<p>সুনামগঞ্জে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণের তিন মাসের মাথায় তা ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ ও জামালগঞ্জ উপজেলার মানুষ।</p> <p>স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এডিবির অর্থায়নে মদনপুর-কাঠইর-জামালগঞ্জ সড়কের পাঁচ কিলোমিটার সংস্কারকাজ পায় মেসার্স সালেহ আহমদ এন্টারপ্রাইজ। এতে বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।</p> <p>এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত মে মাসে সংশ্লিষ্টরা দায়সারা কাজ শেষ করে। এর মধ্যে জুনের বৃষ্টিতেই রাস্তার পিচ ওঠে যায়। নতুন সংস্কারকৃত অংশের বিভিন্ন স্থানে গর্ত দেখা দেয়। রাস্তার দুই দিক বর্ধিত করার কথা থাকলেও নকশা অনুযায়ী যথাযথভাবে তা করা হয়নি। ২০২২ সালের বন্যায় সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে আরসিসি ঢালাই করার কথা থাকলেও সেখানে পর্যাপ্ত সিমেন্ট, উন্নত বালু-পাথর ও পর্যাপ্ত রড দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এ ছাড়া যে অংশ গালা দিয়ে ঢালাই দেওয়া হয়েছে সেই অংশ ঢালাই দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উঠে গিয়েছিল। সড়কের ঝূঁকিপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন অংশে পাইলিং খুঁটি বসানোর কথা থাকলেও নামমাত্র ছোট পিলার দিয়ে পাইলিং দেওয়া হয়েছে, যা কিছুদিন যেতে না যেতেই উঠে গেছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।</p> <p>এলাকাবাসী জানায়, গত জুন মাসে দুই দফা বন্যা হয় সুনামগঞ্জে। তবে ওই এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরাতন সুরমা ও সুরমা নদীর দুই দিকের বাঁধ উঁচু করার কারণে কাঠইর-জামালগঞ্জ সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। মূলত নিম্নমানের কাজের কারণেই দুই-তিন মাসের মধ্যেই সড়কটি নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এই সড়কটিকে ২০২৪ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক হিসেবে তালিকাভুক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।</p> <p>সদরদারপুর গ্রামের বাসিন্দা জসীম উদ্দিন বলেন, ‘কাজের শুরুতেই অনিয়ম হয়েছিল। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেছিল। তখন হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছিল। এখন দুই-তিন মাস যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যাচ্ছে। সড়কের সাইডের পাইলিং খুঁটিও উঠে গেছে। নিম্নমানের কাজের কারণেই রাস্তার পিচ, খুঁটি ও সাইডের অংশ নষ্ট হয়ে গেছে।’</p> <p>কাঠইর ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকার এই সড়কটি দিয়ে সুনামগঞ্জ সদর, জামালগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার মানুষ জেলা শহরে যাতায়াত করে। সড়কটিতে নিম্নমানের কাজের কারণে কয়েক মাসের মধ্যেই গর্ত দেখা দিয়েছে। সড়কটি আবারও সংস্কার প্রয়োজন।’</p> <p>এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি পলিন বলেন, ‘আমরা প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করেছি। এর পরও কোনো ত্রুটি দেখা দিলে আমরা সেগুলো সারানোর কাজ করব।’</p> <p>স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখনো ফাইনাল বিল দেওয়া হয়নি। আমরাও খবর পেয়েছি সড়কের বিভিন্ন অংশে ত্রুটি দেখা দিয়েছে। সেগুলো সংস্কার করার পর এডিবির অর্থায়নে বাস্তবায়িত সড়কটির কাজ সরেজমিন পরিদর্শন করা হবে। তারপর চূড়ান্ত বিল দেওয়া হবে।’</p>