’
ইউএনও সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।