নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বেতগাড়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদের বয়স ৭৬ বছর। ২০২০ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা তুলছেন তিনি।
সম্প্রতি এই লেনদেন অনলাইনের আওতায় যায়। সেই মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রথম দফায় তিন হাজার এবং দ্বিতীয় দফায় এক হাজার ৫০০ টাকা পাঠালেও কোনোটিই জোটেনি তাঁর ভাগ্যে।
আজাদ বলেন, ‘সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে গিয়ে দেখি, তালিকায় আমার মোবাইল নম্বরের পরিবর্তে বসানো আছে অন্যজনের নম্বর। সেটি সংশোধন করার আশ্বাস দেওয়া হলেও পরের দফায়ও টাকা ওই নম্বরেই পাঠানো হয়।’
ওই গ্রামে গিয়ে একই অভিযোগ পাওয়া গেছে একাধিক উপকারভোগীর কাছ থেকে। মৃত দীনেশ চন্দ্র সেনের স্ত্রী নিলুকা রানী সেনও (৭৮) অনলাইন লেনদেনে প্রথম দফায় তিন হাজার টাকা পাননি।
টাকার জন্য বিভিন্নজনের কাছে ধরনা দিতে দিতে গত শুক্রবার বার্ধক্যজনিত রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, অন্তত ১০ জনের একই সমস্যা। পাশের হলহলিয়া গ্রামেও অনেকের এই সমস্যা রয়েছে।
বেগাড়া গ্রামের আবুল হোসেন জানান, অনলাইন লেনদেনের প্রথম দফায় তিনি তিন হাজার টাকা পেলেও দ্বিতীয় দফায় এক হাজার ৫০০ টাকার স্থলে পেয়েছেন ৫০০ টাকা।
একই গ্রামের সহিদুল ইসলাম অনলাইন লেনদেনে পাননি প্রথম দফার তিন হাজার টাকা। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দপ্তরে যোগাযোগ করে পেয়েছেন দ্বিতীয় দফার এক হাজার ৫০০ টাকা।
আবুল কালাম আজাদের অনুকূলে প্রেরিত নম্বরে ফোন করেন এই প্রতিবেদক। ওই ব্যক্তি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের একজন ব্যবসায়ী। নাম জানাতে অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি ব্যবসা করি।
আমার বিবেক আছে। কেন আমি বয়স্ক ভাতার টাকা নেব? টাকা আসার পর এক ব্যক্তি আমাকে ফোন করে বলেন, সেটি বয়স্ক ভাতার টাকা ভুল করে গেছে। এরপর আমি তাকে ফেরত দিয়েছি।’
জোড়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘কারো সমস্যা থাকলে সমাজসেবা অফিসে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।’
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ফিরোজুল ইসলাম বলেন, ‘উপকারভোগীর সংখ্যা অনেক, দু-একটি ভুল হলেও হতে পারে। অভিযোগ দিলে সেটি আমরা ঠিক করে দিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, এই উপজেলায় বয়স্ক ভাতাভোগী আট হাজার ৪৭৮ জন।