সুন্দরবনজুড়ে বেড়েছে বনদস্যুদের উৎপাত। আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে জেলে-বাওয়ালি-মৌয়ালসহ বনজীবীদের। সুন্দরবনসংলগ্ন মানুষের মধ্যে যারা বননির্ভর, তাদের আতঙ্ক আরো বেশি। অনেক সময় জঙ্গল থেকে ডাকাতরা পার্শ্ববর্তী এলাকায় এসে ঘোরাফেরা করে এমন খবরও আছে।
সুন্দরবনজুড়ে বেড়েছে বনদস্যুদের উৎপাত। আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে জেলে-বাওয়ালি-মৌয়ালসহ বনজীবীদের। সুন্দরবনসংলগ্ন মানুষের মধ্যে যারা বননির্ভর, তাদের আতঙ্ক আরো বেশি। অনেক সময় জঙ্গল থেকে ডাকাতরা পার্শ্ববর্তী এলাকায় এসে ঘোরাফেরা করে এমন খবরও আছে।
সুন্দরবন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবী এবং বনদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে ফিরে আসা জেলে-বাওয়ালিরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার একাংশ নিয়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বিভাগজুড়ে বর্তমানে ১৫টিরও বেশি বনদস্যু বাহিনী রয়েছে।
কোস্ট গার্ডের পশ্চিম জোনের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর সুন্দরবনসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে ২২টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সম্প্রতি সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রা উপজেলার ৬ নম্বর কয়রা পরিদর্শনকালে সেখানকার বাসিন্দারা জানান, বনদস্যুদের মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে এমন অনেক নজির রয়েছে। তবে যাদের জিম্মি করে মুক্তিপণের মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনা হয় নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক তারা।
অপর একটি সূত্র বলেছে, সুন্দরবনের টিয়ারচর এলাকার কালামিয়ার ভাড়ানির খাল থেকে সম্প্রতি ইয়াসিন নামের এক জেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে ৯০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে আনা হয় বলে সাতক্ষীরার মিজান নামের এক ব্যবসায়ী জানান। তাঁকে অপহরণের পর শরিফ বাহিনীর পক্ষ থেকে টোকেন দিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ জন্য রাবার স্ট্যাম্পের সিলে ‘শরিফ ভাই’ লিখে দুটি মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়। সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকার মানুষ, বনজীবীসহ বন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ওই ক্ষুদ্র সিলকে ‘টোকেন’ হিসেবেই চেনেন। এভাবে কোনো কিছু উল্লেখ না করে শুধু বাহিনীপ্রধানের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ ছাড়াও বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্নসংবলিত ‘টোকেন’ সরবরাহ করে চাঁদা আদায় করে থাকে বনদস্যুরা।
সম্প্রতি খুলনা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকেও রূপসার একজন বনদস্যুর কথা উল্লেখ করে বলা হয়, একসময় আত্মসমর্পণ করা ওই ব্যক্তি বর্তমানে আবারও সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাঁর সঙ্গে যেহেতু বনদস্যু এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের জানাশোনা আছে, সেহেতু খুলনা-সাতক্ষীরা রুটের সব মাছের গাড়িসহ অন্যান্য নৌ রুটের মাছের ট্রলার থেকেও চাঁদা আদায় করা সহজ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। যদিও পরদিন পাল্টা সংবাদ সম্মেলন থেকে ওই সাবেক বনদস্যুর ভাইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, তিনি এখন স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে নিজে না এসে ভাইকে দিয়ে করানোর পেছনেও কোনো রহস্য আছে বলেও অনেকে মনে করেন।
সম্পর্কিত খবর
বেতন-বোনাসের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। রাস্তা অবরোধ করে টানা কয়েক দিন আন্দোলনের পর এক ঘোষণায় রাস্তা ছাড়তে বাধ্য হন ঢাকার আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার আন্দোলনরত কর্মীরা। সেদিন এক সেনা কর্মকর্তা হ্যান্ড মাইকে ঘোষণা দিলেন, ‘আপনাদের জন্য সময় হচ্ছে সাত মিনিট। সাত মিনিটের ভেতরে আপনারা সাইডে গিয়ে দাঁড়াবেন।
সেনা কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘সাত মিনিট পরে এখানে যাঁরা থাকবেন, তাঁরা আমার ডিরেক্ট আদেশ ভঙ্গ করছেন এবং জনভোগান্তি ক্রিয়েট করেছেন। এই পানিশেবল ক্রাইমের আন্ডারে আপনারা জেলে যাবেন।
ঈদ বোনাস, ২৫ শতাংশ উৎপাদন বোনাস, নাইট বিল, টিফিন বিলসহ আরো কয়েকটি দাবিতে গাজীপুরের তেলিপাড়া এলাকায় ইস্মোগ সোয়েটার নামের একটি কারখানার শ্রমিকরা গত শুক্রবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
শ্রমিকরা বলছেন, ইস্মোগ সোয়েটার কারখানায় এক হাজার ২০০-এরও বেশি শ্রমিক কাজ করছেন। দীর্ঘদিন কাজ করলেও তাঁদের ওভারটাইম বিল, নাইট বিল, মাতৃত্বকালীন ছুটি, বার্ষিক প্রণোদনার টাকা পান না বলে দাবি তাঁদের। এ ছাড়া তাঁদের প্রডাকশন রেট সঠিকভাবে দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাই মোট ১৪ দফা দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন করছিলেন তাঁরা।
শেয়ারবাজারে তিনটি তালিকাভুক্ত কম্পানি সোনালী পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস, ফাইন ফুডস ও ফরচুন শুজ লিমিটেডের শেয়ারের দাম কারসাজির অভিযোগে ১২ ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানকে মোট ৭৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
যাঁদের জরিমানা করা হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. আবুল খায়ের ১১ কোটি এক লাখ টাকা, আবুল কালাম মাতবর সাত কোটি ২১ লাখ টাকা, কাজী সাদিয়া হাসান ২৫ কোটি দুই লাখ টাকা, কনিকা আফরোজ ১৯ কোটি এক লাখ টাকা, কাজী ফরিদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, কাজী ফুয়াদ হাসান ৩৫ লাখ টাকা, ডিআইটি কো-অপারেটিভ পাঁচ কোটি টাকা, মোহাম্মদ শামসুল আলম ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এক লাখ টাকা, সাজিয়া জেসমিন ৪৯ লাখ টাকা, সুলতানা পারভীন ১১ লাখ টাকা, এএএ অ্যাগ্রো এন্টারপ্রাইজ ৭৫ লাখ টাকা, আরবিম টেকনো ২৩ লাখ টাকা এবং মো. ফরিদ আহমেদ এক লাখ টাকা।
।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নিয়মিত বৈঠকে এই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, জি এম কাদের ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
অভিযোগে আরো বলা হয়, জি এম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামা অনুযায়ী জি এম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। তাঁর স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
এদিকে জি এম কাদের বলেছেন, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করায়, আমার মুখ বন্ধ করতেই দুর্নীতি ও হত্যা মামলা করা হয়েছে। এটি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল।
গতকাল ঢাকার কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে এই মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
জি এম কাদের বলেন, ‘দেশে নব্য ফ্যাসিবাদের উত্থান হচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতি বারবার জাতীয় পার্টির কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে একটি মহল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বলা হচ্ছে, আমি নাকি ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছি। এ জন্যই আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত হচ্ছে। অথচ এটা আমার বিরুদ্ধে মনগড়া অভিযোগ, এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্ট ছিল না।’
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার আহ্বায়ক আব্দুস সবুর আসুদের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জহিরুল ইসলাম জহির, জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান খলিল প্রমুখ।