<p>বগুড়া সদর থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লুট হওয়া অস্ত্রের ২৬টির এখনো কোনো হদিস মেলেনি। উদ্ধার হয়নি খোয়া যাওয়া গোলাবারুদের অর্ধেকও। এ ছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে বারবার ঘোষণার পরও এখনো ব্যক্তিমালিকানার লাইসেন্স করা ছয়টি বৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নির্ধারিত সময়ে জমা পড়েনি।</p> <p>এদিকে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হলেও পটপরিবর্তনের ৪৩ দিন পরও লুট হওয়া বেশির ভাগ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার না হওয়ায় বগুড়ায় জননিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।</p> <p>বগুড়া জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সদর থানা থেকে ৩৬টি ও পুলিশ লাইনস থেকে তিনটিসহ মোট ৩৯টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে দুর্বৃত্তরা। পরে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী লুট হওয়া ১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে; যার সব ছিল অকেজো।</p> <p>এ ছাড়া ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হয় ও পুড়ে যায় শটগানের তিন হাজার ৪০০ রাউন্ড কার্তুজসহ টিয়ারশেল ও চায়না রাইফেলের দুই হাজার রাউন্ড গুলি। ঘটনা ঘটার এক মাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিপুল পরিমাণ এই গোলাবারুদের কিছুই উদ্ধার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী।</p> <p>সরকার পতনের পর বগুড়া সদর থানা, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়, উপশহর, ফুলবাড়ি, সাতমাথার ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও সদর পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। আগুনে পুড়ে ফেলা হয় তিনটি পুলিশভ্যান।</p> <p>জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্যক্তিমালিকানার বৈধ অস্ত্র জমা দিতে সরকারের বেঁধে দেওয়া ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যে ৩৬৪টি আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে জমা পড়ে ২৫৯টি। সেই সময় ১০৫ অস্ত্র জমা পড়েনি। পরে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বগুড়া শহর থেকে জমা না পড়া একনলা একটি বন্দুক ও ৬৬৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে যৌথ বাহিনী। এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলাও হয়। তবে এখনো জমা পড়েনি লুট হওয়া ২৬টি আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ।</p> <p>আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ বেহাত হওয়ায় জননিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়ে বগুড়া আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী আবদুল লতিফ ববি বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার না হওয়াটা উদ্বেগজনক। যারা এগুলো লুট করে নিয়ে গেছে, তাদের অবশ্যই অসৎ উদ্দেশ্য আছে। তাই দ্রুত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর জোরালো অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা উচিত।’</p> <p>আদালতের আরেক আইনজীবী আবদুল ওহাব বলেন, ‘থানা থেকে লুট হওয়া বিপুল পরিমাণের গোলাবারুদ ও আগ্নেয়াস্ত্র আমাদের জননিরাপত্তার জন্য বিশাল এক হুমকি। এ জন্য সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার অতি জরুরি।’</p> <p>বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদ বলেন, ‘লুট হওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার প্রক্রিয়াকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। এ ছাড়া জমা না পড়া বৈধ অস্ত্র নিয়েও সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই অস্ত্রগুলো দ্রুত উদ্ধার ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’</p> <p>বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট (এডিএম) পি এম ইমরুল কায়েস জানান, নির্ধারিত সময়ে বগুড়ায় ছয়টি অস্ত্র জমা না দেওয়ায় সেগুলো এখন অবৈধ হয়ে গেছে। যৌথ বাহিনী সেগুলো উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছে।</p> <p> </p> <p> </p>