<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যশোরের ভবদহ অঞ্চলের অভয়নগর উপজেলায় টানা বৃষ্টিপাত এবং নদীর পানি ঢুকে পড়ায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১০ দিন আগে বৃষ্টিপাত বন্ধ হলেও জলাবদ্ধ গ্রামে নতুন করে পানি বাড়তে শুরু করেছে। উপজেলার চলিশিয়া, পায়রা, সুন্দলী ও প্রেমবাগ ইউনিয়নের ২৫ গ্রাম ছাড়াও নতুন করে আরো পাঁচ গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চাহিদার তুলনায় জলাবদ্ধ এলাকায় ত্রাণ সরবরাহ কম হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। যে কারণে শত শত পরিবার অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মুশফিকুর রহমান জানান, চলিশিয়া, পায়রা, সুন্দলী ও প্রেমবাগ ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের তিন হাজার ৩৫০ পরিবারের প্রায় ১৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। গ্রামীণ সড়কগুলোতে এখন হাঁটুপানি। এরই মধ্যে ১৫টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। যার মধ্যে চলিশিয়া ইউনিয়নে ছয়টি, পায়রা ইউনিয়নে তিনটি, সুন্দলী ইউনিয়নে চারটি, প্রেমবাগ ইউনিয়নে একটি ও নওয়াপাড়া পৌর এলাকার সরখোলা গ্রামে একটি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে তিন ধাপে প্রায় ১৫০ পরিবারের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। প্রথম ধাপে শুকনা খাবার, ১০ টন চালসহ এক লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে জলাবদ্ধ এলাকার চারটি ইউনিয়ন পরিষদে জেলা প্রশাসক কর্তৃক জিআর (ত্রাণকার্য, চাল ও নগদ অর্থ) বরাদ্দের ১৫ টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় ধাপে পরিবারপ্রতি ১০ কেজি চাল, দুই কেজি আলু, এক কেজি ঢাল, এক লিটার তেল, আধাকেজি লবণ, এক প্যাকেট মশার কয়েল ও দুটি মোমবাতি বিতরণ চলমান রয়েছে। চাহিদার তুলনায় ত্রাণ সরবরাহ কম আসছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সরেজমিনে জলাবদ্ধ গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করা পরিবারগুলো ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছে। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা পরিবারগুলো গত ১০ দিনেও কোনো ত্রাণ সহায়তা পায়নি। বেসরকারি উদ্যোগে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করলেও তা পর্যাপ্ত পরিমাণ দেওয়া হচ্ছে না। কিছু কিছু সংগঠন ফটোসেশনে সীমাবদ্ধ রেখেছে তাদের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম। জলাবদ্ধ এলাকায় বাড়িঘরে যাতায়াত করতে নৌকা ও বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হচ্ছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ সময় পায়রা ইউনিয়নের দীঘলিয়া গ্রামের হুমায়ন কবীর জানান, তাঁদের ইউনিয়নের ভবদহ ও দীঘলিয়া গ্রাম অবহেলিত। কারণ এই দুই গ্রামের পানিবন্দি ৩২২ পরিবারের মধ্যে মাত্র ১৩৫টি পরিবার সরকারি ত্রাণ সহায়তা পেয়েছে। অন্য পরিবারগুলো একই ঘরের মধ্যে গৃহপালিত পশু সঙ্গে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পানিবন্দি সব পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা বিতরণের আহবান জানান তিনি। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুন্দলী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের মুড়ি বিক্রেতা প্রভাত রায় বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">পরিবারের সাতজন সদস্য নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে রয়েছি। এখনো দেখা মেলেনি ত্রাণের।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গত সোমবার সকালে পানিবন্দি বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০ জন গৃহবধূ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় তাঁরা জানান, গত ১০ দিন অতিবাহিত হলেও তাঁদের কাছে কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি। পরিবার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গৃহবধূ বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বেশির ভাগ গ্রামে মুখ চেনা পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ে ছ। আমাদের দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করতে হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়দেব চক্রবর্তী কালের কণ্ঠকে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আশ্রয়কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান করা পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। আর বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া সম্ভব না। তেমন লোকবলও নেই। তবে বরাদ্দ অনুযায়ী প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্রে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো হচ্ছে। আমি নতুন যোগদান করেছি। দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে চাহিদা পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>