<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ঋণের বোঝা সইতে না পেরে স্ত্রীকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে রাজধানী ঢাকার উত্তরার আজমপুর এলাকায় পান-সিগারেটের দোকান দিয়ে ব্যবসা করছিলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ আলী হোসেন (৪০)। গ্রামে শাশুড়ির কাছে রেখে যান তিন কন্যাকে। স্বামী সারা দিন পান-সিগারেট বেচাতেন আর স্ত্রী উত্তরার আজমপুর এলাকায় বিভিন্ন বাসায় ঝিয়ের কাজ করতেন। ১৮ জুলাই পান-সিগারেট বিক্রি করার সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে তার বুক ঝাঁঝরা হয়ে যায়। স্বামীকে হারিয়ে তিন কন্যাসহ স্ত্রীর জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কান্নাজড়িত কণ্ঠে খাইরুন্নেচ্ছা জানান, স্বামীকে নিয়ে আজমপুর মুন্সিবাজার এলাকায় মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। ঘটনার দিন সকালে তার স্বামী আলী হোসেন পান্তা ভাত খেয়ে বের হন আর তিনি অন্য বাসায় যান ঝিয়ের কাজ করার জন্য। দুপুর ২টার দিকে বাসায় ফেরেন খাইরুন্নেচ্ছা। ওই দিন একসঙ্গে দুপুরের খাবার খাবেন, এই অপেক্ষায় বসেছিলেন। কিন্তু দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত তার স্বামী বাসায় না ফেরায় চিন্তায় পড়ে যান। পরে মোবাইল ফোনে আলী হোসেনের বাসায় না ফেরার বিষয়টি স্বজনদের জানালে তারা চারদিকে খোঁজাখুঁজিতে বের হয়। অবশেষে সন্ধ্যার পর তার মরদেহ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাওয়া যায়। সেখান থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে মরদেহ নিয়ে কেন্দুয়ার বাড়িতে পৌঁছান রাত অনুমান ৪টার দিকে। পরদিন জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">খাইরুন্নেচ্ছা আরো জানান, বড় মেয়ে সাদিয়ার বয়স ১৪ বছর। সে মোজাফরপুর মহিলা মাদরাসায় পড়ে। মেজো মেয়ে মাহিবার, বয়স ছয় বছর। সে প্রাইমারি স্কুলে পড়ে। ছোট মেয়ে সাইবার, বয়স তিন বছর।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বড় মেয়ে সাদিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এখন আমার মা কিভাবে আমাদের পড়াশোনা করাবে আর কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবে? এটা নিয়ে মা দিনরাত শুধু দুশ্চিন্তা আর কান্না করে।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আলী হোসেনের ছোট ভাই আবু বক্কর বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ভাই যার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা নিয়েছিলেন, তিনি লাভের টাকা অর্ধেক কমিয়ে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা দিতে বলেছেন। এই ছয় লাখ টাকা এখন কিভাবে পরিশোধ করবেন, কিভাবে দেবেন প্রতি মাসে লাভের টাকা, তা নিয়ে দিনরাত শুধু কাঁদছেন আর কাঁদছেন।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এ পর্যন্ত বিচ্ছিন্নভাবে কিছু সহায়তা পেলেও সরকারিভাবে এখনো কোনো টাকা-পয়সা পাননি তারা। সরকারি কোনো কর্মকর্তাও দেখতে যাননি তাদের।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">আমি ব্যস্ততার কারণে যেতে পারিনি। তবে আলী হোসেনের মেয়েদের লেখাপড়া বিনা পয়সায় ব্যবস্থা করার জন্য বলে দিয়েছি। আলী হোসেনের স্ত্রীকে একটি বিধবা ভাতার ব্যবস্থা করে দেব।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></p>