<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">যমুনার ভাঙনে ভিটেমাটিহারা সহস্রাধিক ছিন্নমূল মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘোরে ছন বিক্রি করে। স্থানীয় ভাষায় এই ছনকে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কাইশা</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> বলা হয়। বন্যা নেমে গেলে একদিকে যেমন জেগে ওঠে ভাঙনের ক্ষতচিহ্ন, অন্যদিকে মাইলের পর মাইল উর্বর পলিসমৃদ্ধ চরে জন্মায় ছন। সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিশাল চরাঞ্চলজুড়ে শোভা পাচ্ছে ছনপাতার সবুজ রং। এরই মধ্যে কাশফুল ঝরে যাওয়ায় ছনক্ষেতের সবুজ ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে সোনালি রং ধরতে শুরু করেছে।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছনগুলো যখন এক থেকে দেড় ফুট লম্বা হয় তখন কৃষকরা তা সংগ্রহ করে পশুখাদ্য হিসেবে বাজারে বিক্রি করেন। প্রতি আঁটি ২০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। এরপর ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে ছনগুলো। একসময় তাতে ফুল আসে। এরপর ছন সোনালি রং ধারণ করলে সেগুলো কেটে ঘরের চাল ও নিত্যব্যবহার্য আসবাব নির্মাণের জন্য বিক্রি করা হয়। সোনালি ছন স্তূপ করে বিক্রি করা হয়। একেকটি স্তূপ পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">চরের বাসিন্দারা নিজেদের ছোট নৌকাগুলো ঘাটে বেঁধে ছন কাটতে ক্ষেতের মধ্যে ঢোকে। সেগুলো কেটে আঁটি বেঁধে দিনশেষে মাথায় করে বা ঘোড়ার গাড়িতে করে নদীর ঘাটে নিয়ে আসে। পরে নৌকায় তুলে যমুনা পাড়ি দিয়ে বাড়ি ফেরে। এক সপ্তাহ শুকানোর পরে ছনগুলো তারা বিক্রি করে। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছন কাটতে আসা কাজিপুরের মাইজবাড়ি চরের টুকু মণ্ডল বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ছনগুলো একটু বড় হইলেই কাইটা নিয়া বাজারে বেচি। এরপর এহন কাটতাছি বড় ছন। রোইদে শুকাইয়া তারপর বাজারে বেচমু।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">নাটুয়ারপাড়া চরের বাসিন্দা ও কাজিপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বকুল সরকার জানান, যমুনার জেগে ওঠা চরে বছরের চার-পাঁচ মাস ছন সংগ্রহ ও বিক্রি করে অনেক ছিন্নমূল মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে। স্থানীয়ভাবে ছন থেকে নিত্যব্যবহার্য জিনিস তৈরির ব্যবস্থা করা গেলে সেসব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর পাশাপাশি আরো মানুষ এই শিল্পে কাজ করার সুযোগ পেত।</span></span></span></span></span></p>