<p>কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসগুলো থেকে এখনো লোহার খাঁচা সরানো হয়নি। এসব খাঁচাতেই আসামিদের ভরে আগের মতো বিচারকাজ চালানো হচ্ছে। এগুলো নিয়ে আদালতে আসা লোকজনের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। তাঁদের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মানুষ তো পশু বা জানোয়ার নয় যে খাঁচার মধ্যে ভরে বিচার করতে হবে। তাঁরা বলেছেন, সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে আরো সংবেদনশীল হওয়া প্রয়োজন। এভাবে বিচারকাজ পরিচালনার অনুশীলন দ্রুত বাদ দিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিভিন্ন এজলাস ঘুরে লোহার খাঁচায় আসামিদের রেখে বিচারকাজ পরিচালনার দৃশ্য চোখে পড়ে। আদালত ভবনের দ্বিতীয়তলায় সবগুলো এজলাসে একই চিত্র দেখা গেছে।</p> <p>দুপুরের দিকে দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি হত্যা মামলার রায় হয়। মামলায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি রায় ঘোষণার সময় লোহার খাঁচায় ছিলেন। তা ছাড়া এর আগে-পরে যে কয়টি মামলার শুনানি হয়েছে, সবগুলোর আসামি খাঁচার ভেতরে ছিলেন।</p> <p>সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ২০১ নম্বর কক্ষে স্থাপিত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাস, ২০৩ নম্বর কক্ষে স্থাপিত যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর এজালাস, ২০৬ নম্বর কক্ষে স্থাপিত যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২-এর এজলাস, ২০৭ নম্বর কক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর এজলাস, ২১০ নম্বর কক্ষের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এজলাসসহ আরো কয়েকটি এজলাসকক্ষে বহাল তবিয়তে লোহার খাঁচা রয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে আসামিদের ঢুকিয়ে বিচার কাজ চলছে।</p> <p>এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার পালের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নির্দেশনা তাঁরা পাননি। নির্দেশনা পেলে লোহার খাঁচাগুলো অপসারণ করা হবে।</p> <p>আদালত চত্বরে কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটি মানবিক রাষ্ট্রের আদালতে লোহার খাঁচা থাকা উচিত নয়। এগুলো সংবেদনশীল মানুষকে কষ্ট দেয়। তাই যত দ্রুত সম্ভব খাঁচাগুলো সরিয়ে নিলেই সবার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।</p> <p>প্রসঙ্গত, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও আদালতে লোহার খাঁচা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন।</p> <p>কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আবু নাসের সনজুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘লোহার খাঁচাগুলো সরে যাওয়ার কথা। আমি বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব যেন এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়।’</p> <p> </p>