<p>পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন হাফিজুল ইসলাম (৩৫) নামের এক রিকশাচালক।</p> <p>তিনি ঢাকার পূর্ব বাড্ডার রূপনগর এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। হাফিজুল উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নের চর রঘুনাথপুর গ্রামের আবু বক্কর সিকদারের ছেলে।</p> <p>শহীদ হাফিজুলের পিতা আবুবক্কর সিকদার বলেন, ‘আমার ছেলে গত ২০ জুলাই প্রতিদিনের মতো বাসা থেকে রিকশা নিয়ে বের হয়ে মধ্যবাড্ডা পর্যন্ত গেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থী, বিজিবি এবং পুলিশের সংঘর্ষের কবলে পড়ে বিজিবির গুলিতে নিহত হয়। আমি ঘটনাস্থলে পৌঁছাইলে ছাত্ররা আমার ছেলেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য বাড্ডা হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা করতে অনীহা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করে, তার কিছুক্ষণ পরেই আমার ছেলে আমার বুকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে ছেলের মরদেহ ঢাকার ভাড়া বাসায় নিয়ে আসি এবং গোসল, জানাজা সম্পন্ন করে বাড্ডার (বরকতপুর) কবরস্থানে দাফন করি।’</p> <p>তিনি আবেগ জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি বাড়ি ভিটা ছেড়ে ২১ বছর আগে ঢাকার বাড্ডায় গিয়ে সিএনজি চালাতাম, বাড়িতে মাথা গোজার মতো একটু ঠাঁই নেই, আমি এখন বৃদ্ধ, আমার এই ছেলেটাই রিকশা চালিয়ে সংসার চালাত, সেই আমাদের সংসারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি। আমার ছেলের দুটি সন্তান ও তার অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে কিভাবে বাকি জীবন কাটাব তা অনিশ্চিত; এদের দায়িত্ব নেবে কে? আমার ছেলে তো কোনো রাজনীতি করত না, সারা দিন হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে রিকশা চালিয়ে সংসার চালাত। আল্লাহর রহমতে আমাদের সংসার সুন্দরভাবে চলছিল, এখন আমার এই নাতি-নাতনিসহ পরিবারের কী উপায় হবে, আমারা কোথায় যাব?’</p> <p>নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরূপ রতন সিংহ বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর এসেছে আমরা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেব।’</p> <p> </p>