<p>জেলার বোদা পৌরসভার বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লকের কাজ গত বছরের মার্চে শুরু হয়। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত কাজের মেয়াদ ছিল। কিন্তু ছাদ ঢালাই করার পর কাজ বন্ধ হয়ে আছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। গত বছরের আগস্টে কাজ বন্ধ হওয়ার পর আর আলোর মুখ দেখেনি। সেপটিক ট্যাংকটিও খোলা রাখা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিশুরা খেলাধুলা করছে। কাজ শেষের সময়সীমার সাত মাস পেরিয়ে গেলেও কাজ করার তেমন কোনো তৎপরতা নেই ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এতে পুরনো ও অস্বাস্থ্যকর টয়লেট ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।</p> <p>একই অবস্থা উপজেলার আরো ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। কাজ শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় ওয়াশব্লকের নির্মাণকাজ। কোনোটির কাজ ২০ শতাংশ আবার কোনোটির ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করেই অর্ধেকেরও বেশি বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঠাকুরগাঁওয়ের নন্দন প্রেস। তিন প্যাকেজে ৩০ কাজের চুক্তিমূল্য প্রায় পাঁচ কোটি ৩০ লাখ টাকার মধ্যে তুলে নিয়েছে দুই কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এ ছাড়া ছুটির দিনে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে। কাজের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ওয়াশব্লকের নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।</p> <p>মন্নাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শুভশ্রী রায় বলে, ‘আমাদের পুরনো টয়লেটটি অস্বাস্থ্যকর। নতুন টয়লেটটির কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এটি তাড়াতাড়ি চালু করলে আমাদের জন্য খুব উপকার হয়।’</p> <p>বানিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজন কুমার সরকার বলেন, ‘এক বছর ধরে আমাদের ওয়াশব্লকের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। বারবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও তারা কাজ করছে না। সেপটিক ট্যাংকটিও খোলা রেখে চলে গেছে। আমরা খুব কষ্টে পুরনো টয়লেটটি ব্যবহার করছি।’</p> <p>মন্নাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেফালী বেগম বলেন, ‘তারা কাজ বন্ধ রেখে চলে গেছে দীর্ঘদিন হলো। পরে তাদের আর সাড়া পাচ্ছি না। তারা নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করেছে। তারা ছুটির দিনে কাজ করে। ঠিকাদার ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেউ আসে না। আমি ঠিকাদারকে কল করলে তিনি আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদেরও কোনো সাড়া নেই।’</p> <p>ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নন্দন প্রেসের মালিক শফিউল আলম বলেন, ‘যেটুকু কাজ করেছি, সেটুকুরই অনেক টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। তাই কাজ বন্ধ আছে।’ কাজে অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। </p> <p>পঞ্চগড় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘আগামী জানুয়ারির মধ্যেই যেসব ওয়াশব্লকের কাজ বাকি রয়েছে, তা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। আর আমার মনে হয়, কাজে অনিয়মের সুযোগ নেই। ঠিকাদারদের কাজের ওপর ভিত্তি করেই তাদের বিল পরিশোধ করা হয়েছে।’</p>