<p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মধ্য অগ্রহায়ণে উত্তর জনপদের রংপুর অঞ্চলে আমন ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষের দিকে। স্বপ্নের সোনালি ধান উঠানে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কিন্তু তাঁরের সোনালি স্বপ্ন মলিন হয়েছে এবার ফসলের শত্রু ইঁদুরের কারণে। আমনের ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলা এবং রংপুরের আট উপজেলায় কৃষক ইঁদুর দমনে জমিতে নানা পদ্ধতি প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু তারা কাঙ্ক্ষিত সফলতা পাননি। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বিভাগের পাঁচ জেলায় ইঁদুর নিধন করা হয়েছে ১৯ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬৫টি। এর মধ্যে রংপুরে ইঁদুর মারা হয়েছে ১২ লাখ ৪০ হাজার ৩৩০টি, গাইবান্ধায় দুই লাখ ২৪ হাজার ৪৮০টি, কুড়িগ্রামে এক লাখ ৭৮ হাজার ৫২৫টি, লালমনিরহাটে ৭৩ হাজার ৩০০টি ও নীলফামারীতে দুই লাখ ২৯ হাজার ৩০টি।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষি বিভাগের সূত্র মতে, প্রতিবছর রংপুর বিভাগের পাঁচ জেলায় প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন আমন ধান ইঁদুরের পেটে যায় বা নষ্ট হয়। এ ছাড়া ইঁদুর নষ্ট করে গম, আলু, শাক-সবজি ও অন্যান্য ফসলের ক্ষেত। এই ইঁদুর তাড়াতে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। অনেক চাষি ক্ষেতে খাবারের সঙ্গে বিষ মেখে রাখেন। এ ছাড়া বিভিন্ন পন্থা, যেমন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">—</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাঁশের চোঙা, বিষটোপ, আতপ চালের টোপ কিংবা ফাঁদ পেতেও প্রতিকার করার চেষ্টা চালান। এবার জমি থেকে ইঁদুর তাড়াতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষক।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">মূলত ধান পাকা শুরু হতেই ইঁদুর ধানের ক্ষেতে বেশি আক্রমণ চালায়। ইঁদুরের দল নির্বিচারে ধানগাছের গোড়া কেটে গর্তে নিয়ে রাখে। এ ছাড়া ধানের জমিতে পানি কম থাকলে ইঁদুর আগে থেকে বাসা বাঁধতে শুরু করে। ইঁদুরের অত্যাচারে অনেক কৃষক কাঙ্ক্ষিত ফসল ঘরে তুলতে ব্যর্থ হন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রতিবছর ইঁদুর দমনে </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">ইঁদুর নিধন</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> কর্মসূচি পালন করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। উল্টো ইঁদুর তাড়াতে চাষিদের হিমশিম খেতে হয়। </span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের শংকরপুর ফয়েজেরপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষক আবুল খায়েরের জমির গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করছেন সূর্য ঋষি নামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক ব্যক্তি। তিনি সকাল থেকে প্রায় ১০ কেজি পরিমাণ ধান ইঁদুরের গর্ত খুঁড়ে বের করেছেন। সূর্য ঋষি বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">জমিতে গর্ত করে ধান রেখে দিনের বেলা ইঁদুরের দল অন্যত্র পালিয়ে থাকে। রাতের অন্ধকারে আবার ওই গর্তে এসে আস্তানা গাড়ে। প্রতি আমন মৌসুমে জমি থেকে ইঁদুরের কেটে নেওয়া ধান সংগ্রহ করি। অন্তত ১০ থেকে ১২ মণ ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কৃষক ওবায়দুল হক বলেন, </span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">‘</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বাহে, ইঁদুর ধান কাটোছে। আইতের বেলায় বাতাসে কলার পাতা নড়িচড়ি ওঠলে ভয়ে ইঁদুর পালে যায়। অনেক সময় টায়ারের উজ্জ্বল আলো আর গন্ধে গর্ত থেকে ইঁদুর বের হয়ে পালিয়ে যায়।</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:"Times New Roman","serif"">’</span></span><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi"> সনাতন পদ্ধতিতে কেউ কেউ বেশ উপকৃত হচ্ছেন বলে মধুপুর ইউনিয়নের কৃষক মোকছেদুল হক জানান।</span></span></span></span></span></p> <p style="text-align:left"><span style="font-size:10pt"><span style="font-family:Kantho"><span style="color:black"><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল জানান, চলতি বছর ফসল উৎপাদন বেশি হয়েছে। তবে ইঁদুরের উপদ্রবও বেড়ে গেছে। ইঁদুরের হাত থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়।</span></span></span></span></span></p>