<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">১৮ বছরের টগবগে যুবক মিরাজ ফরাজী। ছোটবেলায় বাবার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে কোরআনে হাফেজ বানাবেন। ১০ পাড়া মুখস্থ করার পর নানা কারণে সেটি আর হয়ে ওঠেনি। এরপর বাবা বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করান স্কুলে। আশা ছিল ছেলে পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করে মা-বাবার কষ্ট লাঘব করবে। কিন্তু গত ৪ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে ছাত্র আন্দোলনে গুলির আঘাতে সেই স্বপ্ন নিমেষেই শেষ হয়ে গেছে। শহীদ মিরাজ ফরাজী ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাকসুদুর রহমান ফরাজী ও মিনারা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। সে ঢাকার মিরপুর-৬ নম্বরের রূপনগর এলাকার ইসলামিয়া হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিরাজের বাবা মাকসুদ জানান, পড়ালেখার অবসর সময়ে মিরাজ টাইলসের কাজ করে নিজের পকেট খরচ জোগাত। গত ৪ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তাকে ডেকে কাছে আনেন। এ সময় তাকে কোথায় যায় জিজ্ঞেস করলে মিরাজ বলে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আন্দোলনে যাই।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> তখন তাকে যেতে নিষেধ করেন বাবা মাকসুদ। ছেলেও রাজি হয়ে সেখান থেকে উঠে যায়। পরে জানতে পারেন, এরপর সে সেলুনে গিয়ে চুলও কাটিয়েছে। চুল কাটানোর পর তাদের স্কুলের শিক্ষক জলিল স্যারের সঙ্গে মিরপুর-১০ নম্বরে আন্দোলনে যায়। যাওয়ার কিছুক্ষণ পর পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলির মধ্যে পড়ে যায় মিরাজ। এক পর্যায়ে তার বুকে পর পর দুটি গুলি লাগে। তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মাকসুদুর ফরাজী আরো জানান, মিরাজ গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে তাঁরাও বাসা থেকে ছুটে যান হাসপাতালে। সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে মিরাজের মরদেহ বাসায় আনা হয়। বাসার আনার পর সেখানকার আওয়ামী লীগ নেতারা মিরাজের দাফনের জন্য দুই ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন। এর মধ্যে দাফন করতে না পারলে তাঁরা লাশ নিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন। এ অবস্থায় তড়িঘড়ি করে গোসল দিয়ে রাতেই ভোলার উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মিরাজের বাবা বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছেলেদের লেখাপড়া করাতে গিয়ে নিজে কিছুই করতে পারি নাই। আশা ছিল ছেলেরা পড়ালেখা করে বড় হয়ে আমাদের দুঃখ ঘোচাবে। কিন্তু সেটি আর হয়ে ওঠেনি।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>