<p>নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পাঁচটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস পরিচালনা করছে দালালচক্র। এরা অফিসের কোনো নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী বা কর্মকর্তা না হলেও অফিসের টেবিল-চেয়ারে বসে রীতিমতো অফিস স্টাফের পরিচয় দিয়ে অফিসের সব কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অভিযোগ রয়েছে, তাদের মাধ্যমেই অফিসের সেবা গ্রহণের জন্য অনৈতিকভাবে সব আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন হয়ে থাকে। আর তাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলো ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কোনো রাখঢাক ছাড়াই চলছে ঘুষের লেনদেন। এই দালালদের সহায়তা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না, এমনকি ফাইলও নড়ে না। ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের মূল্যতালিকাসংবলিত সাইনবোর্ড ও কাগজ সরবরাহের নির্ধারিত সময়ের উল্লেখ শুধু লোক দেখানোই। দালালচক্রের সহায়তা ছাড়া মাসের পর মাস ঘুরেও সেবাগ্রহীতাদের কাজ হয় না। তবে দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ৫০-৬০ গুণ টাকা বেশি দিলে দ্রুতই সম্পন্ন করা হয় সব কাজ। এসব যেন দেখার কেউ নেই। সম্প্রতি উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রতিটি অফিসেই দুই থেকে তিনজন ব্যক্তি অফিস স্টাফের মতো কাজ করছেন। দেখে বোঝাই যাচ্ছে না তাঁরা অফিসের স্টাফ না। জানা যায়, তাঁরা লিখিত বা মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো স্টাফ না। তাঁরা সেখানে দালালি করে থাকেন। ২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) নিশাত আনজুম অনন্যা ২০ জন দালালের নাম উল্লেখ করে দালালমুক্ত করার জন্য এক অফিস আদেশ জারি করেন। তাতে দালালমুক্ত হয় ভূমি অফিসগুলো। তবে ওই কর্মকর্তা বদলির পরপরই পুনরায় ভূমি অফিসগুলো নিয়ন্ত্রণে নেয় দালালচক্র।</p> <p>স্থানীয় ভূমি মালিকরা জানান, ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোর দালালদের কাছে কোনো কাজই অসাধ্য নয়। জমির বৈধ মালিক যেই হোক, চাহিদা মতো টাকা এবং দাগ-খতিয়ান নম্বর দিলেই তা হয়ে যায় অন্যের। আবার বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও ঘুষের রেটে হেরফের হলে প্রকৃত জমির মালিকদের নানা হয়রানির শিকার হতে হয়। তাঁরা আরো বলেন, ‘এই দালালচক্র অনেক শক্তিশালী। আমরা সাধারণ মানুষ এই চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি।’ দ্রুত এই দালালচক্রকে অফিস থেকে অপসারণের দাবিও জানান তাঁরা।</p>