<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের মধ্যনগর উপজেলা সীমান্তে চোরাচালান সিন্ডিকেট বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাত গভীর হলেই চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। সম্প্রতি বন্যা ও বিরূপ আবহাওয়ার মধ্যেও প্রতিদিন সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে গরু, মহিষ, চিনিসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মায়ানমার থেকে আমদানি করা সুপারি এই সীমান্ত দিয়ে পাচার করা হচ্ছে ভারতে। এসব কর্মকাণ্ডে কিশোর ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের বাঙ্গালভিটা সীমান্ত, কড়ইবাড়ি সীমান্ত, মাটিয়ারবন্দ সীমান্ত, গঙ্গানগর সীমান্ত ও মহিষখলা সীমান্ত এলাকা পার হয়ে চোরাচালানের পণ্য নৌপথে উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর হয়ে বংশীকুণ্ডা দক্ষিণের হামিদপুর চৌরাস্তা, চামরদানী ইউনিয়ন হয়ে মধ্যনগর সদর ও মধ্যনগর-মহিষখলা সড়ক হয়ে মহিষখলা থেকে কালাগড় সড়ক হয়ে পার্শ্ববর্তী কলমাকান্দা উপজেলায় পাঠানো হয়। এ ছাড়া অবৈধ পথে ভারত থেকে আনা গরু-মহিষের পাল বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিক দিয়ে দাতিয়াপাড়া নতুন বাজার এলাকা থেকে নৌকাবোঝাই করে পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার নৈহাটি বাজারে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে বেপারিরা চোরাকারবারিদের কাছ এসব গরু-মহিষ ক্রয় করে ট্রাকে অথবা পিকআপ ভ্যানে করে পার্শ্ববর্তী ধর্মপাশা-মোহনগঞ্জ ও ধর্মপাশা-বারহাট্টা রোডে দেশের বিভিন্ন জায়গা পাঠানো হয়। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, উপজেলার ভারতের সীমান্তবর্তী বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের রূপনগর, কাইটাকোনা, মাটিয়ারবন, আন্তরপুর, মহিষখলা, কড়ইবাড়ী, গুলগাঁও, রূপনগর ও কান্দাপাড়া, বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের দাতিয়াপাড়া গ্রামের কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র প্রকাশ্যে এসব চোরাচালানের পাচার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">স্থানীয়দের অভিযোগ, মধ্যনগর থানা পুলিশের তথ্যদাতা দাতিয়াপাড়া গ্রামের উজ্জ্বল মিয়া (৩২) পুলিশের ভয় দেখিয়ে চোরাকারবারিদের কাছ থেকে ভারতীয় গরুপ্রতি ৪০০ টাকা, মহিষপ্রতি ৭০০ টাকা,  চোরাইপথে আনা চিনির বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা ও সুপারির বস্তাপ্রতি ১০০ করে টাকা আদায় করেন। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমরা গরিব মানুষ। কোনো কাজকাম না থাকায় আমরা চোরাচালান পণ্য পরিবহনের কাজ করি। এতে আমরা লেবারপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়ে থাকি। এই টাকায় আমাদের সংসার চলে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">গরু-মহিষ চোরাচালানে নিয়োজিত কয়েকজন শ্রমিক জানান, তাঁরা মহিষখলা সীমান্ত থেকে প্রতিদিন শত শত গরু-মহিষ ৫-১০টি করে পাল বেঁধে একেকজন দক্ষ শ্রমিক দ্বারা গন্তব্যে পৌঁছানোর কাজ করে থাকেন। এ ছাড়া সপ্তাহের রবিবার ও বুধবার গভীর রাতে গরু-মহিষ বেশি পরিমাণে পাল বেঁধে গন্তব্যে পাঠানোর কাজ করেন তাঁরা।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষক জানান, তিনি সীমান্ত অঞ্চলের একটি বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন। সীমান্তে চোরাচালান সহজলভ্য হওয়ার কারণে স্কুল-কলেজপড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা অর্থের লোভে পড়াশোনা বাদ দিয়ে চোরাচালানের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এ জন্য চোরাচালান বন্ধে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়া প্রয়োজন।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  মো. সজীব রহমান জানান, তিনি মধ্যনগর  থানায় যোগদান করার পর থেকেই মাদক, চোরাচালান, চাঁদাবাজিসহ সব কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে অভিযান চলমান রেখেছেন।  </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ বিষয়ে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) নেত্রকোনা-৩১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. কামরুজ্জামান জানান, মধ্যনগর সীমান্তে তাঁদের অধীনে দুটি বিওপি ক্যাম্প রয়েছে। বাকি দুটি সুনামগঞ্জ-২৮ বিজিবির অধীনে। তবু যৌথভাবে  সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে তাঁদের নিয়মিত টহল রয়েছে।</span></span></span></span></span></p>