সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগে রংপুরের বদরগঞ্জ থানার একজন এএসআই ও দুজন কনস্টেবলকে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওসির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগসহ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, বদরগঞ্জ থানায় সাংবাদিক এম এ সালাম বিশ্বাসকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় থানার এএসআই রবিউল আলম, কনস্টেবল আলামিন হোসেন ও মজিবুর রহমানকে পুলিশ লাইনসে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া ওসি আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা দায়িত্বে অবহেলাসহ পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফুল ইসলামকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, গত বুধবার থানা ক্যাম্পাসে কয়েকজন পুলিশ সদস্যের মধ্যকার হট্টগোলের ছবি তুলতে গেলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা সাংবাদিক এম এ সালাম বিশ্বাসকে মারধর করেন। পরে চ্যাংদোলা করে ওসির সামনে নিয়ে গিয়ে তাঁকে আবারও মারধর করা হয়। ছিঁড়ে ফেলা হয় তাঁর গায়ে থাকা জামা।
এরপর তাঁকে ওসির কক্ষে প্রায় চার ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। অভিযুক্তদের সঙ্গে মীমাংসা করে দেওয়ার নাটকও করেন ওসি। পরে সহকর্মীরা সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করান।
মারধরের শিকার সাংবাদিক এম এ সালাম বলেন, ‘থানার প্রধান ফটকের সামনে শহীদ মেনাজ সংঘ পাঠাগারে বসে আমি নিউজ লিখছিলাম।
এ সময় বাইরে গণ্ডগোলের শব্দ শুনি। ক্লাব থেকে থেকে বের হয়ে দেখি পুলিশের পিকআপ ভ্যানে দুজন এবং বাইকে দুজন পুলিশ নিজেদের মধ্যে উচ্চবাচ্য ও হট্টগোল করছেন। সঙ্গে সঙ্গে আমি মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও করতে থাকি। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা এএসআই রবিউল আমার মোবাইল ফোন ও ব্যাগ কেড়ে নেন। আমি এর প্রতিবাদ করলে বাইকে থাকা দুজনের সঙ্গে পিকআপ ভ্যানে থাকা দুজন নেমে আমাকে ব্যাপক মারধর করেন। পরে তাঁরা চারজন মিলে আমাকে চ্যাংদোলা করে থানার ভেতরে নিয়ে গিয়ে ওসির সামনে ফেলে দিয়ে লাথি মারেন। আমি রোজা থাকায় শরীর খুব দুর্বল ছিল। আমি পুলিশকে অনুরোধ করি আমার ফোন দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি সেটা না করে আমাকে তাঁর রুমে নিয়ে যান এবং প্রায় চার ঘণ্টা সেখানে আটকে রাখেন।’
বদরগঞ্জ থানার ওসি আতিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভুল-বোঝাবুঝির কারণে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।’